Advertisement
E-Paper

অভিষেক ‘নাদান’, বাঁদরের হাতে নারকেল! কুণালকে বহিষ্কার করা উচিত ছিল, বিতর্কের আসরে করিমও

তৃণমূলে আব্দুল করিম চৌধুরীর বিদ্রোহ নতুন কিছু নয়। অনেক বারই নানা মন্তব্যে দলের অস্বস্তি বাড়িয়েছেন। পঞ্চায়েতে পাল্টা প্রার্থী দিয়ে জিতিয়েছেন। এ বার নবীন-প্রবীণ বিতর্কের আগুনেও ঘি ঢাললেন তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০২৪ ১৮:১০
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, আব্দুল করিম চৌধুরী এবং কুণাল ঘোষ।

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, আব্দুল করিম চৌধুরী এবং কুণাল ঘোষ। — ফাইল চিত্র।

তৃণমূলের নবীন বনাম প্রবীণ লড়াইয়ের আসরে একের পর এক নেতার নাম এসেছে। এ বার সংযোজন আব্দুল করিম চৌধুরী। ইসলামপুরের বিধায়কের আক্রমণের তির মূলত দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্য তৃণমূলের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের দিকে। সরাসরি কুণালের নাম নিলেও অভিষেকের নামোচ্চারণ করেননি তিনি। ‘সেনাপতি’ বলে উল্লেখ করেছেন। করিমের দাবি, অভিষেককে সঙ্গে রাখার পরামর্শ দিলেও তাঁকে ক্ষমতা না-দেওয়ার কথাই তিনি বলেছিলেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। অন্য দিকে, মমতা কেন কুণালকে এখনও বহিষ্কার করেননি তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন করিম।

বৃহস্পতিবার একটি সাংবাদিক বৈঠক করেন করিম। সেখানে তিনি বলেন, ‘‘কুণাল ঘোষকে মুখপাত্র হিসাবে অনেক কথা বলতে দেখেছি। আমাদের মমতাদির উচিত ছিল সঙ্গে সঙ্গে ওকে বহিষ্কার করা, সরিয়ে দেওয়া।’’ কুণালকে ‘ননসেন্স’ বলে উল্লেখ করে প্রবীণ বিধায়ক করিম আরও বলেন, ‘‘প্রবীণদের ছাড়া বাংলা কেন, কোনও রাজ্য, দেশও চলবে না। বাঁদরের হাতে নারকেল দেওয়ার মতো। চালাতে পারবে কি এরা? যে সেনাপতি হয়েছে না, আমি আগেই বলেছিলাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে যে, বাচ্চা আছে, নাবালক আছে। আপনি সঙ্গে রাখুন। কিন্তু পুরো ক্ষমতা কখনও দেবেন না। এ বাচ্চা আছে। নাদান, বাচ্চা, নাবালক।’’ করিমের এই মন্তব্য প্রসঙ্গে কুণাল বলেন, ‘‘আমার শুভকামনা রইল ওঁর জন্য। উনি দেড়শো বছর বিধায়ক থাকুন। আর আমাকে সরাতে হলে উনিই একটা চিঠি পাঠিয়ে দিন না।’’

করিমের সঙ্গে তৃণমূলের দূরত্ব অবশ্য অনেক আগেই তৈরি হয়েছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময়ে তিনি ‘বিদ্রোহী’ হয়ে উঠেছিলেন। উত্তর দিনাজপুর জেলা তৃণমূল সভাপতি কানহাইয়ালাল আগরওয়াল এবং মন্ত্রী গোলাম রব্বানির সঙ্গেই মূলত বিরোধ করিমের। করিম শিবিরের অভিযোগ ছিল, জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব ‘একতরফা’ ভাবে পঞ্চায়েত ভোটে প্রার্থী চয়ন করেছিলেন। দলের তথা বিধানসভার প্রবীণতম সদস্য হওয়া সত্ত্বেও তাঁর মতামতকে ‘গুরুত্ব’ দেওয়া হয়নি। করিম শিবিরের বক্তব্য, তাঁর বিধানসভা এলাকাতেও বিধায়কের মতামত উপেক্ষা করেই প্রার্থী দিয়েছিলেন তৃণমূল জেলা নেতৃত্ব। যার ফলস্বরূপ ‘বাধ্য’ হয়ে তিনি নিজের অনুগামীদের ইসলামপুরে নির্দল প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করিয়েছিলেন। যা নিয়ে তৃণমূল নেতৃত্বের ভর্ৎসনার মুখেও পড়তে হয়েছিল তাঁকে। কিন্তু পঞ্চায়েত নির্বাচনে বেশ কিছু নির্দল প্রার্থীকে জেতাতে পেরেছেন ইসলামপুরের প্রবীণ বিধায়ক।

তার আগে অভিষেকের ‘জনসংযোগ যাত্রা’ কর্মসূচির সময়েও বিতর্ক তৈরি করেন করিম। ‘রেড কার্পেট’ বিছিয়ে আশায় ছিলেন তাঁর বাড়িতে এসে তাঁকে নিয়ে সভায় যাবেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। কিন্তু ইসলামপুরে সভা করেই নিজের পরবর্তী গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা দেন অভিষেক। আর তাতেই ‘অভিমানী’ করিম সংবাদমাধ্যমে মুখ খুলে নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এর পরেই ইটাহারে ডাকা অভিষেকের বৈঠকে গরহাজির ছিলেন করিম।

তৃণমূলকে অস্বস্তি ফেলার নজির আরও অনেক দেখিয়েছেন ইসলামপুরের এই বিধায়ক। ইসলামপুরে দলীয় কোন্দলে এক সিভিক ভলান্টিয়ার খুনের ঘটনায় দলের একাংশের বিরুদ্ধেই ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন তিনি। আবার ইসলামপুর ব্লকের সভাপতির নাম ঘোষণা হওয়ার পরেও দল ছাড়ার হুমকিও দিয়েছিলেন। প্রসঙ্গত, তৃণমূলের অন্দরে করিমের তথাকথিত ‘বিদ্রোহ’ নতুন নয়। এক বার বিধায়কদের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা কেন বিধানসভায় উপস্থিত হন না, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলে বিতর্ক বাড়িয়েছিলেন করিম। তাই তাঁর এ হেন মেজাজকে খুব বেশি গুরুত্ব দিতে নারাজ দলের একাংশ। উল্লেখ্য, একাধিকবার দলবদল এবং পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় ১১ বার বিধায়ক হওয়ার কৃতিত্ব রয়েছে করিমের।

TMC Abdul Karim Chowdhury Abhishek Banerjee Mamata Banerjee Kunal Ghosh
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy