মঙ্গলবার সকালে ‘নন্দীগ্রাম দিবস’ নিয়ে টুইট করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রসঙ্গত, ২০০৮ সালের ১০ নভেম্বর তৃণমূলের থেকে নন্দীগ্রাম ‘পুনর্দখল’ করে ‘সূর্যোদয়’-এর কথা বলেছিল সিপিএম। প্রতি বছর এই দিনটিকে ‘নন্দীগ্রাম দিবস’ হিসেবে পালন করে তৃণমূল। এ দিন মমতা টুইট করেন, ‘আজ নন্দীগ্রাম দিবস। ‘সূর্যোদয়’-এর নামে বর্বর হিংসার ১৩তম বছর। গোটা বিশ্বে রাজনৈতিক হিংসায় যাঁরা প্রাণ দিয়েছেন তাঁদের সকলের প্রতি আমার শ্রদ্ধা। সব সময় শান্তির জয় পাওয়া উচিত’।
ঘটনাচক্রে, এ দিনই নন্দীগ্রামে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী সভা করেন পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। তবে সেই সভা থেকে তিনি কোনও ‘রাজনীতির কথা’ বলতে চাননি। সম্ভবত সেই কারণেই তিনি সেখানে তৃণমূল বা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম নেননি। তবে সামগ্রিক ভাবে ইঙ্গিত দিয়েছেন, নন্দীগ্রাম সম্পর্কে নেতাদের ‘আগ্রহ কম’। প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার বিকেলেই পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের উপস্থিতিতে নন্দীগ্রামে তৃণমূলেরও সভা রয়েছে। তার আগে এদিন সকালে নন্দীগ্রামেই শুভেন্দু বলেছেন, ‘‘ভোটের আগে আসছেন। ভোটের পরেও তো আসতে হবে!’’
প্রসঙ্গত, এদিন শুভেন্দুর সভা ছিল ‘ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটি’-র নামে। নন্দীগ্রামের তেখালির বকুলনগর স্কুলের মাঠের ওই সভায় তৃণমূলের কোনও ব্যানার বা পোস্টার দেখা যায়নি। ছিল না মুখ্যমন্ত্রীর ছবিও। স্বেচ্ছাসেবকরা যে টিশার্ট পরেছিলেন, তাতে ছিল শুভেন্দুর ছবি। সেই মঞ্চ থেকে তিনি রাজনৈতিক কথা বলবেন না বলে বারবার জানিয়েছেন শুভেন্দু। তবে বক্তৃতার শেষে তাঁর ‘জয় বাংলা’, ‘জয় নন্দীগ্রাম’-এর পাশাপাশি ‘ভারতমাতা জিন্দাবাদ’ ধ্বনি দেওয়াকে অনেকে ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে মনে করছেন।
Today is Nandigram Dibas - the 13th anniversary of the barbaric massacre in the name of ‘new dawn’. My homage to all those who have lost their lives due to political violence across the world. Peace must always win
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) November 10, 2020
তাঁর পরবর্তী রাজনৈতিক পদক্ষেপ নিয়ে জল্পনার উত্তর এ দিন দিয়েছেন শুভেন্দু। তাঁর কথায়, ‘‘যাঁরা রাজনৈতিক বিশ্লেষক, তাঁরা হা-পিত্যেশ করে বসে আছেন— আমি এখান থেকে কোনও রাজনৈতিক কথা বলব কি না। আমি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। আমি রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম থেকে বলব। এই পবিত্র মঞ্চ থেকে রাজনীতির কথা বলব না। কোন রাস্তা দিয়ে হাঁটলে আমি এগিয়ে যেতে পারব, কোন রাস্তায় গেলে খানাখন্দে পড়ব না, তা আমি রাজনৈতিক প্লাটফর্মে দাঁড়িয়ে বলব।’’ একই সঙ্গে শুভেন্দু বলেন, ‘‘রাজনীতি করতে গিয়ে কোথায় হোঁচট খাচ্ছি, কোথায় আমার পথ গর্তে ভরা, কোথায় স্বাচ্ছন্দ্যের অভাব হচ্ছে সব বলব। তবে আজ নয়।’’
শুভেন্দুর সভায় কয়েকজন তৃণমূল বিধায়ককেও দেখা গিয়েছে। তাঁরা হলেন খেজুরির রঞ্জিত মণ্ডল, দক্ষিণ কাঁথির বনশ্রী মাইতি, নন্দকুমারের সুকুমার দে এবং ময়নার সংগ্রাম দলুই। এছাড়াও মঞ্চে ছিলেন তমলুকের তৃণমূল সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী। যিনি ঘটনাচক্রে, শুভেন্দুর ভাই।