ঘূর্ণিঝড় আমপানকে জাতীয় বিপর্যয় ঘোষণার দাবি ঘিরেই বিজেপির সঙ্গে অন্য দলগুলির মতবিরোধ।
কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পাঠানোর জন্য প্রস্তাব তৈরির কাজ শুরু করে দিল সর্বদল কমিটি। নবান্নে বুধবার সর্বদল বৈঠক থেকেই বিভিন্ন দলের প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি কমিটি গড়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই একটি খসড়া প্রস্তাব তৈরি করে রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় কথা বলেছেন বাম, কংগ্রেস ও বিজেপি নেতাদের সঙ্গে। বাম ও কংগ্রেস তাদের সম্মতিও জানিয়ে দিয়েছে। বিজেপি অবশ্য কিছু প্রশ্নে তাদের ভিন্ন মতের কথা জানিয়েছে।
সূত্রের খবর, ‘আমপান’কে জাতীয় বিপর্যয় ঘোষণা করে পর্যাপ্ত কেন্দ্রীয় সাহায্য, আবাস যোজনায় পাকা বাড়ি তৈরি করে দেওয়া, সুন্দরবন মাস্টার প্ল্যান তৈরি করে পাকা বাঁধ নির্মাণ, অসংগঠিত শ্রমিকদের পরিবারপিছু ১০ হাজার টাকা করে অর্থসাহায্য, করোনা মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় তহবিল— এই রকমই নানা দাবির কথা বলা হয়েছে খসড়া প্রস্তাবে। এর মধ্যে বিজেপির প্রথম আপত্তি জাতীয় বিপর্যয়ের দাবি নিয়েই। তাদের মতে, কোনও প্রাকৃতিক দুর্যোগকেই জাতীয় বিপর্যয় বলা যায় না। কেরলে দু’বছর আগের বন্যার সময়েই এই নিয়ে বিস্তর বিতর্ক হয়েছে। গুরুতর ধরনের বিপর্যয় আখ্যা দিয়ে অবশ্যই যথাযথ সাহায্যের জন্য কেন্দ্রের কাছে দাবি জানানো যেতে পারে।
খসড়া প্রস্তাব পাঠিয়ে বৃহস্পতিবার পার্থবাবু কথা বলেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী ও কংগ্রেস সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্যের সঙ্গে। দিলীপবাবুর বক্তব্য, ‘‘জাতীয় বিপর্যয় বলে কিছু হয় না। প্রস্তাবের কিছু ক্ষেত্রে ভাষাগত পরিবর্তনের কথাও আমরা বলেছি। সরকার কী করবে, দেখা যাক।’’ অসংগঠিত শ্রমিকদের জন্য অর্থ সাহায্যের দাবিও ‘বাস্তবসম্মত’ বলে মনে করছে না বিজেপি। সুজনবাবুর কথায়, ‘‘পেট্রল-ডিজেলের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির প্রসঙ্গও প্রস্তাবে রাখতে চেয়েছিলাম আমরা। তবে সর্বসম্মতি তৈরি করার স্বার্থেই আমরা এই নিয়ে জোরাজুরি করিনি।’’ আর প্রদীপবাবু বলছেন, ‘‘জাতীয় বিপর্যয় নিয়ে বিজেপি যা বলছে, সেটা ঠিক ব্যাখ্যা নয়। তা হলে লাতুর বা ভুজের ভূমিকম্প জাতীয় বিপর্যয় হত না। আমপান-এর পরে কেন্দ্রীয় দল ঘুরে যাওয়ার পরে তাদের মতামত কী, সেই বিষয়টাও জানতে চাওয়ার কথা প্রস্তাবে রাখার আবেদন করেছি।’’
পার্থবাবু অবশ্য এ দিন মন্তব্য করেননি। তবে তৃণমূল সূত্রের বক্তব্য, সর্বদল কমিটি থেকে সর্বসম্মত প্রস্তাব তৈরির জন্যই চেষ্টা করা হবে। তার পরে তা পাঠিয়ে দেওয়া হবে রাজ্য সরকারের কাছে। সরকারি স্তরে রাজ্য আবার তা পাঠাবে কেন্দ্রের বিবেচনার জন্য।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy