Advertisement
E-Paper

উদ্ধারের পরেও হুমকি ছাত্রীকে

সম্প্রতি সিওয়ান থেকে উদ্ধারের পরে বাড়ি ফিরে পড়শি মনিরুল মোল্লা এবং তার পরিবারের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানালেও পুলিশ অভিযুক্ত পাচারকারীদের গ্রেফতার করেনি। জয়নগর থানা অবশ্য রবিবার জানিয়েছে, মনিরুল পালিয়ে গেলেও তার বাবা সলিল মোল্লাকে এ দিন গ্রেফতার করা হয়েছে।

দীক্ষা ভুঁইয়া

শেষ আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০২:৫২

বছর ষোলোর সাজিদা (নাম পরিবর্তিত) স্কুল যাওয়ার পথে অপহৃত হয়ে বিক্রি হয়ে যায় বিহারের সিওয়ানে। অভিযোগ, সেখানে নাচানোর জন্য মোটা টাকায় তাকে বেচে দিয়েছিল পড়শি এক যুবক এবং তার পরিবার। সম্প্রতি সিওয়ান থেকে উদ্ধারের পরে বাড়ি ফিরে পড়শি মনিরুল মোল্লা এবং তার পরিবারের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানালেও পুলিশ অভিযুক্ত পাচারকারীদের গ্রেফতার করেনি। জয়নগর থানা অবশ্য রবিবার জানিয়েছে, মনিরুল পালিয়ে গেলেও তার বাবা সলিল মোল্লাকে এ দিন গ্রেফতার করা হয়েছে।

অভিযোগ, সাজিদা বাড়ি ফেরার পর থেকে তাকে এবং তার পরিবারকে হুমকি দিয়ে চলেছে অভিযুক্তেরা। বিষয়টি জয়নগর থানায় জানানো হলেও পুলিশ নির্বিকার। এলাকার এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার দ্বারস্থ হয়েছে নাবালিকার পরিবার। সাজিদার পরিবার সূত্রের খবর, মার্চে স্কুল যাওয়ার পথে বছর ষোলোর ওই নাবালিকাকে ডাকে মনিরুলের পরিবার। তার পর থেকে মেয়েটির খোঁজ মিলছিল না। ভ্যানচালক বাবার মেয়ে সাজিদাকে প্রায়ই না-খেয়ে স্কুলে যেতে হতো। পরিবার জানায়, মার্চে যে-দিন সাজিদা স্কুল যাওয়ার জন্য বেরিয়ে নিখোঁজ হয়, সে-দিনও না-খেয়ে বেরিয়েছিল। কিন্তু আর ফেরেনি। সাজিদা ফিরছে না দেখে এ-দিক ও-দিক খোঁজাখুঁজির পরে মেয়ে নিখোঁজ বলে জয়নগর থানায় অভিযোগ দায়ের করে সাজিদার পরিবার। কিন্তু মাসের পর মাস কেটে গেলেও তার খোঁজ মেলেনি।

মাসখানেক আগে অচেনা নম্বর থেকে ফোন করে ওই কিশোরী জানায়, সে আছে বিহারে। তাকে যেন উদ্ধার করা হয়। তখনই ফোনে সাজিদা জনিয়েছিল, পড়শি মনিরুল আর তার পরিবারই তাকে বিহারে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করে দিয়েছে। সাজিদার পরিবার জানাচ্ছে, অনেকে বলেছিল, মনিরুলই মেয়েকে কোথাও নিয়ে গিয়ে বিক্রি করে দিয়েছে। কিন্তু মনিরুলরা তা মানতে চায়নি।

মেয়ের ফোন পেয়ে স্থানীয় এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার দ্বারস্থ হয় সাজিদার পরিবার। বিহারের এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সাহায্য নিয়ে চলতি মাসেই ওই কিশোরীকে উদ্ধার করা হয়।

উদ্ধারের পরে সাজিদা জানায়, তাকে বিক্রি করে দিয়েছিল মনিরুলই। সে বলে, ‘‘সে-দিন মনিরুলের বাড়িতে আমাকে রুটি আর তরকারি খেতে দেয়। অজ্ঞান হয়ে যাই। জ্ঞান ফিরলে জানতে পারি, বিহারে রয়েছি। মোটা টাকায় আমায় বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে।’’ বিহারের যে-স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা সাজিদাকে উদ্ধার করেছে, তারা জানায়, ওখানে নাচার জন্য মেয়েটির উপরে জোরজবরদস্তি করা হতো। রাজি না-হলে ঘরে বন্ধ করে চলত মারধর, অত্যাচার।

অভিযোগ, মেয়ে উদ্ধারের পরে মনিরুলের পরিবার মামলা তুলে নেওয়ার জন্য হুমকি দিতে থাকে। মনিরুল ও তার পরিবারের লোকজন গত মঙ্গলবার কিশোরীর বাড়িতে চড়াও হয় এবং অভিযোগ তুলে নিতে বলে হুমকি দেয়। পুলিশকে পুরো বিষয়টি জানানো সত্ত্বেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। গ্রেফতার হয়নি মূল অভিযুক্ত মনিরুল। ওই কিশোরী আর তার পরিবারের দিন কাটছে আতঙ্কে।

রাজ্যের মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন লীনা গঙ্গোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘মেয়েটি কিংবা তার পরিবার আমাদের বিষয়টি জানালে আমরা পুলিশকে গ্রেফতারের বিষয়ে নির্দেশ দিতে পারি। তখনই জানার চেষ্টা করব, মূল অভিযুক্তকে এখনও গ্রেফতার করা গেল না কেন।’’

Child Trafficking Threat Kidnap Student Teenage Girl সাজিদা
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy