Advertisement
০৮ মে ২০২৪
Sikkim Flash Flood

অনুমতি ছাড়া সিকিমে ত্রাণের নামে টাকা নয়

ত্রাণ নিয়ে দুর্নীতি থেকে শুরু করে ত্রাণের নামে টাকা তোলা— এমন ধরনের অভিযোগ পেয়ে তা বন্ধ করার জন্যই এই পদক্ষেপ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট অনেকে।

বন্যায় বিপর্যস্ত সিকিম। —ফাইল চিত্র।

বন্যায় বিপর্যস্ত সিকিম। —ফাইল চিত্র।

কৌশিক চৌধুরী
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০২৩ ০৬:৩৯
Share: Save:

ত্রাণের নামে ‘তোলাবাজি’ বা ‘অনিয়ম’ রুখতে কড়া পথে হাঁটছে সিকিম সরকার। তারা নির্দেশিকা জারি করে জানিয়েছে, ত্রাণ দেওয়া-নেওয়ার জন্য আগে সংশ্লিষ্ট জেলাশাসকের অনুমতি জরুরি। না হলে, আইন মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।

ত্রাণ নিয়ে দুর্নীতি থেকে শুরু করে ত্রাণের নামে টাকা তোলা— এমন ধরনের অভিযোগ পেয়ে তা বন্ধ করার জন্যই এই পদক্ষেপ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট অনেকে। পশ্চিমবঙ্গের কালিম্পং জেলায় এই দুর্যোগের ছাপ সব থেকে বেশি পড়েছে। সিকিমের মতোই কালিম্পঙের ক্ষেত্রেও জিটিএ বা গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনও একই পন্থা নিতে চাইছে বলে জানা গিয়েছে।

সিকিমের মুখ্যসচিব ভি বি পাঠক বলেন, ‘‘ত্রাণ নিয়ে নানা বিষয় সামনে এসেছে। সিকিম সরকারই সব ব্যবস্থা করছে। তাই ত্রাণ বিলি, ত্রাণ আদায় কেউ করলে, নিয়ম মানতে হবে। জেলাশাসকদের অনুমতি নিয়ে কাজ করতে হবে। না হলে প্রয়োজনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

গত ৩ অক্টোবর রাতে সিকিমের দক্ষিণ লোনাক লেকে জলস্ফীতির জেরে, সিকিমের সঙ্গে কালিম্পঙের বিরাট এলাকাও দুর্যোগের কবলে পড়েছে। ঘটনার তিন দিন পর থেকে ত্রাণের ব্যবস্থা করা হয়েছে সিকিম ও কালিম্পঙে। এই বিলিবণ্টন মূলত শুরু হয়েছে সরকারি স্তরেই।

তা হলে বেসরকারি ত্রাণ বণ্টন নিয়ে কেন এই সিদ্ধান্ত? অভিযোগ, গত এক সপ্তাহ ধরে সিকিম-পরিস্থিতির দোহাই দিয়ে টাকা আদায় করা হচ্ছে। কোথাও চাল, ডাল, তেলের মতো রসদ আদায়ের চেষ্টা শুরু হয়েছে। কিছু চিকিৎসক বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে দুর্গত এলাকায় বিনা অনুমতিতে চলে যাচ্ছেন বলেও অভিযোগ। তাঁদেরও স্বাস্থ্য দফতরকে জানিয়ে উত্তর সিকিমে ঢুকতে বলা হয়েছে। সিকিমের আর একটি নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, কোনও সংস্থা, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা যে ওষুধ-সহ ত্রাণ সরাসরি দেওয়া শুরু করেছে, তা এখনই বন্ধ করতে হবে।

কালিম্পং এবং দার্জিলিং থেকেও একই ভাবে টাকা তোলার অভিযোগ সামনে এসেছে। জিটিএ-র প্রধান অনীত থাপা জিটিএ-র ৪৫ জন সদস্যকে দুর্গতদের বাড়ি তৈরির দায়িত্ব নেওয়ার অনুরোধ করেছেন। বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, ‘‘জিটিএ ত্রাণ, উদ্ধারে পুরোপুরি সক্ষম। কেউ সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসতে চাইলে সরকারি নিয়মে আসতে হবে। সবাইকে বলছি, ত্রাণের নামে কাউকে টাকা দেবেন না।’’

সিকিমকে কেন্দ্র প্রায় ৪৫ কোটি টাকার অর্থ-সাহায্য দিয়েছে। কালিম্পং জেলার জন্য ২৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। বৃহস্পতিবার জেলাগুলির পুজো উদ্বোধনের ‘ভার্চুয়াল’ অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, দুর্যোগের জেরে বন্যায় মৃতদের পরিবারকে তিন লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।

আবহাওয়ায় অনুকূল হতেই এ দিন সিকিমে বায়ুসেনার হেলিকপ্টারে লাচুং, লাচেনের মতো এলাকা থেকে শ’তিনেক পর্যটককে উদ্ধার করা হয়েছে। জলপাইগুড়িতে তিস্তা নদীর পাশে আলুর খেত থেকে ফের সেনা-ব্যবহার্য ‘বফর্স চার্জার’ মিলেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

sikkim Sikkim Flood
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE