Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
টয় ট্রেন পরিষেবা নিয়ে প্রশ্ন

দাম বাড়লে মানও কি বাড়বে

কখনও ইঞ্জিন খারাপ। ট্রেন গিয়ে ধাক্কা খায় পাহাড়ের গায়ে। কখনও লাইনে গোলমাল। ট্রেন দাঁড়িয়ে থাকে ঘণ্টার পরে ঘণ্টা। আবার কখনও ট্রেন বাতিলের খবরই দেওয়া হয় না। অথচ এনজেপি থেকে দার্জিলিং পর্যন্ত টয় ট্রেনের ভাড়া এক লাফে অনেকটা বাড়িয়ে দেওয়া হল।

ভাঙা কাচ নিয়েই চলছে যাতায়াত। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।

ভাঙা কাচ নিয়েই চলছে যাতায়াত। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।

কিশোর সাহা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০২:৫৮
Share: Save:

কখনও ইঞ্জিন খারাপ। ট্রেন গিয়ে ধাক্কা খায় পাহাড়ের গায়ে। কখনও লাইনে গোলমাল। ট্রেন দাঁড়িয়ে থাকে ঘণ্টার পরে ঘণ্টা। আবার কখনও ট্রেন বাতিলের খবরই দেওয়া হয় না। অথচ এনজেপি থেকে দার্জিলিং পর্যন্ত টয় ট্রেনের ভাড়া এক লাফে অনেকটা বাড়িয়ে দেওয়া হল।

দ্বিতীয় শ্রেণির কামরাই তুলে দেওয়া হয়েছে। প্রথম শ্রেণির ভাড়া ৩৬০ টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২৮৫ টাকা। পাহাড়ের বাসিন্দা ও পর্যটন ব্যবসায়ীরা প্রশ্ন তুলেছেন, ভাড়া বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে পরিষেবা উন্নতির কথা কেন বলা হল না?

গোটা রাস্তায় স্টেশনগুলির পরিবেশও খুব খারাপ। শিলিগুড়ি টাউন স্টেশনে দিনরাত শুয়োর চড়ে বেড়ায়। জংশনে ভবঘুরেদের দৌরাত্ম্যে নাকাল হন দেশ-বিদেশের পর্যটকেরা। সুকনা, রংটং, সোনাদা, টুং-এও অপরিচ্ছন্ন শৌচাগার আর মাঝে মধ্যেই মাতালদের উপদ্রব সহ্য করতে হয়। কোনও স্টেশনে রেস্তোরাঁ নেই। নেই বিশ্রামাগার কিংবা বিশুদ্ধ পানীয় জলের বন্দোবস্ত। তা হলে এক কাঁড়ি টাকা দিয়ে কেন দেশ-বিদেশের পর্যটকেরা কেন টয় ট্রেন চড়তে যাবেন, সেই প্রশ্নে সরব পর্যটন মহল।

তাই রাজ্য পর্যটন দফতর তো বটেই, জিটিএ-র কিছু নেতাও একান্তে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। ইতিমধ্যেই দার্জিলিং হিমালয়ান রেলের ইন্ডিয়া সাপোর্ট গ্রুপের আহ্বায়ক রাজ বসু রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভুর কাছে যাবতীয় সমস্যার বিবরণ দিয়ে হস্তক্ষেপের অনুরোধ করেছেন। রাজবাবু বলেন, ‘‘রেলপথের নানা জায়গা দখল করে নতুন দোকানপাট, ঘর তৈরি হওয়ায় ট্রেন চলাচল বিপজ্জনক হচ্ছে।’’

উদ্বিগ্ন ট্যুর অপারেটররাও। টয় ট্রেনের টানে অনেক পর্যটক আসেন। তাঁরা এ বার ভাড়ার অঙ্ক শুনে পিছিয়ে যাবেন কি না, সে আশঙ্কাও রয়েছে। ইস্টার্ন হিমালয়ান ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুর অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশনের কার্যকরী সভাপতি সম্রাট সান্যাল বলেন, ‘‘ভাড়া বাড়বে আর পরিষেবার হাল তলানিতে ঠেকবে, তা হলে ট্রেন চলবে না।’’

তবে দার্জিলিং হিমালয়ান রেলের এরিয়া ম্যানেজার নরেন্দ্র মোহন জানান, পরিকাঠামো উন্নতির চেষ্টা চলছে। ইউনেস্কোর তরফে পরিকল্পনা তৈরির কাজও শুরু হয়েছে। ১৮৮১ সালে চালু হওয়ায় এই টয় ট্রেন ছাড়াও ইউনেস্কোর তালিকায় রয়েছে ভারতের কালকা-সিমলা রেল ও নীলগিরি মাউন্টেন রেলও। কিন্তু ওই দু’টির ক্ষেত্রে রক্ষণাবেক্ষণের প্রশংসাই করেন যাত্রীরা। সেই তুলনায় দার্জিলিঙের জৌলুস ধীরে ধীরে কমছে বলে রেল সূত্রেই স্বীকার করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Toy Train Quality Service Fare
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE