Advertisement
E-Paper

বৃষ্টির মুষ্টিভিক্ষায় বাড়তি অস্বস্তির আশঙ্কা

আড়িই হোক বা লুকোচুরি খেলায় ফাঁকি দিয়ে পালানো, মঙ্গলবার দু’‌টোতেই একটু ক্ষান্তি দিয়েছে মেঘ-বৃষ্টি। প্রকৃতির সদয় হওয়ার সেই ইঙ্গিতময় বার্তাটি সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ হোয়্যাটসঅ্যাপ মারফত রটি গেল ক্রমে! কেউ লিখল, ‘বৃষ্টি এসে গেছে!’ কেউ বা লিখল, ‘অফিস যাওয়ার আগে মেট্রোর বাইরে ভিজলাম।’

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০১৫ ০৩:৪০
যখন বৃষ্টি নামল। স্বস্তির ধারাপাত। মঙ্গলবার সন্ধ্যায়। ছবি: শৌভিক দে।

যখন বৃষ্টি নামল। স্বস্তির ধারাপাত। মঙ্গলবার সন্ধ্যায়। ছবি: শৌভিক দে।

আড়িই হোক বা লুকোচুরি খেলায় ফাঁকি দিয়ে পালানো, মঙ্গলবার দু’‌টোতেই একটু ক্ষান্তি দিয়েছে মেঘ-বৃষ্টি। প্রকৃতির সদয় হওয়ার সেই ইঙ্গিতময় বার্তাটি সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ হোয়্যাটসঅ্যাপ মারফত রটি গেল ক্রমে!

কেউ লিখল, ‘বৃষ্টি এসে গেছে!’ কেউ বা লিখল, ‘অফিস যাওয়ার আগে মেট্রোর বাইরে ভিজলাম।’

দগ্ধাতে দগ্ধাতে টানা কয়েক দিনের অপেক্ষার পরে অবশেষে বৃষ্টি এল কলকাতায়। তবে সন্ধ্যার সেই এক পশলার বৃষ্টি গরমের হাত থেকে খুব একটা রেহাই দিতে পারেনি। বরং এই অল্পবিস্তর বৃষ্টি উল্টে অস্বস্তি বাড়িয়ে দেবে বলেই মনে করছেন আবহবিদেরা। তাদের একাংশ বলছেন, আজ, বুধবারেও কলকাতা এবং সংলগ্ন এলাকায় ভ্যাপসা গরমের দাপট চলতে পারে।

অস্বস্তির স্থায়ী অবসান না-হোক, বৃষ্টি যে কৃপাদৃষ্টি দিয়েছে, এতেই ধন্য মানছেন নগরবাসী। টানা দহন থেকে মুক্তির আশায় ঝড়বৃষ্টির জন্য হাপিত্যেশ করে বসে ছিলেন তাঁরা। উত্তরবঙ্গ তো লাগাতার ঝড়বৃষ্টিতে নাজেহাল। গত দু’তিন দিন বাঁকুড়া, বীরভূম, এমনকী উত্তর ২৪ পরগনা-সহ দক্ষিণবঙ্গের কয়েকটি জেলায় ঝড়বৃষ্টি হলেও কলকাতার কপাল ছিল মন্দ। সোমবার কলকাতার উত্তর শহরতলিতে বৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু মহানগরের ভাঁগ্যে জোটে নিতান্তই ছিটেফোঁটা। আবহবিদদের ব্যাখ্যা, বঙ্গোপসাগরের একটি ঘূর্ণাবর্তের প্রভাবে দক্ষিণবঙ্গের পরিমণ্ডলে প্রচুর জলীয় বাষ্প রয়েছে। অধিক তাপমাত্রা এবং জলীয় বাষ্পের এই প্রাচুর্যের ফলেই ঝড়বৃষ্টির পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। তা হলে কলকাতার কপালে এত দিন বৃষ্টি জুটছিল না কেন?

আলিপুর আবহাওয়া দফতরের বিজ্ঞানীরা বলছেন, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া-সহ রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলের যেখানে বজ্রগর্ভ মেঘ তৈরি হচ্ছে এবং আপাতত বায়ুপ্রবাহের গতিপথ যা, তাতে মেঘপুঞ্জ উত্তর ২৪ পরগনা ও নদিয়া জেলা হয়ে বাংলাদেশের দিকে চলে যাচ্ছিল। সেই জন্যই কলকাতার কপালে বৃষ্টি জুটছিল না। মহানগরী ঘেঁষে মেঘের দল পড়শি দেশে পাড়ি দিলেও গঙ্গার দু’পাড়ের যমজ শহর বঞ্চিত হচ্ছিল। হাওয়া অফিস সূত্রের খবর, এ দিন সকাল থেকে বায়ুপ্রবাহের অভিমুখ কিছুটা বদলে যায়। তার উপরে এ দিন বজ্রগর্ভ মেঘ তৈরি হয়েছিল রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলের দক্ষিণ দিক ঘেঁষে। দুপুরে রেডার চিত্রে সেই ইঙ্গিত পেয়েই হাওয়া বিজ্ঞানীরা জানিয়ে দিয়েছিলেন, এ দিন সন্ধ্যায় কলকাতার কপালে কমবেশি বৃষ্টি জুটলেও জুটতে পারে। সেই পূর্বাভাস অনেকটাই মিলে গিয়েছে। তবে এমন দাক্ষিণ্য ধারাবাহিক ভাবে মিলবে কি না, সেই বিষয়ে নিশ্চিত কোনও আশ্বাস দিতে পারেনি হাওয়া অফিস।

প্রয়োজন ধারাবর্ষণের। তার বদলে কলকাতার কপালে এ দিন বৃষ্টি জুটেছে সামান্যই। তবে পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, বর্ধমান জেলায় ভাল রকম বৃষ্টি হয়েছে। সঙ্গে ছিল ঝড়। তার ফলে ওই এলাকার বাসিন্দারা তুলনামূলক ভাবে অনেকটাই স্বস্তি পেয়েছেন। সোমবারেও ওই সব জেলায় প্রবল ঝড়বৃষ্টি হয়েছিল।

গরম কি মাথা নোয়াবে? আলিপুর হাওয়া অফিসের বিজ্ঞানীরা বলছেন, বঙ্গোপাসাগরে ঘূর্ণাবর্তটি এখনও সক্রিয় রয়েছে। তার ফলে দক্ষিণবঙ্গের পরিমণ্ডলে ক্রমাগত জলীয় বাষ্প ঢুকছে। তার ফলে দিনের তাপমাত্রা খুব বেশি না-বাড়লেও ভ্যাপসা গরম থাকছে। তার ফলে পথেঘাটে বেরোলেই দরদর করে ঘামতে হচ্ছে মানুষজনকে। এ দিন কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৬.২ ডিগ্রি, স্বাভাবিকের থেকে এক ডিগ্রি বেশি। তবে আর্দ্রতার জন্য দুপুরে অস্বস্তিসূচক উঠে গিয়েছিল ৬৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। ফলে নাজেহাল হয়েছেন মানুষজন। স্থায়ী মুক্তির জন্য চাই বর্ষাকেই।

summer rain weather kolkata ganges metro office
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy