Advertisement
E-Paper

রাতারাতি লালবাড়ি বদলাল সবুজে

বহুদিনের লাল বাড়িটা রাতারাতি সবুজ। দেওয়ালে ফিকে হয়ে আসা সারা ভারত কৃষক সভার জামবনি ব্লক কমিটির কার্যালয় লেখাটাও উধাও। বদলে সবুজ দেওয়ালে কালো রঙে লেখা হয়েছে ‘তৃণমূল কংগ্রেস কার্যালয়, চিল্কিগড়, জামবনি’। বুধবার সকালে জামবনি ব্লকের চিল্কিগড় চক এলাকার বাসিন্দারা খানিকটা অবাক। অনেকে অবশ্য বলছেন এমনটাই তো হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০১৫ ০৩:০৭
রঙের কাজ চলছে কার্যালয়ে। —নিজস্ব চিত্র।

রঙের কাজ চলছে কার্যালয়ে। —নিজস্ব চিত্র।

বহুদিনের লাল বাড়িটা রাতারাতি সবুজ। দেওয়ালে ফিকে হয়ে আসা সারা ভারত কৃষক সভার জামবনি ব্লক কমিটির কার্যালয় লেখাটাও উধাও। বদলে সবুজ দেওয়ালে কালো রঙে লেখা হয়েছে ‘তৃণমূল কংগ্রেস কার্যালয়, চিল্কিগড়, জামবনি’।

বুধবার সকালে জামবনি ব্লকের চিল্কিগড় চক এলাকার বাসিন্দারা খানিকটা অবাক। অনেকে অবশ্য বলছেন এমনটাই তো হয়।

সিপিএমের কৃষক সংগঠন কৃষক সভার ব্লক কার্যালয়টি গত তিন মাস বন্ধ ছিল। পরিত্যক্ত ওই ঘরটি যে দখল করা হয়েছে তা কোনও ভাবেই অস্বীকার করছেন না তৃণমূলের জামবনি ব্লক কার্যকরী সভাপতি তথা জামবনি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সমীর ধল। তাঁর সাফাই, “পঞ্চায়েত সমিতিতে আমরা বিরোধী শূন্য। এই ব্লকে বিরোধীদের কোনও অস্তিত্ব নেই। তাই চিল্কিগড়ের ওই পরিত্যক্ত বাড়িটিতে আমরা দলের কার্যালয় খুলেছি।’’ এরপরেও রয়েছে তাঁর সংযোজন, “এতে দোষের কী আছে। এ বার থেকে বাড়িটার দেখভালও হবে। আমরা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করেছি। এরপর আসবাবপত্র দিয়ে সাজানো হবে। এলাকার যুবকদের মনোরঞ্জের জন্য এলসিডি টিভি-ও লাগানো হবে।’’

সিপিএমের অভিযোগ, এ দিন সমীরবাবুর তত্ত্বাবধানেই ওই ভবনের বাইরে সবুজ রং করানো হয়েছে। প্রাঙ্গণের স্তম্ভের উপর তৃণমূলের দলীয় পতাকা উড়ছে। কৃষক সভার জামবনি ব্লক সম্পাদক হরিশ মাহাতোর অভিযোগ, “বছর দশকে ধরে ওই ভবনটিতে আমাদের কৃষক সভার কার্যালয় রয়েছে। মাওবাদী অশান্তির সময় কয়েক বছর কার্যালয়টি খোলা যায়নি। রাজ্যে ক্ষমতার পালা বদলের পরে অনিয়মিত ভাবে ফের খোলা হত। কিন্তু স্থানীয় তৃণমূল কর্মীদের হুমকিতে তাও বন্ধ হয়ে যায়। গত কয়েক মাস একেবারেই কার্যালয় খোলা সম্ভব হয়নি।’’

তাঁর অভিযোগ, মঙ্গলবার রাতে তৃণমূলের লোকজন দরজার তালা ভেঙে ওই কার্যালয়টির দখল নেয়। তারপর রাতারাতি রং করে ভিতরে ও বাইরের ভোল বদলে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয় বানিয়ে ফেলেছে। হরিশবাবু বুধবার জামবনি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।’’

সরকারি খাসজমির উপর একটি টালির ছাদের মাটির বাড়িতে কৃষকসভার কার্যালয়টি ছিল বহুদিন আগে। পরে ২০০৪ সালে অ্যাসবেস্টসের ছাউনি দেওয়া পাকা ভবনটি তৈরি করা হয়। যদিও তৃণমূলের ব্লক কার্যকরী সভাপতি সমীর ধল বলেন, “কবে কী ছিল বলতে পারব না। দীর্ঘদিন ধরে বাড়িটা পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল। মনগড়া অভিযোগ করলে তো চলবে না। বাস্তব প্রেক্ষিতটা মেনে নিতে হবে।”তাঁর যুক্তি রাজ্য জুড়ে পুরভোটে তৃণমূলের সাফল্যের উচ্ছ্বাসকে তো অস্বীকার করা যায় না। তাই কর্মীদের দাবি মেনেই নতুন কার্যালয় খুলতে হয়েছে।

সিপিএমের জামবনি জোনাল কমিটির সম্পাদক হেনা শতপথী বলেন, “সবার চোখের সামনে কৃষক সভার কার্যালয়টি দখল হয়ে গেল। পুলিশ অভিযোগ পেয়েও নিশ্চুপ। এ রাজ্যের এটাই দস্তুর।’’তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি দীনেন রায় বলেন, ‘‘এমন ঘটনার কথা আমার জানা নেই। খোঁজ নেব।’’ ঝাড়গ্রাম পুলিশ জেলার ভারপ্রাপ্ত সুপার ভারতী ঘোষ বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

Jambuni Color Green CPM Trinamool BJP Congress
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy