Advertisement
E-Paper

নজর দুই ভোটে, ভাঙা হল শিল্পাঞ্চলের কমিটি

পুরভোট মাস কয়েক পরেই। তার কিছু দিনের মধ্যেই আবার বিধানসভা ভোট। আসানসোল শিল্পাঞ্চলে গত বছর লোকসভা ভোটে মুখ থুবড়ে পড়ার পরে এখন এই দুই ভোট-বৈতরণী নির্বিঘ্নে পেরোনো বড় চ্যালেঞ্জ তৃণমূলের কাছে। সে দিকে নজর রেখে জেলা (শিল্পাঞ্চল) কমিটিতে বড় রদবদল করলেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ জুন ২০১৫ ০২:৪৩

পুরভোট মাস কয়েক পরেই। তার কিছু দিনের মধ্যেই আবার বিধানসভা ভোট। আসানসোল শিল্পাঞ্চলে গত বছর লোকসভা ভোটে মুখ থুবড়ে পড়ার পরে এখন এই দুই ভোট-বৈতরণী নির্বিঘ্নে পেরোনো বড় চ্যালেঞ্জ তৃণমূলের কাছে। সে দিকে নজর রেখে জেলা (শিল্পাঞ্চল) কমিটিতে বড় রদবদল করলেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই কমিটি ভেঙে তৈরি করা হয়েছে আসানসোল ও দুর্গাপুরের জন্য দু’টি আলাদা সাংগঠনিক জেলা (শিল্পাঞ্চল) কমিটি।

শনিবার দলের সাংসদ, মন্ত্রী, জেলা সভাপতি ও শাখা সংগঠনগুলির প্রধানদের নিয়ে কালীঘাটের বাড়িতে বৈঠক করেন মমতা। সেখানেই রাজ্যের নানা এলাকায় সাংগঠনিক রদবদলের সঙ্গে এই বর্ধমানের শিল্পাঞ্চলের জন্যও এই বদল আনা হয়। দুর্গাপুরের সভাপতি করা হয়েছে আগের জেলা (শিল্পাঞ্চল) কমিটির সভাপতি অপূর্ব মুখোপাধ্যায়কে। আসানসোলের সভাপতি হয়েছেন গত জেলা (শিল্পাঞ্চল) কমিটির কর্যকরী সভাপতি ভি শিবদাসনকে। তৃণমূল সূত্রের খবর, শীর্ষ নেতৃত্ব যত দ্রুত সম্ভব কমিটির সদস্য তালিকা তৈরি করতে বলেছেন। ভি শিবদাসন জানান, সদস্য তালিকা তৈরি করে তিনি মঙ্গলবার দলনেত্রীর সঙ্গে দেখা করবেন। তার পরেই চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে।

জেলা (শিল্পাঞ্চল) কমিটি ভেঙে দেওয়া হল কেন? রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী তথা আসানসোল উত্তরের তৃণমূল বিধায়ক মলয় ঘটকের দাবি, দুর্গাপুর থেকে আসানসোলে দলের সংগঠন পরিচালনায় খামতি থেকে যাচ্ছিল। তা মেটাতেই এই পৃথক কমিটি তৈরি হয়েছে। মলয়বাবু বলেন, ‘‘দলনেত্রী যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তার ফল ভালই হবে।’’ এর ফলে পুরসভা ও বিধানসভা— দুই ভোটেই আসানসোলে দল কিস্তিমাত করবে বলে দাবি মলয়বাবুর।

মন্ত্রী এ কথা বললেও তৃণমূলের নানা সূত্রের খবর, কমিটি ভাঙার পিছনে রয়েছে অন্য কারণও। দলের নিচুতলার কর্মীদের একাংশের দাবি, আসানসোলের সাংগঠনিক বিষয়ে অহেতুক হস্তক্ষেপ করছিলেন শিল্পাঞ্চল কমিটির সভাপতি অপূর্ববাবু। এমনকী, আসানসোলের নেতা-কর্মীদের উপরে প্রাধান্যও কায়েম করতে চাইছিলেন তিনি। যার ফলে নানা জায়গায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্বও মাথাচাড়া দেয়। যদিও এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন অপূর্ববাবু। তিনি বলেন, ‘‘কে কী বলছেন জানি না। তবে সামনে পুরভোট। সংগঠনকে আরও মজবুত করার জন্যই এই কমিটি বিভাজন।’’ তবে তাঁর সংযোজন, ‘‘আসানসোলের উপরে দুর্গাপুরের প্রাধান্য আগেও ছিল, ভবিষ্যতেও থাকবে।’’

গত লোকসভা ভোটে আসানসোলে প্রায় ষাট হাজার ভোটে বিজেপির কাছে হারে তৃণমূল। সেই ভোটের ফল অনুযায়ী, আসানসোল, কুলটি ও রানিগঞ্জ পুরসভায় পিছিয়ে রয়েছে তৃণমূল। এই লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত সাতটি বিধানসভা আসনের পাঁচটিতেও তাদের থেকে এগিয়ে বিজেপি। মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়ার পরেও সংযুক্তিকরণের জন্য আসানসোল, কুলটি, রানিগঞ্জ ও জামুড়িয়া পুরসভায় ভোট আটকে রয়েছে। মাস কয়েক পরেই সেই ভোট হবে বলে খবর।

এই পরিস্থিতিতে শিল্পাঞ্চলে দলের সাংগঠনিক রদবদল প্রত্যাশিতই ছিল বলে মনে করছেন তৃণমূলের অনেকে। তাঁদের দাবি, ওই সব ভোটে দলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব দূরে রাখতেই ভি শিবদাসনকে বেছে নেওয়া হয়েছে। দলের নেতা-কর্মীদের একাংশের মতে, এই এলাকায় দলের কোন্দল নিয়ে বিশদ তথ্য রয়েছে উচ্চ নেতৃত্বের কাছে। শিবদাসন তার ঊর্ধ্বে উঠে কাজ করতে পারবেন, এই ভরসাতেই তাঁকে বেছে নেওয়া হয়েছে।

দলের কোন্দল নিয়ে আবার ভিন্ন মত ভি শিবদাসন ও মন্ত্রী মলয়বাবুর। মন্ত্রীর বক্তব্য, ‘‘সেই অর্থে এই অঞ্চলে আমাদের দলে গোষ্ঠীকোন্দল নেই। অনৈক্যও নেই। যেটুকু রয়েছে তা নগণ্য। কোনও নেতার প্ররোচনায় কোন্দল হয় না।’’ কিন্তু শিবদাসন বলেন, ‘‘শিল্পাঞ্চলের সংগঠনকে মজবুত করতে হলে প্রথমেই গোষ্ঠিবাজি হঠাতে হবে। আমি কড়া হাতে সেই কাজটি করব।’ পুরভোটের আগে দলকে শক্তিশালী করতে সব রকম পদক্ষেপ করা হবে, দাবি তাঁর।

Mamata Bandopadhyay trinamool tmc asansol municipal election poll vote
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy