Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

এবার বিজেপি-তে যাচ্ছেন তৃণমূলের ছাত্রনেতা সুজিত

বুধবার হেস্টিংসে বিজেপি-র নির্বাচনী দফতরে সুজিত বিজেপি-তে যোগ দিচ্ছেন মুকুল রায়ের হাত ধরে।

বিজেপিতে যোগ সুজিতের।

বিজেপিতে যোগ সুজিতের।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০২০ ১১:৪৩
Share: Save:

তৃণমূল ত্যাগের পথে এ বার ছাত্রনেতা সুজিত শ্যাম। বুধবার হেস্টিংসে বিজেপি-র নির্বাচনী দফতরে সুজিত বিজেপি-তে যোগ দিচ্ছেন মুকুল রায়ের হাত ধরে। তার আগে ফেসবুকে গেরুয়া রংয়ের পটভূমিকায় ইঙ্গিতপূর্ণ স্টেটাস দিয়েছেন সুজিত। যেখানে তিনি লিখেছেন, ’১৬ বছরের সম্পর্ক ভাঙা সহজ নয়। কিন্তু জীবনে এমন কিছু সময় আসে, যখন সামনে তাকাতে হয়’। প্রসঙ্গত, ১৬ বছর আগে, ২০০৪ সালে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন সুজিত।

আদতে বাঁকুড়ার বাসিন্দা সুজিত ২০১৪ সালে বাঁকুড়া লোকসভায় তৃণমূলের আনকোরা প্রার্থী মুনমুন সেনকে জেতানোর বিষয়ে বড় ভূমিকা নিয়েছিলেন বলেই দলের সকলে জানেন। তবে তার পর ক্রমশ দলের মূলস্রোত থেকে হারিয়ে যেতে থাকেন এই ছাত্রনেতা। সুজিতের ঘনিষ্ঠদের দাবি, তাঁকে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তা পালন করা হয়নি। ফলে তৃণমূলে গদত কয়েকবছর ‘বিক্ষুব্ধ’ হিসাবেই থেকেছেন সুজিত। কয়েকটি মামলাতেও তাঁকে ‘জড়িয়ে’ দেওয়া হয়েছিল বলে তাঁর ঘনিষ্ঠদের দাবি। যদিও সরকারি এবং প্রশাসনিক সূত্রে তার সমর্থন এখনও পর্যন্ত মেলেনি। ঘটনাচক্রে, সুজিত তৃণমূলের অন্দরে প্রথম থেকেই মুকুল-ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত ছিলেন। এবং তিনি তা গোপন করারও চেষ্টা করেননি। মুকুল যখন তৃণমূলে ‘বিক্ষুব্ধ’, তখনও তাঁর পাশে বিভিন্ন কর্মসূচিতে সুজিতকে দেখা গিয়েছে। তৃণমূল সূত্রের খবর, সুজিত বরাবরই মুকুলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রেখে চলেছেন। মুকুল বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার পরেও সেই যোগাযোগ অক্ষুন্ন ছিল।

সুজিতের ঘনিষ্ঠদের অবশ্য দাবি, মুকুলের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ একেবারেই ‘ব্যক্তিগত এবং সামাজিক’ পর্যায়ে থেকেছে। বুধবার সুজিত বলেন, ‘‘মুকুল’দার সঙ্গে আমার বরাবর ব্যক্তিগত এবং সামাজিক সম্পর্ক ভাল। কিন্তু যে তৃণমূলকে দেখে ২০০৪ সালে প্রথম রাজনীতিতে এসেছিলাম, সেই তৃণমূল এখন আর নেই। আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখে দল করতে এসেছিলাম। কিন্তু এখন দেখছি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে সামনে দাঁড়িয়ে যাঁরা দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তাঁধের অনেকে ২০০৭ সালে ১৪ মার্চ নন্দীগ্রামে গণহত্যার পর ২৪ মার্চ খোলা চিঠি দিয়ে সিপিএমকে সমর্থন করেছিলেন। সেখানে বলা হয়েছিল, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে আবার ক্ষমতায় আনতে হবে। তাঁরাই ২০০৯ সালে রবীন দেব যখন দক্ষিণ কলকাতা কেন্দ্রে মমতা’দির বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিলেন, তখন তাঁর হয়ে প্রচার করেছিলেন। তাঁরাই এখন মমতার’দির ছায়াসঙ্গী হয়ে তৃণমূলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। ফলে সেই তৃণমূল আর এই তৃণমূলে অনেক ফারাক। এই তৃণমূলের সঙ্গে সম্পর্ক ভাঙতেই হল।’’ সুজিতের আরও বক্তব্য, ‘‘আমি ছাত্রনেতা। রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থা ভগ্নপ্রায়। বেকার যুবকযুবতীদের চাকরি নেই। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি দুর্নীতির আখড়া। এর পর শিক্ষামন্ত্রী বুঝতে পারবেন, এই আন্দোলন কোথায় যাবে!’’

সুজিত এবং মুকুল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

BJP Mukul Roy Sujit Shyam
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE