বক্তব্য রাখছেন খাদ্যমন্ত্রী। রয়েছেন শিশির অধিকারী ও অখিল গিরি। ছবি: পার্থপ্রতিম দাস।
সরকারি সুবিধা পাওয়ার জন্য গরিবদের তালিকা তৈরি নিয়ে স্বজন পোষণের অভিযোগ কার্যত স্বীকার করে নিলেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারী।
খাদ্য দফতরের উদ্যোগে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় ডিজিটাল রেশন কার্ড চালু নিয়ে মঙ্গলবার কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র উপনগরীর বলাকা মঞ্চে আয়োজন করা হয়েছিল আলোচনাসভার। সেখানে রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘‘জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্পে সুবিধা পাওয়ার জন্য গরিবদের যে তালিকা তৈরি হয়েছে সেই তালিকায় অনেক সম্পন্ন ব্যক্তির নাম রয়েছে। অনেক প্রকৃত গরিবদের নাম বাদ পড়েছে। এই কারণে ওই প্রকল্পে ডিজিটাল রেশন কার্ড বিলি করতে গিয়ে এলাকায় জনরোষের সৃষ্টি হতে পারে।’’
তালিকায় অসঙ্গতির কথা স্বীকার করে শিশিরবাবু এ দিন বলেন, ‘‘গরিবদের তালিকায় কারখানা মালিক, স্কুলের প্রধান শিক্ষক, নাম করা অধ্যাপক, বিডিও অফিসের বড়বাবুর নাম আছে জানি। কিন্তু যে প্রাপক সে তো কোনদিন তাঁর নাম বাদ দেওয়ার কথা বলবেন না। এই দায়িত্ব নিতে হবে এলাকার জনপ্রতিনিধিদের। সম্পন্ন লোকের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার জন্য এগিয়ে আসতে হবে।’’ সঙ্গে তাঁর সংযোজন, ‘‘মুখ চাওয়া-চাওয়ির কারবার এখানে নেই। মুশকিল হয় কোথায়, আমার লোকের জন্য করতে হবে। অতীতে অনেক ঘটনা হয়েছে। আমরা যারা দল করি, তারা এমন করেছি। অস্বীকার করার কোন প্রশ্ন নেই। কিন্তু এখন একটু আইশোলেট (বিচ্ছিন্ন ) করুন। যারা প্রকৃত পাওয়ার নয় তাঁদের নাম বাদ দিয়ে দিন।’’
খাদ্য সুরক্ষা আইন চালুর জন্য ডিজিটাল রেশনকার্ড প্রাপকদের যে তালিকা তৈরি হয়েছে তাতে কিছু ভুলত্রুটি থাকার কথা স্বীকার করেন জ্যোতিপ্রিয়বাবু। তিনি জানান, রাজ্যের ৯ কোটি ২১ লক্ষ বাসিন্দার মধ্যে ৬ কোটি ১ লক্ষ মানুষকে এই প্রকল্পের সুবিধা পৌঁছে দেওয়ার জন্য কাজ হচ্ছে। খাদ্যমন্ত্রীর দাবি, ‘‘আগের সরকারের আমলে রাজ্যে কোনও বছর ৭০ জন, কোন বছর ১৩২ জন অনাহারে মারা যেতেন। বর্তমান সরকারের আমলে গত চার বছর দু’মাসে রাজ্যের একজন মানুষও অনাহারে মারা যাননি। এটা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের একটি বড় সাফল্য।’’
এ দিন খাদ্যমন্ত্রী জানান, খাদ্য নিরাপত্তা আইন অনুযায়ী খাদ্য বন্টন করতে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় ডিজিটাল রেশন কার্ড বিলির কাজ শুরু হচ্ছে। জেলায় ২৮ লক্ষ ৪৭ হাজার মানুষ ডিজিটাল রেশন কার্ড পাবেন। এর ফলে রাজ্যের পাঁচটি জেলায় এই প্রকল্প চালু হল। এদিনের সভায় ছিলেন রাজ্যের সমবায় মন্ত্রী জ্যোতির্ময় কর, বিধায়ক অখিল গিরি, বিপ্লব রায়চৌধুরী, অমিয়কান্তি ভট্টাচার্য, ফিরোজা বিবি, বনশ্রী মাইতি, জেলা পরিষদের সভাধিপতি মধুরিমা মণ্ডল, সহ-সভাধিপতি সেখ সুপিয়ান, খাদ্য দফতরের সচিব অনিল বর্মা প্রমুখ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy