ঠাসা: অনীত থাপার সভায় উপচে পড়ল সমর্থকদের ভিড়। দার্জিলিংয়ের চকবাজারে। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
রাস্তায় সারি দিয়ে গার্ডরেল সাজিয়ে হাঁটা, ছোট গাড়ি চলাচলের পথ বের করেছিল পুলিশ। বেলা বারোটা পর্যন্ত ঠিকই চলছিল। মঞ্চে বক্তব্য যখন শুরু হচ্ছে, তখন দার্জিলিং চকবাজারের রাস্তা জুড়ে থিকথিকে ভিড়। বিনয়পন্থীদের সভায় ভিড় আটকাতে রবিবার পাহাড়ে ‘কালাদিবস’ পালনের ডাক দিয়েছিলেন বিমল গুরুঙ্গ। সভা শুরুর পরে হিলকার্ট রোড জুড়ে শুধু কালো মাথার ভিড়।
হাজার হাজার কর্মী-সমর্থকদের দেখে অনীত থাপা বললেন, ‘‘কালাদিবস ফ্লপ। পাহাড়বাসী কাদের সঙ্গে আছে, তা বোঝাই যাচ্ছে। শুধু গোর্খাল্যান্ডের স্বপ্ন দেখিয়ে আন্দোলনকে ভুল পথে নিয়ে যাওয়া আর যাবে না।’’ অনীতের মুখে গোর্খাল্যান্ডের দাবির যুক্তিগ্রাহ্যতা প্রমাণ করতে বিশেষজ্ঞ দল গঠন এবং রাজ্যের সহযোগিতা নিয়ে উন্নয়ন করার কথা শুনে হাততালি-শিসের শব্দে গর্জে উঠেছে ভিড়।
গুরুঙ্গের ডাকা কালাদিবস, সভায় না আসার ফতোয়া নিয়ে বিনয়-অনীত শিবির খানিকটা উদ্বেগেই ছিল। সভার জায়গাও তাই গার্ডরেল, দড়ি লাগিয়ে ছোট করে দেওয়া হয়। যদিও ভিড়ের চাপে সব ব্যারিকেড উধাও হয়ে যায়। সভা চলাকালীন রাস্তা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। সভামঞ্চ হয়েছিল মোটর স্ট্যান্ডে। ভিড় পৌঁছে যায় চকবাজার ছাড়িয়ে।
সভার শুরুতেই ছিল কচিকাঁচাদের নাচগান। গানের তালে হাততালি চলতে থাকে। উৎসবের মেজাজে শুরু হয় সভা। সভার ঘোষক অবশ্য দাবি করলেন, ‘‘দার্জিলিঙে আজ মেলার পরিবেশ।’’ মেলার মতোই বক্তৃতার ফাঁকে ফাঁকে ঘোষণা হচ্ছে, ‘‘বাদামতামের সরোজ লামা যেখানেই থাকুন মঞ্চের পাশে চলে আসুন, আপনার ছেলে অপেক্ষা করছে।’’ অথবা ‘‘দু’টো আধার কার্ড পাওয়া গিয়েছে। মঞ্চের পাশে এসে নিয়ে যান।’’
অনীতের দাবি, দার্জিলিঙের বাইরে থেকে কর্মী-সমর্থকদের আনা হয়নি। শুধু দার্জিলিং এবং লাগোয়া এলাকার কর্মী-সমর্থকরাই সভায় এসেছিলেন।
মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা তথা পাহাড়ের প্রাথমিক স্কুল বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিরিং দাহালের দাবি, ‘‘সাধারণ বাসিন্দাদের অনেকেই রাজনীতি থেকে দূরে থাকতে চান। কিন্তু এখানে যাঁরা এসেছেন বেশিরভাগই আম জনতা।’’ সতীশ পোখরেলের কথায়, ‘‘এতদিন একনায়কতন্ত্র চলছিল, ভয় হুমকি চলত। সে সব আর নেই তাই এমন উৎসবের মেজাজে ভিড় এসেছে।’’
ঘুম থেকে এসেছিলেন অঞ্জলি থাপা, সাবিত্রী কুঞ্জন। বললেন, ‘‘এত ভিড় হবে আমরা ভাবিনি। তা হলে আরও আগে আসতাম। মঞ্চের কাছাকাছি যেতেই পারলাম না।’’
বিকেল চারটেয় সভা শেষের পরেও আধঘণ্টা ভিড়ে আটকে ছিল দার্জিলিঙের রাস্তায়। যানজট পৌঁছে গিয়েছিল ঘুম পর্যন্ত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy