Advertisement
E-Paper

ফেসবুকে লাইভ করে সোনারপুরে আত্মঘাতী কিশোরী

ফেসবুকের ক্যামেরা চালিয়েই এক কিশোরী আত্মঘাতী হয়েছে বলে অভিযোগ দায়ের হল পুলিশে। মৃতার নাম মৌসুমী মিস্ত্রি (১৭)। বাড়ি সোনারপুরে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ জুন ২০১৮ ০৩:২০
আত্মঘাতী ছাত্রী মৌসুমী মিস্ত্রি।

আত্মঘাতী ছাত্রী মৌসুমী মিস্ত্রি।

আত্মহত্যার ‘লাইভ’ ভিডিয়ো ফেসবুকে।

ফেসবুকের ক্যামেরা চালিয়েই এক কিশোরী আত্মঘাতী হয়েছে বলে অভিযোগ দায়ের হল পুলিশে। মৃতার নাম মৌসুমী মিস্ত্রি (১৭)। বাড়ি সোনারপুরে। স্থানীয় একটি স্কুলে দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ত সে। রবিবার ওই ছাত্রীর দেহ উদ্ধার হলেও পরিবারের তরফে সোমবার সোনারপুর থানায় দু’জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। যার ভিত্তিতে পুলিশ আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার মামলা রুজু করেছে। অভিযুক্তদের এক জন কামালগাজির একটি স্কুলের একাদশ শ্রেণির ছাত্র। অন্য জন গড়িয়ার বাসিন্দা। আগে তিনি মৌসুমীকে ইংরেজি পড়াতেন। পরিবারের অভিযোগ, তাঁরা আত্মহত্যার ছবি লাইভ দেখেও খবর দেননি।

সোমবার রাত পর্যন্ত পুলিশ অবশ্য নিশ্চিত হতে পারেনি ওই ছাত্রী ক্যামেরা চালু রেখে আত্মঘাতী হয়েছে কি না। ছাত্রীর মোবাইলটি ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। এক পুলিশকর্তা জানান, মোবাইল থেকে একটি ছবি মিলেছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, ওই কিশোরী একটি চেয়ারের উপরে দাঁড়িয়ে রয়েছে। কপালের নীচ থেকে পুরো মুখ ওড়না দিয়ে ঢাকা।

পুলিশ জানিয়েছে, মা এবং দিদিমার সঙ্গে সোনারপুর বৈদ্যপাড়ায় থাকত ওই ছাত্রী। কাছেই পাঁচ বছরের ছেলেকে নিয়ে অন্য বাড়িতে ওই ছাত্রীর সৎ বাবা দীপক মণ্ডল ভাড়া থাকেন। পরিবার জানিয়েছে, শনিবার এক বান্ধবীর সঙ্গে বেরোয় মৌসুমী। অভিযুক্ত ছাত্রের সঙ্গে দেখা করে সময় কাটায়। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ বাড়ি ফেরে। তার পর থেকে কারও সঙ্গে কথা বলেনি। তার মা শম্পা আয়ার কাজ করেন। মেয়ে ফেরার পরে তিনি কাজে চলে যান। রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ একটি জলসায় যায় মৌসুমী। সুব্রত মণ্ডল নামে এক আত্মীয়ের সঙ্গে বাড়ি ফিরে রাতের খাবার খেয়ে দরজা বন্ধ করে দেয় সে। পাশের ঘরে ছিলেন সুব্রত এবং দিদিমা। পুলিশ সূত্রের খবর, রবিবার সাড়ে ১০টা বেজে গেলেও ওই ছাত্রী ঘুম থেকে না ওঠায় ডাকাডাকি করেন বাড়ির লোক। ততক্ষণে ফিরেছেন শম্পাও। সুব্রত জানান, এর পরেই জানালা দিয়ে মৌসুমীকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখা যায়। দরজা ভেঙে উদ্ধার করা হয় দেহ।

দীপকের অভিযোগ, মৌসুমীর মোবাইলে ফেসবুক চালু ছিল। সেখানে গলায় ওড়না জড়ানো ছবিও আছে। তা কয়েক জন বন্ধু দেখেছে। হোয়াটসঅ্যাপে অভিযুক্ত ছাত্রের সঙ্গে চ্যাটও মিলেছে। ওই ছাত্র নিজের পাঠানো মেসেজ ডিলিট করে দিলেও মৌসুমীর মেসেজগুলি ছিল। ভোর ৩টে নাগাদ ওই ছাত্রকে মৌসুমী শেষ মেসেজ করে হোয়াটসঅ্যাপে। লেখা ছিল,‘আমাকে শেষ দেখা দেখে নাও।’

পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার ওই ছাত্রের সঙ্গে দেখা করে মৌসুমী। অভিযুক্ত ছাত্রের দাবি, ‘‘বারুইপুরে মৌসুমীর এক বিশেষ বন্ধু আছে। মৌসুমী পারিবারিক অশান্তি এবং ওই বন্ধুর অত্যাচারের কারণে আত্মহত্যা করার কথাও বলেছিল। আমি বারণ করায় কথা কাটাকাটি হয়। এর মধ্যেই ও ‘আমাকে শেষ দেখা দেখে নাও’ বলে মেসেজ পাঠিয়ে চেয়ারে ওঠে। পা দিয়ে ঘরের আলো নিভিয়ে দেয়।’’ কেন সে ওই কথা কাউকে জানাল না? অভিযুক্তের বক্তব্য, তার ফোন ব্লক় করে দেয় মৌসুমী। তা ছাড়া সে দেখতে পেয়েছিল, ছাত্রীটি নেমে অন্ধকারের মধ্যেই ফোন হাতে নিল। মোবাইলের আলোয় ওর মুখ দেখা গিয়েছিল। তাই সে ভেবেছিল কিছু হয়নি। অভিযুক্ত শিক্ষকের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে, এক জন জানান, তিনি ওই শিক্ষকের আত্মীয়। ওই শিক্ষক বাড়িতে নেই।

Suicide Facebook Live Social Media মৌসুমী মিস্ত্রি
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy