ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানে যুক্ত হল পশ্চিম মেদিনীপুরের আরও তিনটি ব্লক। কেশপুর এবং চন্দ্রকোনা ১ ও ২ ব্লককে প্রকল্পে যুক্ত করার কথা বুধবার বিধানসভায় জানালেন সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া। ঘাটাল পুরসভা, ঘাটাল গ্রামীণ, দাসপুর ১ ও ২, ডেবরা, পাঁশকুড়া পশ্চিম, তমলুক-১, পাঁশকুড়া পুরসভা আগেই মাস্টার প্ল্যানের অংশ ছিল। এ বার আরও তিনটি ব্লককে যুক্ত করা হল মাস্টার প্ল্যানে। কিন্তু জমি-জট দেখা দেওয়ায় প্রকল্পের বাস্তবায়ণ নিয়েই আশঙ্কা তৈরি হয়েছে বিভিন্ন মহলে।
বাজেটে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের জন্য ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে রাজ্য সরকার। এর পরেই প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, যদি জমি প্রয়োজন হয়, তা হলে বাজারমূল্যের থেকে বেশি দামে জমি কিনবে কেনা হবে। জমির জন্য দেড়-দু’গুণ বেশি দাম দেওয়া হতে পারে বলেও খবর জেলা প্রশাসন সূত্রে। কিন্তু তাতে মন গলল না দাসপুরবাসীর। তাঁদের অভিযোগ, ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানে দাসপুরের চন্দ্রেশ্বর খাল খনন করে দাসপুরকে বন্যাকবলিত করার পরিকল্পনা চলছে। শুধু মাত্র ঘাটালকে বাঁচানোর জন্য দাসপুরকে ডোবানোর চক্রান্ত হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারি ‘মহামিছিলের’ ডাক দিয়েছে চন্দ্রেশ্বর নদীখনন প্রতিবাদ কমিটি। সেই মর্মে বুধবার দাসপুরের নানা জায়গায় পোস্টারও সাঁটানো হয়েছে।
চন্দ্রেশ্বর নদী খনন প্রতিবাদী কমিটির সম্পাদক হরেকৃষ্ণ জানা বলেন, ‘‘দাসপুর ১ ও ২ নম্বর ব্লকের জল নিকাশির নালাকে খনন করে করতে চাইছে। ঘাটালকে বাঁচাতে গিয়ে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হবে দাসপুর এলাকায়। চাষ জমি শুধু নয়, ঘরবাড়ি ও জমি সব যাবে! যা দেওয়া সম্ভব নয়। সেই জন্য গ্রামবাসীরা একজোট হয়েছি। পাড়ায় বৈঠক চলছে। মাইকিং করা হবে। ২৫ ফেব্রুয়ারি মহামিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছে।’’ কমিটির সভাপতি রবীন্দ্রনাথ বেরা বলেন, ‘‘ঘাটালকে বাঁচানোর জন্য যে ষড়যন্ত্র চলছে, তা মানব না। শুনছি চন্দ্রেশ্বর খালকে খনন করে নদী করা হবে, যা আগের কোনও রিপোর্টে উল্লেখ নেই।’’
সিঙ্গুর আন্দোলনকে হাতিয়ার করে ২০১১ সালে রাজ্যে ক্ষমতায় এসেছিল তৃণমূল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হন। ক্ষমতায় আসার পর নিজস্ব জমি নীতি তৈরি করে তাঁর সরকার। সেই নীতি অনুযায়ী জোর করে জমি অধিগ্রহণ করা যাবে না। এ ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার কী করবে, তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে জল্পনা তৈরি হয়েছে। গত রবিবার ঘাটালে জেলা স্তরের মনিটরিং কমিটির বৈঠকে দেব বলেছিলেন, ‘‘এখানে সকলকে জোটবদ্ধ হতে হবে। হাতজোড় করে অনুরোধ করব, জমি অধিগ্রহণ নিয়ে কেউ কাউকে ভুল বোঝাবেন না। রাজনৈতিক চিন্তাভাবনা অন্য হতেই পারে, কিন্তু এই উদ্যোগটা ঘাটালের মানুষের জন্য। জমি যদি প্রয়োজন হয়, তা হলে ন্যায্য দাম দেওয়ার চেষ্টা করব।’’