Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

যাত্রীরা হয়রান, তবু ট্যাক্সি-জটে উদাসীন রাজ্য

পুজো দিন আষ্টেক দূরে। রবিবার তাই অঝোর বৃষ্টি মাথায় করেই কেনাকাটা সেরে নিতে বেরিয়েছিলেন অনেকে। কিন্তু বৃষ্টির সঙ্গে পরিবহণ-সঙ্কটে চূড়ান্ত নাজেহাল হতে হল তাঁদের। এমনিতেই রবিবার বেসরকারি বাস-মিনিবাস কম থাকে। তার উপরে টানা বৃষ্টি চলতে থাকায় এ দিন কার্যত রাস্তায় বাস তেমন ছিলই না। এমন দিনে সাধারণত ট্যাক্সিই হয়ে ওঠে শহরের ‘লাইফলাইন’।

পথে নামায় ট্যাক্সির উপর হামলা। রবিবার চারু মার্কেটের কাছে। সুদীপ্ত ভৌমিকের তোলা ছবি।

পথে নামায় ট্যাক্সির উপর হামলা। রবিবার চারু মার্কেটের কাছে। সুদীপ্ত ভৌমিকের তোলা ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০২:৩৬
Share: Save:

পুজো দিন আষ্টেক দূরে। রবিবার তাই অঝোর বৃষ্টি মাথায় করেই কেনাকাটা সেরে নিতে বেরিয়েছিলেন অনেকে। কিন্তু বৃষ্টির সঙ্গে পরিবহণ-সঙ্কটে চূড়ান্ত নাজেহাল হতে হল তাঁদের।

এমনিতেই রবিবার বেসরকারি বাস-মিনিবাস কম থাকে। তার উপরে টানা বৃষ্টি চলতে থাকায় এ দিন কার্যত রাস্তায় বাস তেমন ছিলই না। এমন দিনে সাধারণত ট্যাক্সিই হয়ে ওঠে শহরের ‘লাইফলাইন’। কিন্তু ট্যাক্সিরও লাগাতার ধর্মঘট চলছে চার দিন ধরে। ফলে পথে বেরোনো মানুষের বাড়ি ফিরতে নাভিশ্বাস উঠেছে।

প্রশ্ন উঠেছে, পুজোর আগে টানা চার দিন ট্যাক্সি ধর্মঘট চলা সত্ত্বেও আমজনতার অসুবিধে দূর করতে সরকার কোনও ব্যবস্থা নিল না কেন? পরিবহণমন্ত্রী থেকে প্রশাসন বারবার আশ্বাস দিয়েছেন, ট্যাক্সি ধর্মঘটে যাতে মানুষের কোনও অসুবিধে না-হয়, তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, ট্যাক্সি না-থাকায় দিনের পর দিন চূড়ান্ত নাকাল হতে হচ্ছে মানুষকে। সরকার কোনও ব্যবস্থাই নিতে পারেনি।

বিরোধী শিবিরের বিভিন্ন শ্রমিক ইউনিয়ন বারবার আলোচনায় বসার দাবি জানাচ্ছে। কিন্তু ট্যাক্সির ব্যাপারে সরকার এখনও কড়া অবস্থানেই অনড়। রাজ্যের পরিবহণ দফতরের এক কর্তা এ দিন বলেন, “এখনই আলোচনায় বসার কোনও পরিকল্পনা নেই।” উল্টে ধর্মঘটী ট্যাক্সি আটক করে ধর্মঘটীদের উপরে চাপ তৈরি করারই পক্ষপাতী সরকার।

অথচ সিটু, আইএনটিইউসি, এআইটিইউসি, বিএমএস-সহ বিরোধী শ্রমিক সংগঠনগুলির বক্তব্য, সরকার আলোচনায় বসলেই সমস্যার সমাধান সম্ভব। সিটু নেতা অনাদি সাহুর অভিযোগ, শ্রমিকেরা অভুক্ত। শহরে লক্ষ লক্ষ মানুষ অসুবিধেয় পড়ছেন। অথচ সরকার চুপ করেই বসে রয়েছে। “ট্যাক্সিচালকদের কী অসুবিধে, কেন তাঁরা ধর্মঘটে গেলেন, বুঝতেই চাইছে না সরকার,” বললেন অনাদিবাবু।

ধর্মঘটের মধ্যে যাঁরা ট্যাক্সি নিয়ে বেরোচ্ছেন, তাঁদের উপরে ধর্মঘটীরা হামলা চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ। এ দিনও অন্তত চার জায়গায় ট্যাক্সির উপরে হামলা হয়েছে। ভোর সাড়ে ৫টা নাগাদ গড়িয়া থেকে যাত্রী নিয়ে শিয়ালদহ স্টেশনে যাচ্ছিলেন এক ট্যাক্সিচালক। অভিযোগ, পার্ক সার্কাস সেভেন পয়েন্টে ১০-১২ জন যুবক ট্যাক্সি ঘিরে ধরে। যাত্রী নামিয়ে বাঁশ দিয়ে ট্যাক্সির সামনের কাচ ভেঙে ফেলে তারা। এক ট্যাক্সিচালক সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ বাঁশদ্রোণী থেকে রোগী নিয়ে যাচ্ছিলেন এসএসকেএম হাসপাতালে। অভিযোগ, চারু মার্কেটের কাছে কয়েক জন যুবক ইট ছোড়ে। ভেঙে যায় ট্যাক্সির সামনের কাচ। তার মিনিট দশেক পরেই ওই রাস্তায় অন্য একটি ট্যাক্সিকে লক্ষ করে ইট ছোড়া হয় বলে অভিযোগ।

একই ভাবে ওয়াটগঞ্জে সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ একটি ট্যাক্সি ভাঙচুর করে কিছু দুষ্কৃতী। তার পরে কয়েক জন পুলিশ যাত্রী সেজে ট্যাক্সি নিয়ে ওই এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন। কিছু লোক সেই ট্যাক্সির উপরেও হামলা চালায়। ওই ঘটনায় পুলিশ দু’জনকে গ্রেফতার করেছে। ট্যাক্সি ভাঙচুরের পিছনে কোনও ষড়যন্ত্র রয়েছে কি না, তা যাচাই করার জন্য পুলিশ ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে।

ধর্মঘটী ট্যাক্সিচালকেরা অবশ্য পথে বেরোনো ট্যাক্সির উপরে হামলার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

taxi strike taxi issue passenger harrassment
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE