Advertisement
E-Paper

ছাপ কার,বাঘ-ভয় সারেঙ্গায়

ডিএফও (বাঁকুড়া দক্ষিণ) দেবাশিসমহিমা প্রসাদ প্রধান বলেন, “জঙ্গলে যে পায়ের ছাপগুলি এ দিন দেখা গিয়েছে সেগুলি বাঘের কি না তা আমরা নিশ্চিত নই। ওই ছাপগুলি খুব স্পষ্ট নয়।’’

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০১৮ ০১:২৪
এই পায়ের ছাপেই ছড়িয়েছে আতঙ্ক। নিজস্ব চিত্র

এই পায়ের ছাপেই ছড়িয়েছে আতঙ্ক। নিজস্ব চিত্র

লালগড়ের রয়্যাল বেঙ্গল রহস্য এখনও খাঁচায় বন্দি হয়নি। পশ্চিম মেদিনীপুরের বিভিন্ন জায়গায় বাঘমামা পায়ের ছাপ রেখে যাচ্ছে বলে গুঞ্জন ছড়াচ্ছে। রবিবার ছুটির দিনের সেই গুঞ্জনের রেশ এসে পড়ল লাগোয়া সারেঙ্গার নেকড়াতাপল জঙ্গলে। যদিও ওই ছাপ কার তা নিশ্চিত ভাবে জানাতে পারেনি বন দফতর। কিন্তু বাসিন্দাদের দাবি, ওই ছাপ বাঘের না হয়ে যায় না। সাবধানের মার নেই, এই ভেবে এলাকার জঙ্গলের মাথায় ড্রোন উড়িয়ে বাঘের খোঁজে তল্লাশি চালাল জেলা পুলিশ ও বন দফতর।

ডিএফও (বাঁকুড়া দক্ষিণ) দেবাশিসমহিমা প্রসাদ প্রধান বলেন, “জঙ্গলে যে পায়ের ছাপগুলি এ দিন দেখা গিয়েছে সেগুলি বাঘের কি না তা আমরা নিশ্চিত নই। ওই ছাপগুলি খুব স্পষ্ট নয়। কতদিন আগের ছাপ, তাও কেউ স্পষ্ট করে জানাতে পারছেন না। সে কারণে পরীক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না। এ ছাড়া এলাকায় বাঘের গতিবিধিরও খবর নেই।’’ তবে বন দফতর এলাকাবাসীকে সতর্ক থাকতে বলেছে।

বস্তুত, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রামের মতো বাঁকুড়ার জঙ্গল লাগোয়া এলাকায় ‘বাঘ বেড়িয়েছে’ বলে গুজব ছড়িয়েছিল কয়েক মাস আগেই। এর মধ্যে বেশ কিছু পায়ের ছাপ বন দফতর পরীক্ষা করিয়ে সেগুলি হায়নার বলে দাবি করেছে। মাঝে মধ্যেই হায়না লোকালয়ের কাছে চলে আসে বলে তখন এ নিয়ে খুব একটা ভাবিত ছিলেন না বন দফতরের কর্তারা। বাসিন্দারা যাতে আতঙ্কিত না হন, সে জন্য বন দফতরের কর্মীরা কয়েকটি এলাকাতে গিয়ে প্রচার চালান।

পরিস্থিতি বদলে যায়, কিছু দিন আগে লালগড়ের জঙ্গলে বন দফতরের ক্যামেরায় রয়্যাল বেঙ্গলের ছবি ওঠার পর থেকে। তারপর থেকেই গত কয়েক দিন ধরে দক্ষিণ বাঁকুড়ার বিভিন্ন এলাকা থেকে ফের বাঘের পায়ের ছাপ দেখা যাচ্ছে বলে গুঞ্জন ওঠে। এ বার বসে নেই বন দফতরও। দক্ষিণ বাঁকুড়ার কয়েকটি রেঞ্জ এলাকায় বন দফতর মাইকে প্রচার করে বাসিন্দাদের জঙ্গলে একা যেতে নিষেধ করে।

সদ্য জেলায় এসে প্রশাসনিক বৈঠকে বাঘ নিয়ে বন দফতরকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়ে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পুলিশকেও ড্রোন উড়িয়ে জঙ্গলে নজর রাখতে বলে গিয়েছেন তিনি। কোথাও কোনও খবর মিললে ‘চটপট’ ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশও দেন তিনি।

এ দিন তাই কোনও রকম ঝুঁকি না নিয়ে বাঁকুড়া পুলিশ ও বন দফতর ড্রোন উড়িয়ে সারেঙ্গা, সিমলাপাল ও পিড়রগাড়ি রেঞ্জের জঙ্গলে তল্লাশি চালায় বাঘের। ডিএফও বলেন, “ড্রোনে মেলা ছবিতে কোথাও বাঘের হদিস পাওয়া যায়নি। তবে আমরা সাধারণ মানুষকে সতর্ক করে চলেছি।”

এই পরিস্থিতিতে সিমলাপাল, সারেঙ্গা, পিড়রগাড়ি রেঞ্জের জঙ্গল সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যেও বাঘকে নিয়ে ভয়ের ছায়া লক্ষ করা গিয়েছে। ওই এলাকার বহু গ্রামের বাসিন্দারাই জঙ্গলের উপরে নির্ভরশীল। কেউ জ্বালানির জন্য শুকনো পাতা কুড়োতে জঙ্গলে ঢোকেন। কেউ আবার শালপাতা, কেন্দুপাতা নিতে যান। অনেকে গবাদি পশু চরাতে জঙ্গলে যান। তাই বাঘ-আতঙ্কে তাঁরা অস্থির হয়ে পড়েছেন।

সারেঙ্গার বাসিন্দা অনিল টুডু বলেন, “লালগড়ে বাঘের অস্তিত্ব জানার পর থেকেই আমাদের এলাকার জঙ্গলেও তার পায়ের ছাপ দেখতে পাওয়ার খবর ছড়িয়েছে। গ্রামের মানুষ জন জঙ্গলে যান কাঠ কুড়োতে। কখন কী হয়ে যায়, তা নিয়ে আমরা খুবই ভয়ের মধ্যে রয়েছি।”

সিমলাপালের তৃণমূল বিধায়ক সমীর চক্রবর্তী অবশ্য সাধারণ মানুষকে গুজবে কান দিতে নিষেধ করেছেন। তিনি বলেন, “আমি নিয়মিত বন দফতর ও জেলা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছি। এলাকাবাসী গুজবে কান না দিয়ে যেন সতর্ক থাকেন।”

Tiger Lalgarh Sarenga Royal Bengal রয়্যাল বেঙ্গল সারেঙ্গা
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy