Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

ভুলেছে সিঙ্গুর, স্মৃতির অক্ষরে সফি-চর্চা আজ

আড়ে-বহরে এবং আড়ম্বরে অবশ্যই ক্ষুদ্র ছিল। কিন্তু সে বার দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের উপরেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ধর্না-মঞ্চের অদূরে তাঁদেরছাউনি ছিল। তৃণমূল নেত্রীর পাশে দাঁডিয়ে সিঙ্গুরে সমাধান বার করার লড়াইয়ে তাঁরা ছিলেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:১৩
Share: Save:

আড়ে-বহরে এবং আড়ম্বরে অবশ্যই ক্ষুদ্র ছিল। কিন্তু সে বার দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের উপরেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ধর্না-মঞ্চের অদূরে তাঁদেরছাউনি ছিল। তৃণমূল নেত্রীর পাশে দাঁডিয়ে সিঙ্গুরে সমাধান বার করার লড়াইয়ে তাঁরা ছিলেন।

শিল্পের জন্য কোনও ভাবেই কৃষিজমিতে হাত দেওয়া যাবে না আর কৃষিজমিতেই শিল্প করতে হবে—এই দুই প্রান্তিক অবস্থানের বাইরে বেরিয়ে মীমাংসার পথে যাওয়া উচিত বলে বিবৃতি দিয়েছিলেন সৈফুদ্দিন চৌধুরী।

সেই সিঙ্গুরের মাটিতে বিজয় উৎসবের দিনে আমন্ত্রণ পেল না সফির পিডিএস। সমাপতন এমনই, যে দিন মমতা সিঙ্গুর থেকে তাঁর বৃহত্তম রাজনৈতিক জয় উদযাপন করছেন, সেই দিনটাই পিডিএসের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি তথা সিপিএমের প্রাক্তন সাংসদ সফির দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী! সিঙ্গুরের মঞ্চ তাঁকে
মনে না রাখলেও সফি-স্মরণে বিশেষ পুস্তিকা দিনের আলো দেখতে চলেছে আজ, বৃহস্পতিবারই। মৌলালি যুবকেন্দ্রে কবি শঙ্খ ঘোষের হাতে।

তাঁর যুক্তিবাদী রাজনীতিকে কুর্নিশ জানিয়ে সফি-স্মরণে কলম ধরেছেন প্রয়াত নেতার পুরনো ও নতুন দলের সহকর্মীরা। ঘনিষ্ঠ সাংবাদিক, লেখক, সমাজকর্মীরাও আছেন। সফির ভাবনাকে মর্যাদা দিতে পারলে বাম রাজনীতি এবং আরও নির্দিষ্ট করে বললে, সিপিএম যে আজকের হালে এসে ঠেকত না, সেই বাস্তবই ফুটে উঠেছে নানা জনের স্মৃতিচারণায়। লোকসভার প্রাক্তন স্পিকার এবং সংসদে সফির সময়ের দলনেতা সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় যেমন মনে করিয়ে দিয়েছেন, আজীবন হিংসামুক্ত রাজনীতির পক্ষে সওয়াল করে গিয়েছিলেন কাটোয়ার প্রাক্তন সাংসদ। চেষ্টা করেছিলেন সাম্প্রদায়িকতার মোকাবিলায় গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ সব শক্তিকে একজোট করতে। যা আজকের দিনে বাম রাজনীতির জন্য আরও বেশি করে প্রাসঙ্গিক।

সিপিএমের রাজ্য কমিটির তিন সদস্য মানব মুখোপাধ্যায়, মইনুল হাসান ও সুখেন্দু পানিগ্রাহির প্রবন্ধ রয়েছে স্মরণসংখ্যায়। সিপিএম ছেড়ে আসা কোনও নেতার জন্য যা প্রায় অভাবনীয়ই বলা যায়! মানবববাবু যেমন লিখেছেন, সত্য শুরুতে সব সময়ই সংখ্যালঘু
থাকে। পরে তা শক্তি অর্জন করে ধীরে ধীরে সংখ্যাগুরু হয়। এই শিক্ষা তাঁরা সফির কাছেই পেয়েছিলেন। সফির স্ত্রী রুকসানা চৌধুরী, আমৃত্যু সহৃদ সমীর পূততুণ্ড ও অনুরাধা দেবও স্মরণ করেছেন তাঁর প্রিয় জনকে। ঘটনাচক্রে, রাজভবনে গোপালকৃষ্ণ গাঁধীর মধ্যস্থতায় মমতার সঙ্গে বাম সরকারের জমি-চুক্তির আলোচনার অন্যতম শরিক সমীরবাবু বুধবারই হাসপাতাল থেকে ছা়ড়া পেয়েছেন নাকে অস্ত্রোপচারের পরে। তাঁর কথায়, ‘‘সিঙ্গুরে আন্দোলনকারীদের জয় হয়েছে, এটা ভাল ব্যাপার। সফির নেতৃত্বে সেই সময়ে আমরা যা চেয়েছিলাম, তা মানলে অনেক আগেই সমস্যার সমাধান মিলতো।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

singur mamata
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE