Advertisement
E-Paper

ঋতব্রতকে বহিষ্কারেই সায় দিল আলিমুদ্দিন

এর আগে আব্দুর রেজ্জাক মোল্লা বা অনিল বসুর মতো দাপুটে নেতাকে বহিষ্কার করেছিল রাজ্য সিপিএম। সময় লেগেছিল কয়েক ঘণ্টা। কিন্তু ঋতব্রতের ক্ষেত্রে এখনও সিদ্ধান্ত ঘোষণা করতে পারেনি তারা। কারণ, তিনি দলের সাংসদ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ১৫:২২
সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়কে দল থেকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্তই নিল সিপিএম।

সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়কে দল থেকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্তই নিল সিপিএম।

বড়স়ড় চমক দিয়ে তিন বছর আগে রাজ্যসভার ভোটে ছাত্রনেতা ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রার্থী করেছিল আলিমুদ্দিন স্ট্রিট। দলের শীর্ষ নেতৃত্বের একাংশের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মুখ খোলায় তাঁকে এ বার পত্রপাঠ বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলল আলিমুদ্দিনই।

এর আগে আব্দুর রেজ্জাক মোল্লা বা অনিল বসুর মতো দাপুটে নেতাকে বহিষ্কার করেছিল আলিমুদ্দিন। সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় বা প্রসেনজিৎ বসু, জগমতী সাঙ্গওয়ানদের বহিষ্কার করেছিল দিল্লির এ কে গোপালন ভবন। সকলের ক্ষেত্রেই সময় লেগেছিল কয়েক ঘণ্টা। কিন্তু ঋতব্রতের ক্ষেত্রে এখনও সিদ্ধান্ত ঘোষণা করতে পারেনি সিপিএম। কারণ সিপিএমের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, কোনও সাংসদের ক্ষেত্রে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা অনুমোদন করাতে হয় কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছ থেকে। তাই রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী বুধবার বৈঠক করে যে প্রস্তাব নিয়েছে, তা সুপারিশ আকারে পাঠানো হয়েছে দিল্লিতে। অন্তত পলিটব্যুরোর ঘরোয়া বৈঠকে সেই সুপারিশ অনুমোদিত হলে তবেই বিবৃতি জারি করে সিদ্ধান্ত জানানো হবে। তার পরে ১৪ থেকে ১৬ অক্টোবর কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে আনুষ্ঠানিক ভাবে সিলমোহর পড়বে।

আরও পড়ুন:
কাশীপুরের চিলতে ঘরে আপাদমস্তক বাঙালি ভোজ অমিত শাহদের জন্য

বৈঠকের পরে হতাশ গুরুঙ্গ

আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না হলেও বহিষ্কারের খবর জেনে গিয়েছেন ঋতব্রত। রুদ্ধকণ্ঠে তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘১৯৯৬ সালে মাধ্যমিক পাশ করার পর থেকে এই দলটা, এই পতাকাটা চিনি। নাড়ির টান ছিন্ন করে দেওয়া হল। যন্ত্রণা হচ্ছে। আজ আর কিছু বলতে পারছি না।’’

কলকাতায় এ দিন সন্ধ্যায় ‘লালবাজার অভিযানে’র পরে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রের কাছে প্রশ্ন ছিল, ঋতব্রতকে বহিষ্কার নিয়ে কিছু বলবেন? সূর্যবাবু বলেন, ‘‘বলার মতো কিছু নেই। যখন হবে, তখন বলা হবে। নয়তো বিবৃতি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হবে।’’ ঋতব্রতকে তাঁরাই তো কয়েক বছরে তরুণ মুখ হিসাবে তুলে ধরেছিলেন? সূর্যবাবুর মন্তব্য, ‘‘প্রবীণ-নবীন কত জনই এসেছেন। আবার চলে গিয়েছেন। এটা এমন কিছু ব্যাপার নয়। আমাদের নিয়ে অত দুশ্চিন্তা করবেন না! খুচরো ব্যাপার!’’

সূর্যবাবু ‘বহিষ্কার’ কথাটা উচ্চারণ না করলেও পলিটব্যুরোর সদস্য হান্নান মোল্লা অবশ্য তীব্র কটাক্ষ করেছেন ঋতব্রতকে। দিল্লিতে এ দিন তাঁর মন্তব্য, ‘‘অনেক দিন ধরেই পচে গিয়েছিল। আমাদের দুর্ভাগ্য, অনেক আগেই ওকে পচা আলুর মতো ফেলে দেওয়া উচিত ছিল! বাকি বস্তার আলু পচানোর আগে!’’ আরও পচা আলু আছে? হান্নানের জবাব, ‘‘দু-চারটে থাকতে পারে। কী করে বলব?’’

তাঁকে রাজ্য কমিটি থেকে বাদ দেওয়ার সুপারিশ কেন্দ্রীয় কমিটিতে অনুমোদিত হওয়ার আগেই এবিপি আনন্দে মুখ খুলে ঋতব্রত মহম্মদ সেলিম ও দলের আরও দুই শীর্ষ নেতা প্রকাশ এবং বৃন্দা কারাটের বিরুদ্ধে তোপ দাগার পরেই পরিস্থিতি বদলে গিয়েছিল। সিপিএম সূত্রের খবর, এ দিন রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকে জনাতিনেক নেতা তরুণ সাংসদকে বহিষ্কার না করার পক্ষে সওয়াল করেছিলেন। কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠের মত ছিল, এমন শৃঙ্খলাভঙ্গ কড়া হাতে দমন না করলে ভবিষ্যতে দলে কোনও নিয়ন্ত্রণই থাকবে না। সেলিম অবশ্য এ দিন বৈঠকে ছিলেন না।

রাজ্য কমিটির সদস্য ঋতব্রতের বিরুদ্ধে অন্যতম অভিযোগ ছিল দলের খবর সংবাদমাধ্যমে ফাঁস করার। তিনি রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য নন। তা হলে বিবৃতি জারির আগেই সম্পাদকমণ্ডলীর সিদ্ধান্ত বাইরে বেরিয়ে গেল কী করে, তার ব্যাখ্যা মেলেনি আলিমুদ্দিনে!

Ritabrata Banerjee expelled CPI(M) CPM ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy