—ফাইল চিত্র।
তাঁদের কাজ মূলত বিজ্ঞান নিয়ে। কিন্তু অবস্থাগতিকে আপাতত দিন-রাত এক করে একের পর এক ফোন করে যেতে হচ্ছে সেই বিজ্ঞানীদের। ১০-১২টা বা ২০-২৫টা নয়, দিনে গড়ে ৪০০-৫০০ ফোন করতে হচ্ছে তাঁদের!
চাইলেই তো নেটওয়ার্ক পাওয়া যায় না। তার উপরে কখনও কখনও ব্যস্ত থাকছে ফোনও। এই অবস্থায় কলকাতায় ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কলেরা অ্যান্ড এন্টেরিক ডিজ়িজ়েস’ (নাইসেড)-এ কন্ট্রোল রুম তৈরি হয়েছে। করোনা মোকাবিলায় এখনও পর্যন্ত রাজ্যে যাঁরা কোভ্যাক্সিন প্রতিষেধকের প্রথম ডোজ় নিয়েছেন, নাইসেডের বিজ্ঞানীদের ফোন যাচ্ছে তাঁদের কাছে। প্রতিষেধক নেওয়ার পরে তাঁদের শরীরে কোনও বিরূপ প্রতিক্রিয়া হচ্ছে কি না, বিজ্ঞানীরা মূলত সেটাই জানতে চাইছেন।
দেশজ প্রতিষেধক কোভ্যাক্সিন নিয়ে কেন্দ্রের এত দিন কিছুটা চিন্তা ছিল। তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষা শেষ হওয়ার আগেই কোভ্যাক্সিন দেওয়ার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছিল। বিতর্কও হয়েছিল তা নিয়ে। কোভ্যাক্সিন নেওয়ার পরে শরীরে বিরূপ প্রতিক্রিয়া হচ্ছে কি না, চিন্তা মূলত তাই নিয়েই। সারা দেশে যাঁরা ওই প্রতিষেধক নিয়েছেন, তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য নাইসেডকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আজই অবশ্য তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষামূলক প্রয়োগের অন্তর্বর্তী ফলাফল প্রকাশ করে ভারত বায়োটেক জানিয়েছে, তাদের কোভ্যাক্সিন টিকা ৮১ শতাংশ কার্যকরী।
নাইসেড সূত্রের খবর, কলকাতায় ১২ জন বিজ্ঞানীর জন্য ১২টি আলাদা দল গড়ে দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি দলে দু’জন করে কর্মীও রয়েছেন। সব দলকেই দিনে ৪০০-৫০০ ফোন করতে বলা হচ্ছে। তাতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে বিজ্ঞানীদের। বলা হয়েছে, প্রতিষেধক নেওয়া মানুষের তথ্যভাণ্ডার তৈরি করে তা রাজ্য ও কেন্দ্রের কাছে পাঠাতে হবে। ফোন করে তথ্য নিয়ে সেগুলি একটি ফর্মে ভরতে হচ্ছে। পরে সেই ফর্ম আপলোড করতে হচ্ছে ওয়েবসাইটে।
নাইসেডের অধিকর্ত্রী শান্তা দত্ত জানান, যে-কোনও প্রতিষেধক দেওয়ার সময়েই কেন্দ্র নজরদারি করে। তবে যে-সব প্রতিষেধক অনেক দিন ধরে দেওয়া হচ্ছে, তা সেগুলি বহু পরীক্ষায় সফল। তাদের ক্ষেত্রে এত কিছু করার প্রয়োজন হয় না। কিন্তু কোভ্যাক্সিন নতুন। তার উপরে তার তৃতীয় পরীক্ষা একেবারে শেষ পর্যায়ে। তাই এই প্রতিষেধকের ব্যাপারে নজরদারির উপরে জোর দিচ্ছে কেন্দ্র। ‘‘এই কাজটা পুরোপুরি আমরা করছি না। ৫০ শতাংশ আমরা আর বাকি ৫০ শতাংশ ভারত বায়োটেক নজরদারি করছে,’’ বলেন শান্তাদেবী।
পশ্চিমবঙ্গে কোভ্যাক্সিন প্রথম আসে ২২ জানুয়ারি। করোনার অন্য প্রতিষেধক কোভিশিল্ড এসে পৌঁছনোর ১০ দিন পরে। কোভিশিল্ড প্রয়োগ শুরু হয়েছিল ১৬ জানুয়ারি আর কোভ্যাক্সিন দেওয়া শুরু হয় ৩ ফেব্রুয়ারি। ‘‘কোভিশিল্ড থেকে কিছু কিছু বিরূপ বা পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত আমাদের রাজ্যে কোভ্যাক্সিন নেওয়ার পরে কোনও রকম পার্শ্ব বা বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি,’’ বলেন রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অনির্বাণ দলুই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy