Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
Viral fever

Fever: জ্বরে তিন শিশুর মৃত্যু উত্তরবঙ্গে

সরকারি ভাবে মৃত্যুর কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, ফুসফুসে সংক্রমণ বা হৃদ্‌যন্ত্রে সমস্যার কথা। তাতে জ্বরের উল্লেখ নেই বলেই দাবি।

জ্বরে কাহিল শিশু কোলে এক অভিভাবক। ছবি: সন্দীপ পাল

জ্বরে কাহিল শিশু কোলে এক অভিভাবক। ছবি: সন্দীপ পাল

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি ও শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৫:১৬
Share: Save:

গত কয়েক দিন ধরেই শিশুদের মধ্যে জ্বরের প্রকোপ চলছিল। সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত কয়েক ঘণ্টার মধ্যে মৃত্যু হল তিন শিশুর। এক জন কোচবিহারের মেখলিগঞ্জের বাসিন্দা, এক জন জলপাইগুড়ি জেলার ময়নাগুড়ির এবং এক জন জলপাইগুড়ি সদরের। সরকারি ভাবে মৃত্যুর কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, ফুসফুসে সংক্রমণ বা হৃদ্‌যন্ত্রে সমস্যার কথা। তাতে জ্বরের উল্লেখ নেই বলেই দাবি। কিন্তু চিকিৎসকদের একাংশের তরফে বলা হচ্ছে, শিশুদের মধ্যে নতুন সংক্রমণের প্রকোপ দেখা যাচ্ছে। যা করোনা রোগীদের সংস্পর্শে এলে হতে পারে। তাঁরা জানাচ্ছেন, এখনও জলপাইগুড়ির বিভিন্ন হাসপাতাল এবং উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল মিলিয়ে জ্বরে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা দেড়শোর বেশি।
মঙ্গলবার ভোরে জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে মেখলিগঞ্জের বাসিন্দা, ৬ বছরের শিশু কাবেরী রায়ের। দুপুরে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে মৃত্যু হয়েছে জলপাইগুড়ির রাজাডাঙার বাসিন্দা ৯ মাসের শিশু নুরসাদ আলির। এর আগে সোমবার রাতেই ময়নাগুড়ির বেতগাড়া নিউ কলোনির বাসিন্দা ৭ মাসের শিশুকন্যা মৃত্তিকা রায়ের মৃত্যু হয়েছে। যদিও এই মৃত্যু সম্পর্কে সরকারি ভাবে এখনও কিছু জানানো হয়নি। মৃত্তিকার বাবা প্রহ্লাদ রায় বলেছেন, “দু'দিন ধরে সর্দি-জ্বরে ভুগছিল মেয়ে। সোমবার রাতে ময়নাগুড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা মেয়েকে মৃত ঘোষণা করেছেন।’’

মঙ্গলবার ভোরে জলপাইগুড়ি হাসপাতালে মৃত্যু হয় মেখলিগঞ্জের কাবেরীর। হাসপাতালের দাবি, শিশুটির নিউমোনিয়ার উপসর্গ ছিল। হাসপাতাল সূত্রের খবর, সোমবার রাতেই ডেঙ্গি, জাপানি এনসেফ্যালাইটিস, চিকনগুনিয়া, ইনফ্লুয়েঞ্জা পরীক্ষা করতে কাবেরীর রক্ত-সহ নানা নমুনা সংগ্রহ করে ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়। তার পরে ২৪ ঘণ্টা কাটলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, রিপোর্ট আসেনি। এত ক্ষণেও রিপোর্ট না-আসা যথেষ্ট বিরল বলে দাবি চিকিৎসকদের।

কাবেরীর বাবা কামিনী রায় জানান, রবিবার রাতে মেখলিগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি করানো হলে তাঁর সন্তানকে জলপাইগুড়িতে রেফার করা হয়। রাতে অ্যাম্বুল্যান্সের ভাড়ার টাকা জোগাড় করতে পারেননি বলে দাবি তাঁর। সোমবার বিকেলে কাবেরীকে জলপাইগুড়িতে আনা হয়। তাঁর দাবি, “হাসপাতাল থেকে মৃত্যুর খবর জানানোর পরে বলা হয়, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মেয়ের দেহ নিয়ে যেতে হবে।” জনস্বাস্থ্য মোকাবিলায় উত্তরবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক সুশান্ত রায় বলেন, ‘‘বাচ্চাটির হৃদ্‌যন্ত্রে ফুটো ছিল। ফুসফুসেও জল ছিল। প্রয়োজনীয় চিকিৎসার সুযোগই পাননি চিকিৎসকেরা।’’ হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার রাহুল ভৌমিক বলেন, ‘‘বাচ্চাটিকে খুবই আশঙ্কাজনক অবস্থায় আনা হয়েছিল।’’

অন্য দিকে, মেডিক্যাল কলেজেও শিশু মৃত্যুর কারণ হিসেবে হৃদ্‌যন্ত্রের সমস্যাকে দায়ী করা হয়েছে। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের সুপার সঞ্জয় মল্লিক বলেন, “শিশুটি পিকু ওয়ার্ডে ভর্তি ছিল। কনজিনেটাল হার্ট ডিজ়িজ় ছিল।’’ মৃত্যুর সার্টিফিকেটে ‘পালমোনারি শক’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Viral fever Children Hospital
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE