আমানতকারীদের কাছ থেকে টাকা লোপাট। ব্যাঙ্কঋণ বাবদ নেওয়া ৩০০ কোটি টাকারও খোঁজ নেই।
তছরুপে অভিযুক্ত সারদা, এমপিএস-সহ বিভিন্ন লগ্নি সংস্থার মতো পিনকন গোষ্ঠীরও সম্পত্তি বেচে আমানতকারীদের টাকা ফেরত দেওয়ার কথা ভাবা হয়েছিল। কিন্তু সেই পরিকল্পনা ভেস্তে যেতে বসেছে। কেননা পিনকন-মালিকের প্রায় ১০০ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হলেও তা ব্যাঙ্কের কাছে গচ্ছিত রয়েছে বলে জানাচ্ছেন রাজ্য আর্থিক দমন শাখার তদন্তকারীরা।
এই অবস্থায় ওই সম্পত্তি বিক্রি করে টাকা ফেরত দেওয়ার সুযোগ আর থাকছে না বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। তাদের প্রশ্ন, যে-সম্পত্তি আর মালিকের হাতেই নেই, তা বিক্রি করা হবে কী ভাবে?
তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, ১০০ কোটি টাকার ওই সম্পত্তি গচ্ছিত রেখে পিনকন-কর্তা মনোরঞ্জন রায় বিভিন্ন ব্যাঙ্ক থেকে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছেন। কিন্তু সেই ৩০০ কোটি টাকারও হদিস মিলছে না। রাজ্য আর্থিক অপরাধ দমন শাখার এক কর্তার কথায়, বেআইনি লগ্নি সংস্থা পিনকন আমানতকারীদের কাছ থেকে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা তুলেছে বলে প্রাথমিক ভাবে হিসেব। সব মিলিয়ে প্রায় ৭০০ কোটি টাকার হিসেব নেই। আমানতকারীদের টাকা ফেরানো দূরের কথা, ১০০ কোটি টাকার সম্পত্তি দিয়ে তো ব্যাঙ্কের ঋণই পুরোপুরি শোধ করা যাবে না।
নভেম্বরে পিনকনের মালিক মনোরঞ্জন এবং অন্য তিন কর্তাকে বেঙ্গালুরু থেকে গ্রেফতার করে রাজস্থান পুলিশের জয়পুর স্পেশ্যাল অপারেশন গ্রপ। ফেব্রুয়ারিতে পূর্ব মেদিনীপুরের খেজুরি থানায় মামলা করেন এক আমানতকারী। সেই যোগসূত্র ধরে রাজস্থান পুলিশের হেফাজত থেকে মনোরঞ্জনকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে রাজ্য আর্থিক অপরাধ দমন শাখা। তাঁর স্ত্রী মৌসুমীকেও গ্রেফতার করা হয়েছে।
তদন্তকারীদের দাবি, মনোরঞ্জনের চারটি কারখানা, মদের গুদাম, হোটেল-সহ প্রায় ১০০ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। কিন্তু প্রাপ্ত তথ্য খতিয়ে দেখে জানা গিয়েছে, ওই সব সম্পত্তিই ব্যাঙ্কে বন্ধক রয়েছে। মনোরঞ্জনকে গ্রেফতার করার পরে জয়পুর স্পেশ্যাল ব্রাঞ্চের অফিসারেরা পিনকন লগ্নি সংস্থা ও পিনকন স্পিরিট কোম্পানির ১২৭টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সিল করে দেন। তার পরে রাজ্য আর্থিক অপরাধ দমন শাখার তরফেও ওই সব অ্যাকাউন্ট সিল করার আবেদন জানানো হয়েছে।
তদন্তকারী সংস্থার এক কর্তা জানান, বাজেয়াপ্ত সম্পত্তি বেচে আমানতকারীদের টাকা ফেরানোর পরিকল্পনা করা হয়েছিল। কিন্তু তদন্তে দেখা যাচ্ছে, ওই সব সম্পত্তি বন্ধক রয়েছে। ব্যাঙ্কের কাছে গচ্ছিত রয়েছে মনোরঞ্জনের বাঘা যতীনের দু’টি বাড়িও। পিনকনের ১২টি মদের দোকান বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। সেগুলো লিজ নিয়ে চালানো হচ্ছিল।
রাজস্থান পুলিশের কর্তাদের দাবি, আমানতকারীদের থেকে প্রায় ১৬০০ কোটি টাকা তুলেছে পিনকন। জয়পুর স্পেশ্যাল ব্রাঞ্চের তদন্তকারীদের অভিযোগ, মনোরঞ্জন-সহ একটি ‘গুপ্তচক্র’ আমানতকারীদের টাকা লোপাট করেছে। রাজ্য আর্থিক অপরাধ দমন শাখার এক তদন্তকারী জানান, এ রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় পিনকনের বিরুদ্ধে ১২টি মামলা হয়েছে। ওই সব মামলায় হেফাজতে নিয়ে জেরা করা হবে মনোরঞ্জনকে। কোটি কোটি টাকা কোথায় পাচার করা হয়েছে, তা জানার চেষ্টা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy