Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

সাংবাদিকদের বেধড়ক পেটাল তৃণমূলের গুন্ডারা

ঘটনাস্থল একটি মাত্র লোকসভা কেন্দ্রে সীমাবদ্ধ। গোটা লোকসভা কেন্দ্রও নয়। বারাসত লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত দু’টি মাত্র বিধানসভা ক্ষেত্রে ছড়িয়ে রয়েছে বিধাননগর পৌর নিগম। সেইটুকু এলাকায় ভোটের হালচাল দেখতে গিয়ে পাঁচ ঘণ্টায় বর্বর আক্রমেণর শিকার হলেন ১৮ জন সাংবাদিক!

আক্রান্ত সাংবাদিক অরিত্রিক ভট্টাচার্য।

আক্রান্ত সাংবাদিক অরিত্রিক ভট্টাচার্য।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০১৫ ১৪:০৩
Share: Save:

ঘটনাস্থল একটি মাত্র লোকসভা কেন্দ্রে সীমাবদ্ধ। গোটা লোকসভা কেন্দ্রও নয়। বারাসত লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত দু’টি মাত্র বিধানসভা ক্ষেত্রে ছড়িয়ে রয়েছে বিধাননগর পৌর নিগম। সেইটুকু এলাকায় ভোটের হালচাল দেখতে গিয়ে পাঁচ ঘণ্টায় বর্বর আক্রমেণর শিকার হলেন ৮টি সংবাদমাধ্যমের মোট ১৮ জন কর্মী! এ কোন বাংলা? হতচকিত প্রশ্ন বিভিন্ন মহলের। শুধু রাজ্যে কেন, গোটা দেশে এমন ঘটনা খুঁজে পাওয়া শক্ত। মাসকয়েক পরই বিধানসভা নির্বাচনের মুখোমুখি দাঁড়াবে পশ্চিমবঙ্গ। মাত্র দু’টি বিধানসভা ক্ষেত্রে ছড়িয়ে থাকা একটি পৌর নিগমের ভোটে যদি সংবাদমাধ্যম এত বড় আক্রমণের শিকার হয়, তা হলে সরকার গঠনের জন্য রাজ্যজুড়ে ভোটগ্রহণের সময় পরিস্থিতি কোথায় পৌঁছবে? প্রশ্ন এখন এটাই।

বিধাননগরের একটি ওয়ার্ডে বহিরাগতদের তাণ্ডবের খবর পেয়ে এ দিন ছবি তুলতে ঘটনাস্থলে হাজির হন আনন্দবাজার পত্রিকার সাংবাদিক সৌভিক দে। যান এবিপি আনন্দের অরিত্রিক ভট্টাচার্য ও চিত্র সাংবাদিক পার্থসারথি চক্রবর্তী। ছিলেন অন্যান্য সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরাও। আচমকাই এক দুষ্কৃতী পার্থসারথির হাত থেকে ক্যামেরা ছিনিয়ে নিয়ে পালায়। ক্যামেরা উদ্ধারে সাংবাদিকরা ওই দুষ্কৃতীর পিছনে ধাওয়া করতেই শুরু হয় আক্রমণ। মাটিতে ফেলে লাঠি, বাঁশ দিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয় তাঁদের। সৌভিক দে গুরুতর জখম হয়েছেন। মুখ ফাটিয়ে দেওয়া হয়েছে অরিত্রিক ভট্টাচার্যের।

পার্থসারথি চক্রবর্তীর মাথায় আঘাত লাগায় তিনি অচেতন হয়ে পড়েন। ২৪ ঘণ্টার সাংবাদিক বিক্রম দাস, দেবারতি ঘোষ ও চিত্র সাংবাদিক মিন্টু বসাককেও মারধর করা হয়। শাসক আশ্রিত দুষ্কৃতীদের হাতে প্রহৃত হন ইটিভি নিউজ বাংলার প্রতিনিধি অতিরথ ঘোষ। সল্টলেকের অন্য একটি ওয়ার্ডে মারধর করা হয় এবিপি আনন্দের সাংবাদিক প্রকাশ সিংহকে। আক্রান্ত এবিপি আনন্দের আর এক সাংবাদিক ময়ূখ ঠাকুর চক্রবর্তীও। দ্য টেলিগ্রাফ-এর চিত্র সাংবাদিক সঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়কেও শনিবার সকালে বেধড়ক মারধর করেছে তৃণমূলের লোকজন। ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডে বাম প্রার্থী রমলা চক্রবর্তীর বাড়ির সামনে আক্রান্ত হন কলকাতা টিভির সাংবাদিক ও চিত্র সাংবাদিক শারমিন বেগম এবং তন্ময় দত্ত বিশ্বাস। বালিতে বেধড়ক মারধর করা হয় ইটিভি নিউজ বাংলার আর এক সাংবাদিক তুহিনদাস চন্দ্রকে।

এ কেমন ভোট! এরা কারা সল্টলেকে?
বিধাননগরের ভোটে পুলিশের ভূমিকা নীরব দর্শকের
প্রার্থী না প্রতীক, কাকে বাছলেন তাপস ঘরণী গোপা?
অচেনা যুবক দেখিয়ে দিল কোথায় ভোট দিতে হবে
বহিরাগত তাণ্ডব, অবাধে ভোট লুঠল শাসক দল

পুলিশ সর্বত্রই ছিল নীরব দর্শক। একের পর এক ওয়ার্ডে সংবাদমাধ্যমকে বীভৎস আক্রমণের মুখে পড়তে দেখেও পুলিশ কাউকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেনি। পরে অবশ্য পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ববি হাকিম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক সাংবাদিকের সঙ্গে দেখা করা আসেন।

শৌভিক দে (আনন্দবাজার পত্রিকা)
অরিত্রিক ভট্টাচার্য, প্রকাশ সিংহ, পার্থসারথি চক্রবর্তী, ময়ূখ ঠাকুর চক্রবর্তী (এবিপি আনন্দ)
মিন্টু বসাক, বিক্রম দাস, দেবারতি ঘোষ (২৪ ঘণ্টা)
তন্ময় দত্ত বিশ্বাস, সরমিন বেগম (কলকাতা টিভি)
সঞ্জয় চট্টোপাধ্যায় (দ্য টেলিগ্রাফ)
অর্ক দে, দীপঙ্কর জানা (নিউজ টাইম)
মৈত্রেয়ী ভট্টাচার্য, তথাগত সেনগুপ্ত (এই সময়)
অতিরথ ঘোষ, সুরজ প্রসাদ, তুহিন দাস চন্দ্র (ই টিভি)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE