পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়।
পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে মতপার্থক্যের জেরে পদ থেকে অব্যাহতি নেওয়ার ‘ইচ্ছা’ প্রকাশ করলেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। বিধানসভায় বুধবার স্পিকারের ঘরের এই ঘটনায় আলোড়ন পড়ে গিয়েছে শাসক শিবিরে। ঘটনার সময়ে উপস্থিত শাসক দলের নেতা-মন্ত্রীরাও হতবাক!
ঘটনার সূত্রপাত এ দিনের কার্য উপদেষ্টা (বিএ) কমিটির বৈঠকে অধিবেশনের সূচি নির্ধারণ নিয়ে। এই বৈঠকে আগামী কর্মসূচি স্থির করার বদলে এ দিনের কর্মসূচি কাটছাঁট করতে চান পার্থবাবু। ওয়েস্ট বেঙ্গল মিউনিসিপ্যাল সার্ভিস কমিশন বিল ছাড়াও এ দিন পুর বিষয়ক অন্য একটি বিল পেশের কথা ছিল। কিন্তু দ্বিতীয়টি পিছিয়ে ৩০ তারিখে আনার কথা বলেন পরিষদীয়মন্ত্রী।
তাঁর এই প্রস্তাবে আপত্তি জানান বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী। তিনি জানান, পুর বিষয়ক দু’টি বিলের জন্য তাঁদের দলের বিধায়ক অশোক ভট্টাচার্য তৈরি হয়ে এসেছেন। শিলিগুড়ির মেয়র অশোকবাবুর পক্ষে এত ঘনঘন কলকাতায় আসাযাওয়া করা সম্ভব নয় জানিয়ে সুজনবাবু এ দিনই বিল পেশের জন্য চাপাচাপি করেন। পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম জানান, পরপর দু’টি বিল পেশের জন্য তিনিও তৈরি। কিন্তু পার্থবাবু অনড় মনোভাব নেওয়ায় কথা কাটাকাটি শুরু হয়। গোটা পরিস্থিতিতে কিছুটা বিরক্ত হয়েই তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা করেন স্পিকার। তাঁর সঙ্গেও অপ্রিয় বাক্য বিনিময়ে জড়িয়ে চেয়ার ছেড়ে উঠতে চান পার্থবাবু।
আরও খবর: লোকায়ুক্ত বিল আজ, বলবেন মুখ্যমন্ত্রী
বিরোধীদের আপত্তি সত্ত্বেও অবশ্য পরিষদীয় মন্ত্রীর প্রস্তাব বদলায়নি। শেষ পর্যন্ত ঠিক হয়েছে বিলটি পেশ হবে আগামী শুক্রবার, ২৭ তারিখ। তবে স্পিকারের সঙ্গে তাঁর বিরোধ আরও গড়ায় বৈঠকের শেষে। কংগ্রেস, বাম এবং বিজেপির প্রতিনিধিরা বেরিয়ে গেলে পরিষদীয়মন্ত্রীর আচরণে সরাসরি ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্পিকার। চার মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, শোভন চট্টোপাধ্যায়, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, ফিরহাদ এবং পরিষদীয় দলের পদাধিকারীদের সামনেই তিনি পার্থবাবুকে বলেন, তাঁকে পছন্দ না হলে ছেড়ে দেওয়া হোক। তাঁর জায়গা আছে। তিনি সেখানেই ফিরে যাবেন। প্রসঙ্গত, বিমানবাবু পেশায় আইনজীবী। পরিষদীয়মন্ত্রী পাল্টা বলেন, জায়গা তাঁদেরও আছে। স্পিকার তখন বলেন, কার কোথায় জায়গা আছে, তিনি জানেন না। কিন্তু তাঁর আছে! অন্যদের হস্তক্ষেপে তখনকার মতো পরিস্থিতি শান্ত হয়। পার্থবাবু স্পিকারের ঘর ছেড়ে বেরিয়ে যান। স্পিকার অবশ্য প্রকাশ্যে এ নিয়ে মুখ খুলতে চাননি।
বিধানসভা সূত্রে খবর, এক মাস আগে দিনক্ষণ ঠিক হয়ে গেলেও এ বার অধিবেশনের কার্যসূচি নিয়ে প্রায় প্রতিদিনই চূড়ান্ত অনিশ্চয়তা তৈরি হচ্ছে। নির্দিষ্ট কাজ না থাকায় নির্ধারিত সময় পর্যন্ত অধিবেশন চালানো যাবে কি না, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয় সরকার পক্ষেও। কোনও রকম প্রস্তুতি না-থাকায় বিধানসভার কমিটি তৈরি নিয়েও চূড়ান্ত অগোছালো অবস্থায় রয়েছে তারা। এ সব নিয়েই অনেক দিনের চাপা মতপার্থক্য এ দিন সামনে এসে পড়েছে বলে শাসক শিবিরের একাংশের অভিমত।
পুরসভায় নিয়োগে সার্ভিস কমিশন, পাশ বিল
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy