Advertisement
০৭ মে ২০২৪
Ghost Rumor

ঘুরে বেড়াচ্ছে আত্মঘাতী ছাত্রের ‘ভূত’! পড়াশোনা পণ্ড স্কুলে

আশ্চর্যজনক ভাবে এর পর থেকেই বহু পুরনো কোএডুকেশন ওই স্কুলের অনেক ছাত্রী অসুস্থ হতে থাকে। স্কুলের একটি বিশেষ শৌচাগার থেকে বেরিয়েই তারা অসুস্থ বোধ করতে থাকে। মাথা ঘোরার পাশাপাশি তাদের শরীরও অবসন্ন হয়ে পড়ছিল বলে চিকিত্সকদের কাছে তারা জানায়। এর পর তাদের প্রত্যেককেই চার কিলোমিটার দূরে কোতুলপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। তার পর তারা সুস্থ হয়ে ওঠে।

এক আতঙ্কিত পড়ুয়া।নিজস্ব চিত্র।

এক আতঙ্কিত পড়ুয়া।নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোতুলপুর শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০১৭ ১৬:৫৯
Share: Save:

স্কুলের পড়াশোনা লাটে তুলে দিয়েছে ‘ভূত’! সামনেই ইউনিট টেস্ট। অথচ, স্কুলে কেউই যেতে রাজি হচ্ছে না। স্কুলের শৌচাগারে নাকি ‘ভূত’ রয়েছে। শেষে স্কুলে সচেতনতা শিবির করে ছাত্রছাত্রীদের বোঝাতে হয়েছে, ‘ভূত’-এর কোনও অস্তিত্বই নেই। তাতেও কাজ হবে কি না, ধন্দে স্কুল কর্তৃপক্ষ।

কয়েক দিন আগে বাঁকুড়ার কোতুলপুরের মির্জাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্র আত্মঘাতী হয়। তার বাড়ি পাশের বাসুদেবপুর গ্রামে। মৃত্যুর পরে স্কুলের বহু ছাত্রছাত্রী তাকে দেখতে গিয়েছিল। এমনকী, পরের দিন স্কুল ছুটিও দেওয়া হয়। এর পরেই কারা যেন রটিয়ে দেয়, স্কুলে ‘ভূত’ রয়েছে। ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে রটে যায়, ওই ছাত্র নাকি স্কুলকে খুব ভালবাসত। তাই স্কুল ছেড়ে সে যাবে না। ‘ভূত’ হয়েই থেকে যাবে!

আশ্চর্যজনক ভাবে এর পর থেকেই বহু পুরনো কোএডুকেশন ওই স্কুলের অনেক ছাত্রী অসুস্থ হতে থাকে। স্কুলের একটি বিশেষ শৌচাগার থেকে বেরিয়েই তারা অসুস্থ বোধ করতে থাকে। মাথা ঘোরার পাশাপাশি তাদের শরীরও অবসন্ন হয়ে পড়ছিল বলে চিকিত্সকদের কাছে তারা জানায়। এর পর তাদের প্রত্যেককেই চার কিলোমিটার দূরে কোতুলপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। তার পর তারা সুস্থ হয়ে ওঠে।

আরও পড়ুন: টিএমসিপির গোষ্ঠী সংঘর্ষে রক্তাক্ত জয়পুরিয়া কলেজ

ওই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মহানন্দ কুণ্ডু জানান, এর মধ্যেই এক অসুস্থ ছাত্রীকে তার পরিবারের লোকজন ওঝার কাছে নিয়ে যায়। সেই ওঝা বলে, ওকে ভূতে ধরেছিল। ছাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এতে আগুনে ঘি পড়ে। ভূতের খবর আরও বেশি করে ছড়াতে থাকে। ভূতের ভয় কাটাতে সোমবার ওই স্কুলে কোতুলপুরের বিডিও-র তত্ত্বাবধানে একটি সচেতনতা শিবিরের আয়োজন করা হয়। সেখানে কোতুলপুরের ওসি এবং ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতির সদস্যেরা ছিলেন। ওই শিবিরে ছাত্রছাত্রীদের বোঝানে হয়, ভূত বলে আসলে কিছু হয় না। আদৌ ভূত আছে কি না, তা তারা পড়াশোনা দিয়েই বিচার করতে পারে। ওই শিবিরে একটি মেডিক্যাল টিমও যায়। ওই টিমের সদস্য পলাশ দাস বলেন, ‘‘ছাত্রছাত্রীদের বেশির ভাগই খালি পেটে বা অল্প খেয়ে স্কুলে আসে। এর মধ্যে ‘ভূত’ সংক্রান্ত ভয়ে তাদের শরীর খারাপ হতে থাকে। দুর্বলতার কারণ আসলে না-খাওয়াই।

তবে, এ দিনের শিবিরের পর আদৌ স্কুল থেকে ‘ভূত’ পালাল কি? মহানন্দবাবুর কথায়, ‘‘সেটা তো ছাত্রছাত্রীরা কাল থেকে ফের স্কুলে আসছে কি না তা দেখার পর বোঝা যাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE