Advertisement
E-Paper

দাক্ষিণ্য নয় ডিএ, সওয়াল কোর্টে

হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি নিশীথা মাত্রে এবং বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চ বৃহস্পতিবার নির্দেশ দিয়েছে, রাজ্য সরকারকে তিন সপ্তাহের মধ্যে হলফনামা দিয়ে জানাতে হবে, তাদের কর্মীদের বকেয়া মহার্ঘ ভাতার পরিমাণ কত।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০১৭ ০৩:০৬

কেন্দ্র এবং পড়শি বিহার, ঝাড়খণ্ড-সহ বেশ কয়েকটি রাজ্য সপ্তম বেতন কমিশনের সুপারিশ মেনে মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) দিচ্ছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ এ ক্ষেত্রে দু’ধাপ পিছনে অর্থাৎ পঞ্চম বেতন কমিশনেই পড়ে আছে বলে কর্মী সংগঠনগুলির অভিযোগ। এই অবস্থায় সরকারি কর্মীদের মহার্ঘ ভাতা ঠিক কত বাকি পড়েছে, তা জানতে চাইল কলকাতা হাইকোর্ট।

হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি নিশীথা মাত্রে এবং বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চ বৃহস্পতিবার নির্দেশ দিয়েছে, রাজ্য সরকারকে তিন সপ্তাহের মধ্যে হলফনামা দিয়ে জানাতে হবে, তাদের কর্মীদের বকেয়া মহার্ঘ ভাতার পরিমাণ কত।

আবেদনকারী কর্মী সংগঠনের পক্ষে এ দিন ডিএ-মামলার শুনানিতে সওয়াল করেন প্রবীণ আইনজীবী সর্দার আমজাদ আলি। তাঁর বক্তব্য, মহার্ঘ ভাতা কোনও ‘দাক্ষিণ্য’ নয়। এটা সরকারি কর্মীদের ‘অধিকার’। ওই ভাতা দেওয়া রাজ্য সরকারের ইচ্ছের উপরে নির্ভর করতে পারে না।

পঞ্চম বেতন কমিশনের (২০০৬) সুপারিশ মেনে পশ্চিমবঙ্গে ডিএ দেওয়া শুরু হয় ২০০৮-এর ১ এপ্রিল। সরকারি কর্মীদের সংগঠন কনফেডারেশন অব স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ এবং ইউনিটি ফোরামের অভিযোগ, যে-হারে ডিএ দেওয়ার কথা, রাজ্য সেই হারে তা দিচ্ছে না। ইতিমধ্যে আরও দু’টি বেতন কমিশন সুপারিশ পেশ করেছে। সংগঠনের দাবি, কেন্দ্র ২০১৬-র জানুয়ারি থেকে সপ্তম বেতন কমিশনের সুপারিশ রূপায়ণ করেছে। ওই কমিশনের সুপারিশ মেনে সেই সময় থেকেই ডিএ দিচ্ছে অসম, বিহার, ঝাড়খণ্ড, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ, গুজরাত, ছত্তীসগঢ়, হরিয়ানা-সহ বহু রাজ্য। কিন্তু এ রাজ্য পঞ্চম বেতন কমিশনের বেঁধে দেওয়া হারেই ডিএ মেটাচ্ছে না।

কনফেডারেশন অব স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজের সম্পাদক মলয় মুখোপাধ্যায় জানান, ২০১৬-র নভেম্বর পর্যন্ত ৫০ শতাংশ ডিএ বাকি ছিল। গত জানুয়ারিতে রাজ্য সরকার বাকি মহার্ঘ ভাতার ১০ শতাংশ মেটানোর কথা বলেছিল। কিন্তু ২০১৬-র ১ জানুয়ারি পর্যন্ত বকেয়া থাকা ৪০ শতাংশ ডিএ কবে কী ভাবে মেটানো হবে, সেটা তারা জানায়নি।

প্রশাসনের কাছে আবেদন-নিবেদন সত্ত্বেও সরকার পুরো ডিএ না-মেটানোয় ২০১৬-র নভেম্বরে রাজ্য প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল (স্যাট)-এ মামলা করে কর্মী সংগঠন। তার শুনানি হয় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি। স্যাটের বিচারপতি অমিত তালুকদারের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, ডিএ-র বিষয়টি সরকারের ইচ্ছের উপরেই নির্ভরশীল। স্যাটের সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে চলতি বছরের ১৫ মার্চ হাইকোর্টে আবেদন করে জোড়া কর্মী সংগঠন।

কর্মী সংগঠনের কৌঁসুলি আমজাদ দাবি করেন, পঞ্চম বেতন কমিশনের সুপারিশ মেনে ২০০৮-এর ১ এপ্রিল থেকে এ রাজ্যে ডিএ দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু ২০১০ থেকে কয়েক কিস্তিতে বকেয়া ডিএ মেটানোর কথা থাকলেও তা মেটানো হচ্ছে না। ২০১৩-র ১ জানুয়ারি থেকে ডিএ দেওয়া কার্যত বন্ধ রেখেছে রাজ্য। কখনও বকেয়া টাকার ছয় শতাংশ, কখনও বা ১০ শতাংশ মেটানো হচ্ছে। কর্মী সংগঠনের আর্জি জানান, অবিলম্বে বকেয়া টাকা মেটানোর জন্য রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিক আদালত।

গভর্নমেন্ট প্লিডার (জিপি) জয়তোষ মজুমদার অবশ্য তাঁর সওয়ালে দাবি করেন, এই মামলা ধোপে টেকে না। কারণ, রাজ্য সরকার মহার্ঘ ভাতা দিচ্ছে। এই সংক্রান্ত কিছু হিসেবপত্রও পেশ করেন তিনি।

মামলাটি গ্রহণ করে ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, ১০ অগস্ট ফের শুনানি হবে। সরকার হলফনামা দেওয়ার পরে মামলার আবেদনকারীরা তার এক সপ্তাহের মধ্যে সেই হলফনামার ব্যাপারে নিজেদের বক্তব্য জানাবেন।

Dearness allowance Calcutta High Court Government Employee মহার্ঘ ভাতা
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy