দীর্ঘ গরমের ছুটিতে স্কুলে ক্লাস হচ্ছে না। অনেক স্কুলে বিষয়ভিত্তিক শিক্ষকেরও অভাব রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনায় যাতে ব্যাঘাত না ঘটে, তার জন্য দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের তৃতীয় সিমেস্টারের পড়াশোনা ইউটিউবের মাধ্যমে শুরু করল উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। সংসদের সচিব প্রিয়দর্শিনী মল্লিক বলেন, ‘‘ইউটিউবের মাধ্যমে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের পড়াশোনা বছরের প্রথম থেকেই চলছে। এ বার তৃতীয় সিমেস্টারের পড়াও সেই পদ্ধতিতে শুরু করা হল। দীর্ঘ গরমের ছুটি ছাড়াও বিভিন্ন কারণে স্কুল ছুটি থাকছে। অথচ, আগামী সেপ্টেম্বরেই তৃতীয় সিমেস্টারের পরীক্ষা। পড়ুয়াদের হাতে সময় বেশি নেই। ছুটির কারণে তাদের যাতে সময় নষ্ট না হয়, সে কথা ভেবেই ইউটিউবে পড়াশোনার এই ব্যবস্থা।’’
প্রসঙ্গত, তৃতীয় এবং চতুর্থ সিমেস্টারের পরীক্ষার মূল্যায়ন মিলিয়ে আগামী বছরের উচ্চ মাধ্যমিকের সার্বিক মূল্যায়ন হবে। তাই তৃতীয় সিমেস্টার যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। পড়ুয়া এবং অভিভাবকদের একাংশের মতে, গৃহশিক্ষকের কাছে পড়া অথবা কোচিং ক্লাসে গিয়ে টিউশন নেওয়ার মতো আর্থিক ক্ষমতা অনেকের নেই। ফলে, তাদের ক্ষেত্রে নিজে পড়া ছাড়া উপায় থাকছে না।
উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের কর্তাদের মতে, টিউশন না নিয়েও যাতে পড়ুয়ারা ভাল করতে পারে, মূলত সেই উদ্দেশ্যেই ইউটিউবের মাধ্যমে পড়ানোর এই ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। তাঁদের মতে, এখন প্রায় সকলেরই বাড়িতে স্মার্টফোন আছে। সামান্য কিছু টাকায় রিচার্জ করলেই ইউটিউব চ্যানেল দেখা যায়। উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে ৬৩টি বিষয়ের ক্ষেত্রে প্রথম থেকে তৃতীয় সিমেস্টারের ক্লাস হচ্ছে ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে। প্রতিটি বিষয়ের বিশেষজ্ঞ শিক্ষক-শিক্ষিকারা এই ক্লাস নিচ্ছেন।
সংসদ-সচিব জানান, প্রতিটি বিষয়কে তিনটি মডিউলে ভাগ করা হয়েছে। তৃতীয় সিমেস্টারে যে হেতু সব প্রশ্নই হবে মাল্টিপল চয়েস-ভিত্তিক (এমসিকিউ), তাই সম্ভাব্য প্রশ্ন কেমন হতে পারে, কোন কোন অধ্যায়ের উপরে বিশেষ ভাবে জোর দিতে হবে— সে সবই ইউটিউবের মাধ্যমে বোঝানো হচ্ছে পড়ুয়াদের। ক্লাস চলাকালীন কোনও পড়ুয়ার মনে কোনও প্রশ্ন জাগলে সে মেসেজ করে সেটি জানাচ্ছে। দ্রুত চলে আসছে সেই প্রশ্নের উত্তর।
এ দিকে, দ্বাদশ শ্রেণির অধিকাংশ পড়ুয়া এখনও তৃতীয় সিমেস্টারের বাংলা বই পায়নি। বিষয়টি নিয়ে পড়ুয়া এবং অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভ দানা বেঁধেছে। যদিও সংসদ-কর্তাদের দাবি, গরমের ছুটির পরে স্কুল খুললেই বাংলা বই পেয়ে যাবে ছাত্রছাত্রীরা। কিছু স্কুল ইতিমধ্যে জেলা স্কুল পরিদর্শকের অফিস থেকে বাংলা বই সংগ্রহ করে সেগুলি পড়ুয়াদের দিয়েছে। সংসদের কর্তাদের দাবি, এখনও যারা বাংলা বই পায়নি, তারা ইউটিউবের মাধ্যমে বাংলার ক্লাস করলে কিছুটা হলেও উপকৃত হবে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)