সোমেন মিত্র।—নিজস্ব চিত্র।
আচমকাই কংগ্রেসের প্রতি সমর্থনের বার্তা শোনা গিয়েছিল সিপিএমের মঞ্চ থেকে। বিজেপিকে হারাতে হলে কংগ্রেসের পাশেই থাকতে হবে— সোমবার সল্টলেকের এক সভায় স্পষ্ট বলেছিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। মঙ্গলবার সেই সল্টলেকেই সভা করে বাম-বার্তাকে স্বাগত জানালেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র। কিন্তু বেশ জোরদার কটাক্ষও ছুড়লেন সিপিএমের দিকে।
সিবিআই-এর দুই শীর্ষকর্তাকে ছুটিতে পাঠানোর বিরোধিতায় দেশ জুড়ে বিক্ষোভ শুরু করেছে বিরোধী দলগুলো। দিল্লিতে কংগ্রেস, তৃণমূল, বাম-সহ বিভিন্ন দল একসঙ্গে পথে নেমেছে। রাজ্যে রাজ্যে আলাদা করে পথে নেমেছে বিজেপি বিরোধী দলগুলো। নিজাম প্যালেসে সিবিআই অফিসের সামনে আগেই বিক্ষোভ দেখিয়েছিল প্রদেশ কংগ্রেস। এ বার পথে নেমেছে বামেরাও।
সোমবার সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়েছিল উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সিপিএম। সেই সমাবেশে ভাষণ দিতে গিয়েই সূর্যকান্ত মিশ্র বলেন, ‘‘আমাদের যেখানে শক্তি রয়েছে, সেখানে আমরা নিজেরাই বিজেপির বিরুদ্ধে লড়ব। আর বাকি জায়গায় আমাকে অবশ্যই বিজেপিকে পরাস্ত করার জন্য ভোট দিতে হবে। আর যদি বিজেপিকে পরাস্ত করতে হয়, কংগ্রেসই যদি সেখানে একমাত্র বিকল্প থাকে, তা হলে কংগ্রেসকেই ভোট দিতে হবে, এটা বলার জন্য বেশি কথা লাগে না।’’
আরও পড়ুন: অমিত প্রার্থী বাংলা থেকে, ওড়িশায় মোদী? সভাপতির জন্য ভাবনায় ৩ আসন, জোর জল্পনা
শুধু জাতীয় ক্ষেত্রে নয়, রাজ্যের ক্ষেত্রে কী ভাবে লড়তে চান তাঁরা, সোমবারের সমাবেশ থেকে সে ইঙ্গিতও সূর্যবাবু দেন। এ রাজ্যে লড়াই শুধু বিজেপির বিরুদ্ধে নয়, তৃণমূলের বিরুদ্ধেও। বলেন সূর্যকান্ত। তাই এ রাজ্যে তৃণমূল এবং বিজেপি বিরোধী সব ভোটকে একত্র করার চেষ্টা হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন। বিজেপি এবং তৃণমূল বিরোধী ভোটকে এক জায়গায় আনার অর্থ যে বাম ও কংগ্রেসের এক জায়গায় আসা, তা বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয় কারওরই।
সিবিআই ইস্যুতে আগেই পথে নেমেছিল প্রদেশ কংগ্রেস। নিজাম প্যালেসে সিবিআই দফতরের সামনে বিক্ষোভ দেখানো হয়েছিল। মঙ্গলবার উত্তর ২৪ পরগনা জেলা (শহর) কংগ্রেসের ডাকে সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সের সামনে ফের বিক্ষোভ হয়। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র, কংগ্রেস নেতা অরুণাভ ঘোষরা এ দিনের সভায় ছিলেন। সোমেন মিত্র সেই সভা থেকেই জবাব দেন সূর্যকান্ত মিশ্রের মন্তব্যের।
সোমেনের গলায় কিন্তু প্রথমে কটাক্ষই শোনা গিয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘হঠাৎ কালকের সমাবেশে আপনাদের কংগ্রেসকে সমর্থন করার দরদ উথলে উঠল।’’ তার পরে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বলেন, ‘‘আমরা মনে করি দেশের স্বার্থে দেরিতে হলেও যদি আপনাদের বোধোদয় হয়, ভারতের এই দুঃসময়ে কংগ্রেসকে সমর্থন করা উচিত বলে যদি আপনাদের মনে হয়, তা হলে আপনাদের স্বাগত জানাব নিশ্চয়ই।’’ কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকেও বামেদের এই অবস্থানের কথা তিনি জানাবেন বলে সোমেন মন্তব্য করেন। কিন্তু ২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতা করে লড়ার পরে যে ভাবে সমঝোতা থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন বামেরা, তাকে কটাক্ষ করতে সোমেন ভোলেননি। তিনি বলেন, ‘‘আপনাদের কাছে শুধু অনুরোধ, আপনাদের খেয়াল মতো আসবেন আর খেয়াল মতো চলে যাবেন, কংগ্রেসকে এই ভাবে প্রতারিত করবেন না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy