ফাইল-চিত্র।
শিল্পে ভূগর্ভস্থ জলের ব্যবহার আর তার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আলাদা একটি সংস্থা গড়ছে রাজ্য। জলসম্পদ উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র সোমবার, ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল গ্রাউন্ড ওয়াটার রিসোর্সেস (ম্যানেজমেন্ট, কন্ট্রোল অ্যান্ড রেগুলেশন-অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল ২০১৫’ পেশ করেন বিধানসভায়। সেই বিলের ২ নম্বর ধারায় সংশোধনী এনে উচ্চ ক্ষমতার ওই সংস্থা গড়ার কথা বলা হয়েছে। ওই সংস্থার কাজ হবে, শিল্পে আরও জল সরবরাহের জন্য ভূগর্ভস্থ জলের নতুন নতুন উৎস খোঁজা, ভূগর্ভ থেকে জল তোলার অনুমতি দেওয়া আর তা নিয়ন্ত্রণ করা। এ দিন বিধানসভায় বিলটি পেশ হতেই সমালোচনায় সরব হন বিরোধী বামফ্রন্ট সদস্যরা। তাঁরা প্রশ্ন তোলেন, বিলটি যদি এতই জরুরি হয়, তা হলে কেন আগে থেকে এ ব্যাপারে সদস্যদের জানানো হল না? কেন জারি হল না কোনও বিজ্ঞপ্তি? কেন সেই বিলের কপি সদস্যদের হাতে না দিয়ে তড়িঘড়ি বিলটি পাশ করানো হল? এই সংশোধনী বিলে সরকার এটাও স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, ব্যবসায়ীদের স্বার্থ দেখতেই সরকার আগ্রহী। এই সমালোচনার কোনও জবাব না পেয়ে বিরোধীরা সভা বয়কট করে চলে যান। বিলে বলা হয়েছে, জেলা ও পুরসভা স্তরের কর্তৃপক্ষ ঘন্টায় ৫০ ঘন মিটারের বেশি জল ভূগর্ভ থেকে তুলতে বা, তা ব্যবহারের অনুমতি দিতে পারবে না। আর, সেই অনুমতি দিতে হবে জল তোলার জন্য আবেদন জানানোর ৩০ দিনের মধ্যে। আবার জেলা ও পুরসভা স্তরের কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতি ঘন্টায় অনধিক ১০০ ঘন মিটার গভীর থেকে জল তোলা ও তার ব্যবহারের জন্য কোনও আবেদন জমা পড়লে, সেই আবেদন ৩০ দিনের মধ্যে রাজ্য স্তরের কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়ে দেওয়ার নিয়মও কার্যকর হচ্ছে। এর পরে, রাজ্য স্তরের সংস্থাকেও ২১ দিনের মধ্যে জানাতে হবে, তারা আদৌ অনুমতি দেবে কি না। খড়্গপুর, মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া ও বর্ধমানের বিভিন্ন জায়গায় ইস্পাত ও স্পঞ্জ আয়রন কারখানা জলের অভাবে অনেক সময়েই কাজ বন্ধ করে দেয়। শালবনিতে জিন্দল শিল্পগোষ্ঠীর ইস্পাত কারখানা চালানোর জন্য ৫২ কিলোমিটার লম্বা পাইপলাইন বসিয়ে রূপনারায়ণ নদ থেকে জল নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু তার খরচ লাগামছাড়া। খড়্গপুরে এখন বেশির ভাগ ভারী শিল্পেই জলের প্রয়োজন মেটানো হচ্ছে কংসাবতী নদীর জল তুলে। বাঁকুড়াতেও ভারী শিল্পের জন্য নদীতে পাম্প বসিয়ে নির্বিচারে জল তোলা হয়। এটাকে নিয়ন্ত্রণ করা দরকার বলে সরকার মনে করছে। ভূগর্ভের কোন জায়গায়, কোন স্তরে, কতটা জল জমা রয়েছে, তার সবিস্তার তথ্য রয়েছে জলসম্পদ উন্নয়ন দফতরের হাতে। প্রস্তাবিত সংস্থা তার সদ্ব্যবহার করবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy