Advertisement
E-Paper

গুজবে হাওড়ায় হানা আবাসনে, আগুন জঙ্গলে

হাজারো হুঁশিয়ারি, প্রচার সত্ত্বেও গুজব-দস্যুকে নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৩:৪৮
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

হাজারো হুঁশিয়ারি, প্রচার সত্ত্বেও গুজব-দস্যুকে নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না।

তিলকে তাল করা এক গুজবকে ঘিরে শুক্রবার উত্তাল হয়ে ওঠে হাওড়ার কোনা এক্সপ্রেসওয়ে সংলগ্ন মৌখালি এলাকা। একটি বহুতল আবাসনে দুষ্কৃতী লুকিয়ে রয়েছে বলে অভিযোগ তুলে কিছু তরোয়ালধারী লোক সকালে জোর করে সেখানে ঢুকে পড়ে। আগুন লাগিয়ে দেয় আবাসনের পিছনের জঙ্গলে। বিশাল পুলিশবাহিনী গিয়ে তাদের বার করে দিলেও পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে।

মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে হাওড়ার দুই মন্ত্রী অরূপ রায় ও রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ঘটনাস্থলে যান। পৌঁছে যান ডিআইজি (বর্ধমান রেঞ্জ) তন্ময় রায়চৌধুরী, হাওড়ার পুলিশ কমিশনার বিশাল গর্গ, হাওড়ার পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) গৌরব শর্মা এবং অন্য পুলিশকর্তারা। এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন মন্ত্রীরা। সন্ধ্যার পরে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, সকালে নিরাপত্তারক্ষীদের বাধা সত্ত্বেও এলাকার অস্ত্রধারী কিছু লোক ওই আবাসনে ঢুকে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে। তাদের অভিযোগ, আবাসনে দুষ্কৃতীরা লুকিয়ে আছে এবং তারাই রাতে তাদের বস্তিতে হামলা চালাচ্ছে। আবাসনের বাসিন্দাদের অভিযোগ, ৫০-৬০ জনের ওই সশস্ত্র দলটি কদর্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। এক আবাসিকের গাড়ি ভাঙচুর করে। আবাসনের পিছনে আগাছার একটি জঙ্গলে আগুন লাগিয়ে দেয়।

সন্ত্রস্ত হয়ে ওঠেন আবাসনের বাসিন্দারা। পুলিশবাহিনী ও র‌্যাফ এসে লাঠি চালিয়ে হামলাকারীদের বার করে দেওয়ার পরে পরিস্থিতি কিছু ক্ষণের জন্য শান্ত হয়। কিন্তু কিছু পরেই আবাসনের পিছনের বস্তি থেকে দলে দলে লোকজন এসে ফের বিক্ষোভ দেখাতে থাকে। অভিযোগ, ক্ষিপ্ত জনতা আবাসনের লোহার গেট ভেঙে ফেলার চেষ্টা করে। বাধা দিতে গেলে পুলিশের সঙ্গে তাদের ধস্তাধস্তি হয়। পুলিশ দফায় দফায় লাঠি চালিয়ে বিক্ষোভকারীদের হটিয়ে দেয়।

পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার রাতে বস্তি থেকে গুজব ছড়ানো হয়, রাত নামলেই আবাসনের পাঁচিল ডিঙিয়ে ছেলেধরার দল বস্তিতে হামলা চালাচ্ছে। মহিলাদের আঁচড়ে-খামচে দিচ্ছে। বৃহস্পতিবারেও এক তরুণীকে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা হয়। তার পরে সকালে কিছু বস্তিবাসী আবাসনে বিক্ষোভ দেখায় বলে অভিযোগ।

দুপুরে ঘটনাস্থলে যান হাওড়ার দুই মন্ত্রী। পরে দুই মন্ত্রী ও পুলিশকর্তারা মৌখালি এলাকার বাসিন্দা এবং বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আলাদা ভাবে কথা বলেন। দুই মন্ত্রীই বলেন, ‘‘একটা রাজনৈতিক দল চক্রান্ত করে এই ধরনের গুজব রটাচ্ছে, যাতে রাজ্যে অশান্তি বেধে যায়। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে এ-সব চলবে না। পুলিশকে বলা হয়েছে, গুজব রটনাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।’’

হাওড়ার পুলিশ কমিশনার গর্গ বলেন, ‘‘নানা রকম গুজবের জেরে এই ধরনের ঘটনা ঘটছে। মানুষ যাতে এই সব গুজবে কান না-দেন, সেই জন্য আমরা মাইকভ্যানে প্রচার চালাচ্ছি। সব থানাকে বলা হয়েছে, মানুষকে বোঝাতে হবে, তাঁরা যেন কোনও রকম গুজব না-ছড়ান এবং গুজবে যেন কান না-দেন। এ-সব করলে যে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে, বুঝিয়ে দিতে হবে সেটাও।’’

আজ বসছেন ডিজি ভুয়ো খবর, রটনা ও গুজবকে ঘিরে রাজ্যের বেশ কিছু জায়গায় গোলমাল হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আজ, শনিবার সব জেলার পুলিশ সুপার ও কমিশনারদের নিয়ে ভিডিয়ো-সম্মেলন করছেন রাজ্য পুলিশের ডিজি। সন্ধ্যা ৬টায় নবান্ন থেকে ওই সম্মেলন হবে।

Rumour Lynching Fire Howrah
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy