Advertisement
১৭ মে ২০২৪
Teacher Recruitment Scam Case

শেষ তল্লাশি অভিযান, ১২ ঘণ্টা পর তৃণমূল নেতা শান্তনুর হুগলির বাড়ি থেকে বেরল ইডি

শান্তনুর বাড়ি বলাগড়ের বারুইপাড়া গ্রামে। তিনি হুগলি জেলা পরিষদের স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ এবং তৃণমূলের প্রাক্তন জেলা যুব সভাপতি। স্বভাবতই তাঁকে এলাকায় লোকেরা ‘প্রভাবশালী’ বলে মনে করেন।

শান্তনু হুগলি জেলা পরিষদের স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ এবং তৃণমূলের প্রাক্তন যুব জেলা সভাপতি। —নিজস্ব চিত্র।

শান্তনু হুগলি জেলা পরিষদের স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ এবং তৃণমূলের প্রাক্তন যুব জেলা সভাপতি। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০২৩ ২২:৩৩
Share: Save:

১২ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে তল্লাশি অভিযানের পর অবশেষে তৃণমূল নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি থেকে বার হলেন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর তদন্তকারীরা। ইডি সূত্রে খবর, বেশ কিছু নথি সংগ্রহ করা হয়েছে। আগামী সপ্তাহে শান্তনুকে কলকাতায় সিবিআইয়ের দফতর সিজিও কমপ্লেক্সে ডাকা হতে পারে বলে জানা গিয়েছে তদন্তকারীদের সূত্রে।

শুক্রবার সকালে মোট ৪টি গাড়ি করে ১২ জন ইডি আধিকারিক আসেন হুগলির বলাগড়ে। তৃণমূল নেতা শান্তনুর বাড়িতে অভিযান চালান তাঁরা। তল্লাশি অভিযান শেষে শুক্রবার রাতে শান্তনু বলেন, ‘‘আমি যদি কোনও অন্যায় করে থাকি, আমার শাস্তি হোক। আমি কোনও রকম দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত নই। আজ (শুক্রবার) যাঁরা এসেছিলেন, তাঁরা আমার সঙ্গে কোনও খারাপ ব্যবহার করেননি।’’

শান্তনুর বাড়ি বলাগড়ের বারুইপাড়া গ্রামে। তিনি হুগলি জেলা পরিষদের স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ এবং জেলা তৃণমূলের প্রাক্তন যুব সভাপতি। স্থানীয়দের একাংশ তাঁকে ‘প্রভাবশালী’ বলেই মনে করেন। ইডির আধিকারিকরা যখন শান্তনুর বাড়িতে পৌঁছন, তখন তিনি বাড়িতেই ছিলেন। তল্লাশি শুরুর পর তাঁকে বাড়ির বাইরে দেখা যায়নি। তাঁকে সঙ্গে নিয়েই তল্লাশি অভিযান জারি রেখেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।

শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতিতে উঠে আসছে নতুন নতুন নাম। বেসরকারি কলেজ সংগঠনের নেতা তাপস মণ্ডলই ‘নিয়োগ-দুর্নীতি’তে হুগলির নেতা কুন্তল ঘোষের যোগসাজশের কথা সিবিআইয়ের কাছে জানিয়েছেন বলে দাবি। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের ‘ঘনিষ্ঠ’ তথা নিয়োগ মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত তাপস সিবিআইয়ের কাছে দাবি করেছেন, ৩২৫ জন শিক্ষক পদপ্রার্থীর কাছ থেকে ৩ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা নিয়েছেন কুন্তল। শুধু তা-ই নয়, বাঁকা পথে যুবনেতার কাছে ১৯ কোটি টাকারও বেশি পৌঁছেছে। তাপস সেই সংক্রান্ত কিছু তথ্য-প্রমাণ জমাও দিয়েছেন। যদিও সিবিআই বা কোনও সরকারি সূত্রে ওই দাবির সমর্থন মেলেনি।

শুক্রবার সকাল থেকে কুন্তলের নিউ টাউনের ভাড়া ফ্ল্যাটে ইডি আধিকারিকরা দু’টি দলে ভাগ হয়ে তল্লাশি শুরু করেছেন। সূত্রের খবর, নিউ টাউনের চিনার পার্ক এলাকায় একটি আবাসনের দু’টি ভাড়া ফ্ল্যাটে যুবনেতা থাকেন। একটি সূত্রের দাবি, নিয়োগ দুর্নীতির সূত্র ধরেই শান্তনুর বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়।

রাতে তদন্তকারীরা বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শান্তনু জানান, তিনি কুন্তলকে চেনেন। তাঁরা দু’জনে একসঙ্গে দল করেন বলেও দাবি করেন। শান্তনুর কথায়, ‘‘কুন্তলকে চিনব না কেন? আমার বাড়ি থেকে চার কিলোমিটার দূরেই থাকে কুন্তল। ওঁকে চিনি না বলে কেন মিথ্যে বলতে যাব? কিন্তু তার মানে এই নয় যে, কিছু ঘটে থাকলে তার দায় আমার! আমি কোনও দোষ করিনি। কোনও দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত নই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Teacher Recruitment Scam Case Enforcement Directorate
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE