Advertisement
E-Paper

পণ করুন, শৌচালয় ছাড়া বিয়ে নয়, মেয়েদের অনুরোধ সুব্রতর

অভাব অর্থের নয়। এমনকী, জমিরও নয়। বাধা মনের। সেই বাধা ভাঙতে গেলে মহিলাদেরই এগিয়ে আসতে হবে। মাস চারেক আগে ধানবাদের এক মহিলা এক দিন দেখেন, বর তাঁর জন্য ঝাঁ চকচকে স্মার্ট ফোন কিনে এনেছেন।

জয়ন্ত সেন

শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০১৭ ০৫:০৭
সাক্ষী: নির্মল জেলা হল মালদহ। সেই অনুষ্ঠানে মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র।

সাক্ষী: নির্মল জেলা হল মালদহ। সেই অনুষ্ঠানে মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র।

যে উঠোনে তুলসীতলা, সেখানেই শৌচালয়! ছেলের প্রস্তাব শুনে খেপে উঠলেন বাবা। পুত্রবধূও পত্রপাঠ শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে চলে গেলেন। তাঁকে ফিরিয়ে আনতে শেষ পর্যন্ত সেই উঠোনেই শৌচালয় তৈরি করতে হয়েছিল ‘টয়লেট: এক প্রেম কথা’ সিনেমাতে।

অভাব অর্থের নয়। এমনকী, জমিরও নয়। বাধা মনের। সেই বাধা ভাঙতে গেলে মহিলাদেরই এগিয়ে আসতে হবে। মাস চারেক আগে ধানবাদের এক মহিলা এক দিন দেখেন, বর তাঁর জন্য ঝাঁ চকচকে স্মার্ট ফোন কিনে এনেছেন। কী করে তার টাকা জুটল? বর একগাল হেসে উত্তর দিয়েছিলেন, বাড়িতে শৌচালয় করতে যে টাকা পেয়েছিলেন, তা দিয়েই সেই ফোন কিনেছেন। তাঁর অনেক দিনের শখ, গ্রামের আর সবার মতো তাঁর বৌয়েরও একটি ভাল ফোন থাকবে। সেই মহিলা ফোনটি মাটিতে আছড়ে ভেঙে বরকে বলেছিলেন, ফোন চাই না, শৌচালয়ই চাই। শেষ পর্যন্ত তাই পেয়েওছিলেন।

রাজ্যের গ্রামোন্নয়ন ও পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় মঙ্গলবার মালদহে সেই একই কথা বললেন। মালদহ নির্মল জেলা ঘোষিত হয়েছে এ দিন। কিন্তু এখনও এই জেলার কিছু বাড়িতে শৌচালয় নেই। যাঁদের বাড়িতে শৌচালয় রয়েছে, তাঁদেরও অনেকে তা ব্যবহার করেন না। কিন্তু এটা শুধু মালদহের নয়। সারা ভারতেরই সমস্যা। সুব্রতবাবুর বক্তব্য, ‘‘তার প্রধান কারণ অভ্যাস। অভ্যাস বদলানো পরমাণু বোমা বানানোর চেয়েও শক্ত।’’ সেই অভ্যাসে যোগ হয় নানা সংস্কারও। যেমন, বাড়ির চৌহদ্দির মধ্যে শৌচালয় করতে রাজি হন না পরিবারের প্রবীণেরাই। অথচ, বাড়িতে শৌচালয় তাঁদেরই সব থেকে বেশি দরকার। নির্মল গ্রাম প্রকল্পের সঙ্গে জড়়িত এক প্রশাসনিক কর্তার কথায়, অনেক পরিবার মেয়েদের নানা কাজে বাড়ির বাইরে যেতে দিতে পর্যন্ত বাধা দেয়, তারাই বাড়িতে শৌচালয় করতেও দিতে চায় না।

আরও পড়ুন: বালি-বেলুড়ে পোকায় কাটা জ্বর, সতর্ক উত্তরপাড়াও

তাই মহিলারাই এগিয়ে এলে, কাজ কিছুটা সহজ হয়। সিনেমার মতোই, ঝাড়খণ্ডের গাঢ়বাতে এক নববধূ বিয়ের পরে শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে চলে এসেছিলেন, সেখানে শৌচাগার নেই বলে।

সে বাড়িতেও সকলের মনের বাধা কাটিয়ে শৌচালয় তৈরি করতে হয়েছিল। পটনাতে সম্প্রতি নানা গ্রাম থেকে মহিলারা লোটা নিয়ে এসে শৌচালয় তৈরির দাবি জানিয়ে স্মারকলিপি দিয়েছিলেন রাজ্যপালকে।

সুব্রতবাবুর তাই দাওয়াই, মেয়েদেরই পণ করতে হবে, শৌচালয় না থাকলে সেই বাড়িতে বিয়ে নয়। নাবালিকা বিয়ে যদি অনেকটাই রোধ করা যায়, তা হলে এই পণেও বাংলা সফল হবে বলে তাঁর মত।

Malda Toilet মালদহ শৌচালয়
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy