Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Nandigram

শুভেন্দু-মুকুলের নন্দীগ্রামে আজ অতিথির আসনে দিলীপ-কৈলাস

এই প্রথম নন্দীগ্রামে ‘সাদর অভ্যর্থনা’ পাবেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ-সহ অন্য নেতারা। বিজেপির এই মাপের সভাও এই প্রথম।

পুরনো কথা মনে রাখতে চান না দিলীপ ঘোষ।

পুরনো কথা মনে রাখতে চান না দিলীপ ঘোষ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০২১ ১৩:৩৭
Share: Save:

বৃহস্পতিবার, ৭ জানুয়ারি তৃণমূলের নন্দীগ্রাম দিবসের ‘পাল্টা’ ৮ জানুয়ারি, শুক্রবার বিজেপি-র সমাবেশ। আসলে শুভেন্দু অধিকারীর সমাবেশ। যিনি দাবি করেছেন, লক্ষাধিক মানুষের জমায়েতে ‘ঐতিহাসিক’ সমাবেশ হবে বঙ্গ রাজনীতির অনেক পালাবদলের সাক্ষী নন্দীগ্রামে। কিন্তু এই দিনটিকে আরও একটি কারণে ‘ঐতিহাসিক’ মনে করছে রাজ্য বিজেপি। কারণ, এই প্রথম নন্দীগ্রামে বিজেপি-র মঞ্চ বাঁধা হল। ছুটকোছাটকা কর্মসূচি করলেও এই মাপের সভা এই প্রথম। এই প্রথম নন্দীগ্রামে ‘সাদর অভ্যর্থনা’ পাবেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ-সহ অন্য নেতারা।

এত দিন এই নন্দীগ্রামে প্রবেশের ক্ষেত্রে দিলীপের বড় বাধা ছিলেন শুভেন্দুই। দিলীপ-ঘনিষ্ঠদের বক্তব্য, ‘‘বারবার দিলীপ’দা নন্দীগ্রামে সভা করতে চাইলেও পারেননি। অনুমতিই মেলেনি। লোকসভা নির্বাচনের আগে একবার গেলেও কার্যত পালিয়ে আসতে হয়েছিল। এখন পরিস্থিতির বদল পরিবর্তন এনে দিয়েছে।’’ রাজ্য বিজেপি-র এক প্রথমসারির নেতার বক্তব্য, ‘‘যে শুভেন্দুর দাপটে নন্দীগ্রামে এত দিন পতাকাও তুলতে পারেনি বিজেপি, সেখানেই শুক্রবার অভ্যর্থনা জানানো হবে দিলীপ’দাদের।’’ পরিস্থিতি তা হলে সত্যিই বদলে গিয়েছে? সদ্য তৃণমূল থেকে বিজেপি-তে যোগ-দেওয়া নন্দীগ্রামের নেতা পবিত্র কর বললেন, “পরিস্থিতি বদলে গিয়েছে। তাই আগের কথা এখন আর ভেবে লাভ নেই।”

এই প্রথম নন্দীগ্রামে বিজেপি-র বড় মঞ্চ বাঁধা হল।

শুধু দিলীপ ঘোষ বা কৈলাস বিজয়বর্গীয়ই নন, মুকুল রায়ও বিজেপি নেতা হিসেবে শুক্রবার প্রথম নন্দীগ্রামে পা রাখছেন। যে সময়ে নন্দীগ্রাম উত্তাল হয়েছিল, সে সব দিনে তৃণমূল নেতা হিসেবে সেখানে বহুবার গিয়েছেন মুকুল। কিন্তু দিলীপ তখন নন্দীগ্রাম থেকে অনেক দূরে। রাজনীতি থেকেও।

দিন বদলের ছবি। দিলীপকে স্বাগত নন্দীগ্রামে।

দিলীপ রাজনীতিতে আসেন ২০১৪ সালে। রাজ্য সভাপতি হন ২০১৫ সালে। এর পর বিধায়ক ও সাংসদ। কিন্তু ২০০৭ সালে যখন নন্দীগ্রাম উত্তাল, তখন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ (আরএসএস)-এর প্রচারক হিসেবে দিলীপ আন্দামানের দায়িত্বে। ২০০৭ সালের ৩ জানুয়ারি জমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত নোটিস ঘিরে অগ্নিগর্ভ নন্দীগ্রাম, ৭ জানুয়ারির ভোরে সোনাচূড়ার কাছে সংঘর্ষ-গুলি-মৃত্যু কিংবা ১৪ মার্চের পুলিশি অভিযান, ১০ নভেম্বরের ‘সূর্যোদয়’, কলকাতায় বুদ্ধিজীবীদের মিছিল— এ সব থেকেই অনেক দূরে ছিলেন কৈলাসও। যিনি এখন বিজেপি-র নীলবাড়ি দখলরের লড়াইয়ের অন্যতম সেনাপতি, তিনি তখন মধ্যপ্রদেশের ইনদওরের বিধায়ক।

আরও পড়ুন: আজই রাজ্যে পৌঁছে যেতে পারে ভ্যাকসিন, জেলায় জেলায় চলছে টিকা মহড়া

আরও পড়ুন: বদায়ূঁকাণ্ডে শিষ্যের বাড়ি থেকে ধৃত মূল অভিযুক্ত সেই পুরোহিত​

তৃণমূল ৭ জানুয়ারি ‘নন্দীগ্রাম দিবস’ পালন করে। কারণ, তারা মনে করে এই দিনেই ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির তিন জন শহিদ হয়েছিলেন। ভরত মণ্ডল, শেখ সেলিম, বিশ্বজিৎ মাইতিদের নাম কি জানা আছে দিলীপ-কৈলাসের? এই প্রশ্ন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের। তিনি আরও বলেন, “যে আন্দোলনের সঙ্গে এঁদের কোনও সম্পর্কই ছিল না, সেই আন্দোলনকে ঘিরে আবেগ এখন নির্বাচনের স্বার্থে ব্যবহার করা হচ্ছে। সেটাও আবার এক বিশ্বাসঘাতকের হাত ধরে!”

শুভেন্দু অবশ্য মনে করেন, সেই সময় নন্দীগ্রাম আন্দোলনে অবদান ছিল বিজেপি-রও। বুধবার সবংয়ের সভায় তিনি বলেছেন, “আমি নন্দীগ্রাম আন্দোলন করেছি। নন্দীগ্রামে লালকৃষ্ণ আডবাণী, সুষমা স্বরাজরা এসেছিলেন। সে দিন বিজেপি তৃণমূলের পাশে না দাঁড়ালে দলটা ২০০৩ সালে উঠেই যেত!” শুক্রবার নন্দীগ্রামের সমাবেশে যাওয়ার পথে দিলীপ অবশ্য পুরনো কথা মনে রাখতে চান না। তাঁর সংক্ষিপ্ত মন্তব্য, “বিজেপি সম্মান ছিনিয়ে নিয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE