Advertisement
০৫ মে ২০২৪

শৌচাগার পেলাম না, তার আগেই এসে হাজির মুখ্যমন্ত্রীর শুভেচ্ছা!  

এখনও তাঁদের অনেককে প্রকৃতির ডাকে মাঠে-ঘাটে যেতে হয়। কারও ভরসা খাটা পায়খানা। এখনও বাড়িতে শৌচাগার হয়নি। তবু বাড়ি বাড়ি পৌঁছে গিয়েছে শৌচাগারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শুভেচ্ছা-বার্তা!

শুভেচ্ছাপত্র নিয়ে বিডিওর কাছে গ্রামবাসীরা (নীচে)। নিজস্ব চিত্র

শুভেচ্ছাপত্র নিয়ে বিডিওর কাছে গ্রামবাসীরা (নীচে)। নিজস্ব চিত্র

সুব্রত জানা
উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০১৯ ০১:৩৮
Share: Save:

এখনও তাঁদের অনেককে প্রকৃতির ডাকে মাঠে-ঘাটে যেতে হয়। কারও ভরসা খাটা পায়খানা। এখনও বাড়িতে শৌচাগার হয়নি। তবু বাড়ি বাড়ি পৌঁছে গিয়েছে শৌচাগারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শুভেচ্ছা-বার্তা!

শনিবার দুপুরে মুখ্যমন্ত্রীর সই সংবলিত ওই চিঠি পান উলুবেড়িয়া-১ ব্লকের হাটগাছা-২ পঞ্চায়েতের ১৭০ ও ১৭২ নম্বর বুথের বেশ কয়েকটি পরিবার। যাতে লেখা ‘পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের মাধ্যমে আপনার গ্রামকে নির্মল করে তোলার লক্ষ্যে আপনার বাড়িতে পারিবারিক শৌচাগার তৈরির জন্য সাহায্য প্রদান করতে পেরে আনন্দিত...’।

বাড়িতে শৌচাগার নেই, অথচ শৌচাগারের জন্য ওই চিঠি পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ওই সব পরিবারের লোকজন। তাঁরা পঞ্চায়েত অফিসে গিয়েও বিক্ষোভ দেখান। পঞ্চায়েত প্রধান প্রদীপ পাল অবশ্য ভুল স্বীকার করে নিয়েছেন। তিনি জানান, উত্তরে প্রধান প্রদীপ পাল বলেন শৌচাগারের জন্য সার্ভে করার দায়িত্ব ও শৌচাগার তৈরির দায়িত্ব একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে দেওয়া হয়েছিল। তারা যে সব বাড়িতে সমীক্ষা করে, তার সব ক’টিতে শৌচাগার হয়নি। অথচ, সব উপভোক্তার নাম পঞ্চায়েত দফতরে পাঠানো হয়ে গিয়েছিল।

আরও পড়ুন: আজ-হারেও সব ‘দোষ’ নেহরুর! মাসুদ নিয়ে বিজেপি-কংগ্রেসের নতুন বিতর্কের চিত্রনাট্য

প্রদীপবাবু বলেন, ‘‘গত বৃহস্পতিবার ব্লক অফিস থেকে প্রায় পনেরো হাজার ওই শুভেচ্ছা-বার্তার চিঠি আসে। তিন দিনের মধ্যে বিলিরও নির্দেশ আসে। তাই তাড়াহুড়োয় বাছাই না-করেই পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাতেই ভুল হয়েছে। তবে, ওই সব পরিবারেও ধাপে ধাপে শৌচাগার করে দেওয়া হবে।’’ বিডিও কার্তিকচন্দ্র রায় জানান, পঞ্চায়েতের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টির তদন্ত করা হবে।

২০০৭ সালে হাটগাছা-২ পঞ্চায়েত ‘নির্মল গ্রাম’ পুরস্কার পায়। তবু এখনও গ্রামে বহু খাটা পায়খানা রয়েছে। গ্রামবাসীদের অনেকে মাঠেঘাটেও যান। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন আমতলা গ্রামের বৃদ্ধ পরীক্ষিৎ মণ্ডলও। তিনি বলেন, ‘‘শৌচাগারের জন্য বহুবার পঞ্চায়েতকে জানিয়েছি। কিন্তু না-হওয়ায় মাঠে যেতে হয়। শনিবার মুখ্যমন্ত্রী চিঠি পেয়ে অবাক হয়ে গিয়েছি। শৌচাগার পেলাম না, পেলাম শুভেচ্ছা!’’ একই সুরে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ওই গ্রামের বেচুরাম মণ্ডল, তৃষাণপদ বাছাড়ের মতো কয়েকজনও। পঞ্চায়েতের বিজেপি সদস্য অশোক হালদারের কটাক্ষ, ‘‘এই সরকারের আমলে ভুতুড়ে কাণ্ডও হচ্ছে।’’

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

শুধু ওই পঞ্চায়েত নয়, গোটা হাওড়া জেলাই এখন খাতায়-কলমে ‘নির্মল’। তা সত্ত্বেও কেন হাটগাছা-২ পঞ্চায়েত এলাকার মানুষকে মাঠে যেতে হচ্ছে? বিডিও-র দাবি, ‘‘সমীক্ষা অনুযায়ী সেই আমলে শৌচাগার করে দেওয়া হয়েছিল। তার পরে পরিবার বেড়েছে। এখনকার সমীক্ষা অনুযায়ী কাজ হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE