Advertisement
E-Paper

ছোটবেলায় ফিরেও তাকাননি মা, ছেড়ে চলে যান! এখন সেই বৃদ্ধার ভার নিতে অস্বীকার পুত্রের, কী বলল হাই কোর্ট

মামলাকারীর পুত্র পেশায় নাবিক, জাহাজ চালান। তাঁর তরফে তাঁর স্ত্রী আদালতে হাজির হয়েছিলেন। পুত্রের আইনজীবী জানান, ছোটবেলাতেই মা ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন পুত্রকে। এখন সেই মায়ের দায়িত্ব তাই নিতে চান না পুত্র।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০২৫ ২১:৫৯
কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিংহের বেঞ্চে মা-ছেলের মামলার শুনানি।

কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিংহের বেঞ্চে মা-ছেলের মামলার শুনানি। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

ছোটবেলাতেই মা তাঁকে ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। তার পর আর ফিরেও তাকাননি। নেননি কোনও খোঁজখবর। দীর্ঘ ১৫ বছর মায়ের সঙ্গে যোগাযোগই নেই ছেলের। বৃদ্ধ বয়সে সেই মা-ই এখন ছেলের সাহায্য চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। আবেদন, তাঁর ন্যূনতম রক্ষণাবেক্ষণ এবং চিকিৎসার খরচটুকু দিন পুত্র। কিন্তু ছেলে নারাজ। যে মা প্রয়োজনের সময়ে তাঁকে ছেড়ে গিয়েছিলেন, সেই মায়ের প্রয়োজনে পাশে দাঁড়াতে চান না, জানিয়ে দিয়েছেন পুত্র। কলকাতা হাই কোর্টে এই মামলার শুনানি চলছে।

মামলাকারী আদালতে জানিয়েছেন, বর্তমানে তিনি বৃদ্ধাশ্রমে থাকেন। তাঁর ন্যূনতম চাহিদা মেটানোর মতো কেউ নেই। তাঁর নিজেরও অর্থের জোর নেই। কিন্তু তাঁর পুত্র সচ্ছল। মায়ের দেখাশোনা করার সামর্থ্য তাঁর রয়েছে। তাই বৃদ্ধার আর্জি, মায়ের জন্য ন্যূনতম খরচের ভার নিন পুত্র।

মামলাকারীর পুত্র পেশায় নাবিক, জাহাজ চালান। তাঁর তরফে তাঁর স্ত্রী আদালতে হাজির হয়েছিলেন। পুত্রের আইনজীবী জানান, মায়ের সঙ্গে তাঁর মক্কেলের কোনও সম্পর্কই নেই। ছোটবেলাতেই মা তাঁকে ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। বাবার সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ না করেই চলে গিয়েছিলেন। পুত্রের যত্ন নেননি। মামার বাড়িতে পুত্র বড় হয়েছেন, মায়ের সান্নিধ্য ছাড়া। আইনজীবীর সওয়াল, ‘‘যে সময়ে মাকে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ছিল পুত্রের, সেই সময়ে তিনি তাঁকে ছেড়ে গিয়েছিলেন। তিনি কেবলই জন্মদাত্রী। কিন্তু জন্ম দিলেই কি মা হওয়া যায়?’’

মা এবং ছেলের এই বিবাদে হস্তক্ষেপ করতে চায়নি আদালত। কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিংহের বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, মা, ছেলের বিবাদ নিয়ে আদালত কোনও মন্তব্য করবে না। কিন্তু জন্মদাত্রীর প্রতি সন্তানের ন্যূনতম কর্তব্য থাকে। যেহেতু পুত্র আর্থিক ভাবে সচ্ছল এবং তাঁর মায়ের সাহায্য প্রয়োজন, আদালত মনে করছে, মায়ের খাদ্য, চিকিৎসার মৌলিক খরচ পুত্রের দেওয়া উচিত। এই অর্থ বৃদ্ধাশ্রম পরিচালনকারী অসরকারি সংস্থার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে পাঠিয়ে দিতে পারবেন পুত্র। মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে না তাঁকে। কিন্তু জন্মদাত্রী মায়ের ন্যূনতম দায়িত্ব তাঁকে নিতে হবে।

কত টাকা বৃদ্ধার প্রয়োজন, মায়ের জন্য কত টাকা দিতে পারবেন পুত্র, তা এখনও স্থির হয়নি। আগামী ৯ জুলাই এই মামলার পরবর্তী শুনানি। ওই দিন আদালতকে বিস্তারিত জানাতে হবে। সেই অনুযায়ী উভয়পক্ষের অবস্থান বিবেচনা করে নির্দেশ দেবে আদালত।

Justice Amrita Sinha Calcutta High Court
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy