Advertisement
E-Paper

মেঝে খুঁড়তেই উদ্ধার হাড়গোড়, ধন্দ পরিচয় নিয়ে

ইন্দিরা আবাসে নতুন বাড়ি তৈরি হবে। ভাঙা পড়বে পুরনো ঘর। মাথা গোঁজার জন্য তাই নিখোঁজ বোনের বন্ধ ঘর খুলেছিলেন শেখ মজিদ। তালা খুলতেই নাকে এল বোঁটকা গন্ধ। তারপর মজিদ দেখলেন, মাটির মেঝেতে আস্ত একটা গর্ত। সেই গর্ত খোঁড়া শুরু হতেই সকলের চক্ষু চড়কগাছ। মাটির সঙ্গে যে মিশে রয়েছে হাড়গোড় আর কাপড়ের টুকরো!

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:০৩
এই বাড়ি থেকেই উদ্ধার হয় হাড়গোড়।—নিজস্ব চিত্র

এই বাড়ি থেকেই উদ্ধার হয় হাড়গোড়।—নিজস্ব চিত্র

ইন্দিরা আবাসে নতুন বাড়ি তৈরি হবে। ভাঙা পড়বে পুরনো ঘর। মাথা গোঁজার জন্য তাই নিখোঁজ বোনের বন্ধ ঘর খুলেছিলেন শেখ মজিদ। তালা খুলতেই নাকে এল বোঁটকা গন্ধ। তারপর মজিদ দেখলেন, মাটির মেঝেতে আস্ত একটা গর্ত। সেই গর্ত খোঁড়া শুরু হতেই সকলের চক্ষু চড়কগাছ। মাটির সঙ্গে যে মিশে রয়েছে হাড়গোড় আর কাপড়ের টুকরো!

শুক্রবার রাতে পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর দারুয়ার এই ঘটনায় গোটা এলাকা হতবাক। মজিদদের সন্দেহ, ওই হাড়গোড় দশ মাস আগে নিখোঁজ বোন নূরজাহানের। সেই সঙ্গে তাঁদের অভিযোগ, স্বামী শেখ রফিকই নূরজাহানকে খুন করে মাটিতে পুঁতে দিয়েছিল। তবে এই মর্মে তাঁরা পুলিশে কোনও অভিযোগ দায়ের করেননি। পুলিশ অবশ্য ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। কাঁথির এসডিপিও ইন্দিরা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওই হাড়গোড় মহিলা না পুরুষের সেটা ফরেন্সিক পরীক্ষার আগে বলা সম্ভব নয়। ফলে, হাড়গোড় নূরজাহানের কিনা সেটাও বোঝা সম্ভব নয়। আমরা অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছি।’’

সাত ভাই ও চার বোনের মধ্যে নূরজাহানই সব থেকে ছোট। বাবা শেখ জহর আলি ও মা পুচি বিবি মারা গিয়েছেন কয়েক বছর আগে। তার পর থেকে দাদাদের সঙ্গেই থাকতেন বছর আঠাশের নূরজাহান। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বছর দেড়েক আগে নূরজাহানের সঙ্গে আলাপ হয়েছিল আদতে রাজস্থানের বাসিন্দা শেখ রফিকের। দারুয়ার কয়েকজন যুবক রাজস্থানের হোটেলে কাজ করেন। তাঁদের সঙ্গে আলাপের সূত্রেই দারুয়ায় এসেছিলেন রফিক। ২০১৫ সালের জুলাইতে রফিক-নূরজাহানের বিয়ে হয়। তারপর শ্বশুরবাড়িতেই থেকে গিয়েছিলেন রফিক। বিয়ের পরে রফিক দিনমজুরি করতেন। আর বিড়ি বাঁধতেন নূরজাহান। বিয়ের পরে বাপের বাড়িতে একটা ঘর পেয়েছিলেন নূরজাহান। পাশাপাশি অন্য ঘরগুলোয় থাকতেন দাদারা। আর দিদিদের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। এখন অবশ্য ওই বাড়িতে শুধু মজিদই থাকেন। বাকি দাদারা কর্মসূত্রে থাকেন বাইরে।

পরিজনেরা জানালেন, ২০১৫ সালের ১৫ নভেম্বর হঠাৎই উধাও হয়ে যান নূরজাহান। তাঁর এক দিদি রিজিয়া বিবি বলেন, ‘‘দাদারা তখন কেউ বা়ড়িতে ছিলেন না। বেড়াতে গিয়েছিল। ওরা ফেরার পরে রফিক বলেছিল, বোনকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। দাদারা থানায় নিখোঁজ ডায়েরিও করেছিল। তবে বোন আর ফেরেনি।’’ এরপর নূরজাহানকে খোঁজার নাম করে বেপাত্তা হয়ে যায় রফিকও। এখনও তার হদিস মেলেনি। সেই থেকে নূরজাহানের ঘর তালাবন্ধই পড়েছিল। শুক্রবার রাতে ওই ঘর খুলেই মেলে হাড়গোড়।

মজিদ এ দিন বলেন, ‘‘নূরজাহানের ঘরটা খুলতেই বোঁটকা গন্ধ পাই। ভেবেছিলাম, অনেক দিন বন্ধ পড়ে রয়েছে। তাই বোধহয় এমন গন্ধ। কিন্তু খাট সরাতে গিয়ে মেঝেতে গর্ত দেখে সন্দেহ হয়। মাটি খুঁড়তেই দেখি হাড়গোড়। আমরা নিশ্চিত ওই হাড়গোড় বোনেরই।’’

skeleton
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy