Advertisement
E-Paper

খুলে দিন স্কুল, শিক্ষকদের আর্জি

শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে ২০ সেপ্টেম্বর রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে দাড়িভিট। সে দিন এক দিকে যেমন গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন স্কুলের দুই প্রাক্তন ছাত্র রাজেশ সরকার ও তাপস বর্মণ, তেমনই স্কুলে ঢুকে সব তছনছ করেছে দুষ্কৃতীরা।

শুভঙ্কর চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৪:০৫
ঘটনার দিনে

ঘটনার দিনে

নভেম্বর থেকে শুরু হবে মাধ্যমিকের টেস্ট। পয়লা অক্টোবর থেকে বিভিন্ন ক্লাসের ইউনিট টেস্ট শুরু হওয়ার কথা। অথচ দাড়িভিট হাইস্কুল কবে খুলবে, তা এখনও কেউ জানেন না। তাই উদ্বিগ্ন শিক্ষকরা এ দিন শরণ নিয়েছেন জেলা শিক্ষা দফতরের। স্কুলের পাঁচ শিক্ষক এ দিন ইসলামপুরের সরকারি বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) প্রবালরঞ্জন সাঁতরার সঙ্গে দেখা করে এই অনুরোধ জানিয়েছেন। পাশাপাশি ইসলামপুরের বিধায়ক কানাইয়ালাল অগ্রবাল এ দিন দারিভিটে গিয়ে গ্রামবাসীদের কাছে স্কুলটি খুলতে সাহায্য করার আর্জি জানান।

শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে ২০ সেপ্টেম্বর রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে দাড়িভিট। সে দিন এক দিকে যেমন গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন স্কুলের দুই প্রাক্তন ছাত্র রাজেশ সরকার ও তাপস বর্মণ, তেমনই স্কুলে ঢুকে সব তছনছ করেছে দুষ্কৃতীরা। স্কুলের প্রধান শিক্ষক অভিজিৎ কুণ্ডু, সহকারী প্রধান শিক্ষক নুরুল হুদার সঙ্গে তার পর থেকে আর যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে সোমবার সকালে স্কুলে গিয়ে দেখা গেল, দরজা খোলা থাকলেও বাকি সব সুনসান। শিক্ষক বা ছাত্রছাত্রী, কেউই এ দিন স্কুলে আসেননি। কিছুক্ষণের মধ্যে দেখা যায়, দরজায় কেউ তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে। কে তালা ঝোলাল, তা-ও এখন অবধি স্পষ্ট নয়। সব মিলিয়ে অনিশ্চিত হয়ে
পড়েছে স্কুলের সতেরোশোর বেশি পড়ুয়ার ভবিষ্যৎ।

এ দিন প্রবালবাবুর সঙ্গে দেখা করে এসে স্কুলের অন্যতম শিক্ষক সুদীপ্তকুমার সিংহ বলেন, ‘‘দ্রুত স্কুল খোলা জরুরি। সে কথাই ওঁকে জানিয়েছি। স্থানীয় বিধায়ককেও অনুরোধ করেছি, ওই ব্যাপারে যেন উদ্যোগী হন।’’ প্রবলবাবু বলেন, ‘‘সমস্যার কথা আমিও বুঝি। তবে চাইলেই তো কাল থেকে ক্লাস শুরু করা সম্ভব নয়। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

স্কুলের এক শিক্ষক জানান, মাধ্যমিক টেস্টের পর একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির টেস্ট পরীক্ষা। এর মধ্যে আবার পুজোর ছুটিও রয়েছে। তাই দ্রুত ক্লাস শুরু না হলে পড়ুয়াদের সঙ্কট বাড়বে। একই সঙ্গে তিনি জানান, যে সব নথি পুড়ে গিয়েছে বা নষ্ট হয়েছে, সেগুলির মধ্যে মাধ্যমিক পরীক্ষা সংক্রান্ত নথিপত্র থেকে শুরু করে প্রাক্তনীদের শংসাপত্রও অবধি থাকতে পারে। থাকতে পারে হিসেবের খাতা, শিক্ষকদের সার্ভিস বুক-সহ বহু গুরুত্বপূর্ণ নথি। সুদীপ্তবাবু বলেন, ‘‘স্কুল না খোলা পর্যন্ত অবশ্য বোঝা যাবে না, কী কী নথি নষ্ট হয়েছে।’’

বিকেলের দিকে কানাইয়ালাল দাড়িভিটে আসেন। সঙ্গে স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য সুবোধ মজুমদার। দারিভিট বাজারে বসে তাঁরা স্থানীয় মানুষদের সঙ্গে কথা বলেন। কানাইয়ালাল তখন গ্রামবাসীদের বলেন, ‘‘স্কুল খুলতে আপনারাও সাহায্য করুন।’’ গ্রামবাসীরা তাতে সায় দিলেও জানিয়ে দেন, ‘বিতর্কিত শিক্ষকদের’ এখন স্কুলের ত্রিসীমানায় আসতে দেওয়া যাবে না। এই ‘বিতর্কিত শিক্ষক’ কারা, তা অবশ্য স্পষ্ট করেননি কানাইয়ালাল। তিনি পরে বলেন, ‘‘আলোচনার মাধ্যমেই মীমাংসার পথ খুঁজতে হবে।’’

পড়ুয়াদের অভিভাবকেরা কিন্তু অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। এক ছাত্রের অভিভাবক শ্রীকান্ত মজুমদার বলেন, ‘‘প্রশাসন আলোচনা করে দ্রুত পড়াশোনা চালু করুক।’’ আর এক অভিভাবক শাজাহান আলির বক্তব্য, ‘‘শিক্ষার্থীদের নির্ভয়ে স্কুলে যাওয়ার জন্য এলাকায় শান্তি ফিরে
আসাটাও জরুরি।’’

Request Teacher School Open
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy