Advertisement
E-Paper

নজরদারিতে ফাঁক, মেনেই নিল সেবি

বাংলা, ওড়িশা, অসমের এক গুচ্ছ অর্থলগ্নি সংস্থার বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। তবে এই ধরনের সংস্থাগুলির উপরে নজরদারিতে এখনও ফাঁকফোকর থেকে গিয়েছে বলে আজ সুপ্রিম কোর্টে মেনে নিল সেবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০১৬ ০৪:০৪

বাংলা, ওড়িশা, অসমের এক গুচ্ছ অর্থলগ্নি সংস্থার বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। তবে এই ধরনের সংস্থাগুলির উপরে নজরদারিতে এখনও ফাঁকফোকর থেকে গিয়েছে বলে আজ সুপ্রিম কোর্টে মেনে নিল সেবি। সহমত পোষণ করেন প্রধান বিচারপতি টি এস ঠাকুরও। তিনি এ দিন সেবি তথা কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে জানতে চেয়েছিলেন, কোনও সংস্থায় লগ্নি করার আগে এক জন সাধারণ মানুষ যদি জানতে চান সেটি ভুয়ো অর্থলগ্নি সংস্থা কি না, তা হলে তিনি কোথা থেকে জানবেন? সেবি-র তরফে স্বীকার করা হয়, সহজ উপায়ে তা জেনে ফেলার কোনও উপায় নেই।

কেন ফাঁক থাকছে ভুয়ো অর্থলগ্নি সংস্থাগুলির উপরে নজরদারিতে?

সেবি-র বক্তব্য, এই সব সংস্থা বারবার নিজেদের চরিত্র বদলে ফেলে। বিভিন্ন ধরনের সংস্থা ভিন্ন ভিন্ন নিয়ন্ত্রণ সংস্থার অধীন। তারই সুযোগ নিতে এরা নিজেদের কখনও কালেক্টিভ ইনভেস্টমেন্ট স্কিম, কখনও মাল্টি-লেভেল মার্কেটিং, কখনও আবার নন-ব্যাঙ্কিং ফিনান্সিয়াল কর্পোরেশন হিসেবে তুলে ধরে।

সেবি-র তরফে আইনজীবী চন্দ্র উদয় সিংহ এ-ও উল্লেখ করেন যে, শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে ব্যবসা বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হলেও সংস্থাগুলি নিম্ন আদালত থেকে স্থগিতাদেশ নিয়ে আসে। তখন আবার উচ্চ আদালতে তার বিরুদ্ধে আবেদন জানাতে হয়। আইনি জটিলতায় বহু সময় নষ্ট হয়। উদাহরণ হিসেবে তিনি রোজ ভ্যালি সংস্থার উদাহরণ দেন।

ভুয়ো অর্থলগ্নি সংস্থাগুলির উপর নজরদারির জন্য একটি পৃথক ব্যবস্থা তৈরির আর্জি জানিয়ে শীর্ষ আদালতে জনস্বার্থ মামলা করেছে কলকাতার একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। তারই শুনানিতে সংস্থাটির তরফে প্রশান্ত ভূষণ এ দিন আর্জি রাখেন, সেবি, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক, অর্থ মন্ত্রক, এসএফআইও, ইডি-কে নিয়ে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি তৈরি হোক। সেবি-র আইনজীবী এতে জানান, ভুয়ো অর্থলগ্নি সংস্থার উপরে নজরদারির জন্য রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ইতিমধ্যেই একটি রাজ্য স্তরের সমন্বয় কমিটি গড়েছে। সেখানে রাজ্য বা কেন্দ্রীয় সরকারের সংস্থাগুলি রয়েছে। সেবি-র মতো বিভিন্ন সংস্থাকে নিয়ে অর্থমন্ত্রীর অধীনে একটি ফিনান্সিয়াল স্টেবিলিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট কাউন্সিলও রয়েছে। কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রকের অধীনে রয়েছে এসএফআইও। প্রশান্ত ভূষণ এতে প্রশ্ন তোলেন, বিভিন্ন নিয়ন্ত্রক সংস্থার মধ্যে সমন্বয়ের কাজটি তবে কে করছে? প্রধান বিচারপতিও তখন মত প্রকাশ করেন, ভুয়ো অর্থলগ্নি সংস্থাগুলির উপরে আইনি নিয়ন্ত্রণ ও নজরদারির ব্যবস্থায় যথেষ্ট ফাঁকফোকর রয়েছে সেবি-র অবশ্য দাবি, একেবারেই যে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, এমনটাও নয়। লগ্নিকারীদের সচেতন করার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। চিট ফান্ড আইন ও সেবি আইন কঠোর করা হয়েছে। আইন বদলের পর নয়া নিয়মকানুন নিয়ে কোন কোন রাজ্য বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে, সেবি এ বিষয়ে হলফনামা দেবে।

ভুয়ো অর্থলগ্নি সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে তদন্তের ভার পাওয়ার পর সিবিআই লোকবলের অভাবের কথা বলে ভর্ৎসনার মুখে পড়েছিল। প্রধান বিচারপতি আজ জানতে চান, শূন্য পদ পূরণের কাজ ও তদন্ত কতটা এগিয়েছে? অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল মণীন্দ্র সিংহ বলেন, পদ পূরণে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হচ্ছে। আর সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে তদন্তে এ পর্যন্ত ১৪৪ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এখনও এই তদন্ত কেন শেষ হলো না, কেনই বা এজেন্টরা সুবিচার পাচ্ছেন না— এই প্রশ্ন তুলে প্রতারিত আমানতকারীদের সংগঠন এবিসিডিএ এ দিনই কলকাতায় বিধানসভার ফটকের বাইরে আচমকা বিক্ষোভ দেখায়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তখন বিধানসভার ভিতরেই ছিলেন। কিছু ক্ষণ ধস্তাধস্তির পরে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের গ্রেফতার করে।

মুখ্যমন্ত্রী স্বরাষ্ট্র বাজেট নিয়ে বিতর্কের শেষে জবাবি বক্তৃতায় দাবি করেছেন, সারদা-কাণ্ডে রাজ্য পুলিশের সিট ভালই কাজ করেছিল। যদিও বিরোধীরা অভিযোগ করেছে, সিট তদন্ত করতে নেমে তথ্যপ্রমাণ নষ্ট করছিল। তাই সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট।

surveillance SEBI
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy