Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

স্কটিশের অধ্যক্ষের ইস্তফা, জট জয়পুরিয়াতেও

মেধা তালিকায় নাম নেই, কাউন্সেলিংয়েও ডাক পায়নি। অথচ দিব্যি ভর্তি হয়ে গিয়েছে! স্কটিশ চার্চ কলেজে বেনিয়মের এই ভর্তিকে কেন্দ্র করেই গোলমালের জেরে পদত্যাগ করলেন কলেজের অধ্যক্ষ অমিত আব্রাহাম। তাঁর পদত্যাগে শিক্ষক ও ছাত্রদের একাংশ অখুশি। অধ্যক্ষকে ফেরাতে তাঁরা সই সংগ্রহে নেমেছেন।

স্কটিশ চার্চের অধ্যক্ষ অমিত আব্রাহাম

স্কটিশ চার্চের অধ্যক্ষ অমিত আব্রাহাম

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০১৬ ০৩:২১
Share: Save:

মেধা তালিকায় নাম নেই, কাউন্সেলিংয়েও ডাক পায়নি। অথচ দিব্যি ভর্তি হয়ে গিয়েছে! স্কটিশ চার্চ কলেজে বেনিয়মের এই ভর্তিকে কেন্দ্র করেই গোলমালের জেরে পদত্যাগ করলেন কলেজের অধ্যক্ষ অমিত আব্রাহাম। তাঁর পদত্যাগে শিক্ষক ও ছাত্রদের একাংশ অখুশি। অধ্যক্ষকে ফেরাতে তাঁরা সই সংগ্রহে নেমেছেন।

কলেজের ছাত্র সংসদের সাংস্কৃতিক সম্পাদক অভিষেক রায়ের অভিযোগ, ‘‘অধ্যক্ষকে সরে যেতে বাধ্য করেছেন রেক্টর। অধ্যক্ষ কী ভাবে, কাদের চক্রান্তের শিকার হলেন, তা বিশপ ও শিক্ষামন্ত্রীকে জানাব।’’ কয়েক জন অধ্যাপকের বিরুদ্ধেও সরব অভিষেকরা।

ইস্তফা প্রসঙ্গে অমিতবাবু শনিবার বলেন, ‘‘আমার পদত্যাগের পিছনে কোনও মন্ত্রীর হাত নেই। আমি ছাত্রদের জন্য কাজ করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু কলেজে কিছু বুদ্ধিজীবীর জন্য কাজ করতে পারছিলাম না। এর পিছনে অনেক কাহিনী রয়েছে। যা আমি বলতে পারব না।’’ রেক্টর অবশ্য অধ্যক্ষের ইস্তফা নিয়ে কথা বলতে অস্বীকার করেছেন।

এই ঘটনায় যে দুই মন্ত্রীর নাম জড়িয়েছে, তাঁদের এক জন এ দিন বলেন, ‘‘রাজ্যের কয়েক জন মন্ত্রীর সুপারিশ কার্যকর করতে অধ্যক্ষকে বাধ্য করেছেন বিশপ। এতে অধ্যক্ষ স্বাধীন ভাবে কাজ করতে পারছিলেন না। তাই পদত্যাগ করেছেন।’’ তিনি কি কোনও ভর্তির সুপারিশ করেছেন? এর সরাসরি উত্তর না দিয়ে তাঁর পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘মেধা তালিকার বাইরে যদি বিশপের পছন্দের লোক ভর্তি হতে পারে, তা হলে অধ্যক্ষের মনোনীত প্রার্থী ভর্তি হতে পারবে না কেন?’’

শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অবশ্য দাবি, ‘‘ভর্তি নিয়ে কোনও গোলমাল নেই। ছাত্রদেরও কোনও ভূমিকা নেই এই ইস্তফায়। অধ্যক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে। যত দূর জানি, এর পিছনে কলেজের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারই জড়িত। যদিও স্কটিশের কর্তৃপক্ষ চার্চ নিয়ন্ত্রিত, আমার মত দেওয়ার কোনও ব্যাপার নেই। তবুও অমিত আব্রাহামকে কাজ চালিয়ে যেতে অনুরোধ করেছি।’’

কলকাতার জয়পুরিয়া কলেজেও অচলাবস্থা অব্যাহত। ওই কলেজে শুক্রবার থেকে ক্লাস বন্ধ রয়েছে। ক্লাস বন্ধের কারণ নিয়ে এ দিন উচ্চশিক্ষা দফতরের সঙ্গে কলেজ কর্তৃপক্ষের মতবিরোধ প্রকাশ্যে এসেছে। গত বুধবার কলেজের ভিতরে দু’দল ছাত্রের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। ওই দিনই রাতে বাড়ি ফেরার সময়ে এক দল যুবক সান্ধ্য কলেজের দায়িত্বে থাকা শিক্ষক অশ্বিনীকুমার রায়কে মারধর করে। তার জেরে সোমবার পর্যন্ত ক্লাস বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। এর পর পরিচালন সমিতির কাছে পদত্যাগপত্র পাঠান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নন্দিতা চক্রবর্তী। সেই অচলাবস্থা কাটাতে শনিবার ওই কলেজে যান শিক্ষা অধিকর্তা নিমাই সাহা। তাঁর দাবি, ‘‘সমস্ত ক্লাসরুমে পরীক্ষা চলছে। তাই ক্লাস বন্ধ রাখা হয়েছে।’’ তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে নন্দিতাদেবী অবশ্য বলেন, ‘‘সে দিনের ঘটনার জন্য বাইরে থেকে আসা পরীক্ষার্থীদের যাতে কোনও সমস্যা না হয়, তাই ক্লাস বন্ধ রাখা হয়েছে। সোমবার পরিচালন সমিতির সঙ্গে বৈঠকে পরবর্তী সিদ্ধান্ত হবে।’’ তিনি যে এখনই পদত্যাগের সিদ্ধান্ত থেকে সরছেন না, তা-ও জানান নন্দিতাদেবী। গোলমালের জেরে জয়পুরিয়া কলেজের পরিচালন সমিতির সরকারি প্রতিনিধি পদ থেকে শশী পাঁজাকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Seth Anandram Jaipuria College Scottish Church College
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE