নদিয়ার তৃণমূল ছাত্র পরিষদ নেতা বিক্রম সাহা। নিজস্ব চিত্র।
আইপিএলের নকল টিকিট বিক্রির অভিযোগে আগেই নদিয়ার তৃণমূল ছাত্র পরিষদ নেতা বিক্রম সাহাকে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশের গুন্ডা দমন শাখা। এ বার তাহেরপুর বাসিন্দা ওই ছাত্রনেতার বিরুদ্ধে নদিয়া জেলার অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) কৃষ্ণাভ ঘোষ-সহ সরকারি আধিকারিকদের সই নকল করে চাকরির নিয়োগপত্র দেওয়ার অভিযোগ উঠল।
প্রসঙ্গত, ২৪ এপ্রিল কলকাতার মহেশতলা থানায় বিক্রমের বিরুদ্ধে আইপিএলের নকল টিকিট বিক্রির অভিযোগ দায়ের হয়। পরে সেই অভিযোগের তদন্তের দায়িত্ব নেয় গুন্ডা দমন শাখা। গত ২ মে মঙ্গলবার রাতে তাহেরপুরের জি ব্লকের বাড়ি থেকে বিক্রমকে গ্রেফতার করা হয়। বর্তমানে সে পুলিশের হেফাজতে রয়েছে।
তদন্তে জানা গিয়েছে, রাজ্যের বিভিন্ন পুরসভায় কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপক প্রকল্পে কাজের জন্য বিভিন্ন সময়ে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন থেকে কর্মী নিয়োগ করা হয়। ধৃত বিক্রম সাহা এই রকম একটি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিল। প্রায় দশ মাস আগে ওই সংগঠনের হয়ে সে রানাঘাট পুরসভাতে চুক্তিভিত্তিক কাজ করত। তার আচরণে ক্ষুব্ধ হয়ে পুরসভা কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট সংগঠনের কাছে আপত্তি জানায়। তার পরেই তাকে তাহেরপুর পুরসভায় স্থানান্তরিত করা হয়। সম্প্রতি হরিণঘাটা, কুপার্স, শান্তিপুর, তাহেরপুর, রানাঘাট, চাকদহ ও বীরনগর পুরসভায় কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপক প্রকল্পে কাজের জন্য সাত জনকে নিয়োগপত্র দিয়েছিল বিক্রম। বিক্রমের দেওয়ার নিয়োগপত্র নিয়ে গত এপ্রিল মাসের শেষের দিকে বগুলার বাসিন্দা প্রসেনজিৎ মণ্ডল রানাঘাট পুরসভায় আসেন। নিয়োগপত্রটি ছিল ওই সংস্থার প্যাডে। তাতে রানাঘাট পুরপ্রধান কোশলদেব বন্দ্যোপাধ্যায়, নির্বাহী আধিকারিক বিপুল চক্রবর্তী, সামাজিক সংগঠনের মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক প্রসূনকান্তি ঘোষ ও অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) কৃষ্ণাভ ঘোষের সই ছিল। পরীক্ষা করে দেখা যায় যে, ওই নিয়োগপত্র নকল।
পুরপ্রধান কোশলদেব বলেন, ‘‘আমার সই নকল করা হয়েছে। যে সংগঠনের হয়ে ওই নকল নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছিল তাতে আমার কিংবা পুরসভার কার্যনির্বাহী আধিকারিকের সই থাকার কথা নয়। বিষয়টি নিয়ে আমরা রানাঘাট থানায় অভিযোগ জানিয়েছি।" রানাঘাট পুরসভার কার্যনির্বাহী আধিকারিক বিপুল চক্রবর্তী বলেন, "ওই দিন বিক্রম সাহা নিজে বগুলার বাসিন্দা প্রসেনজিৎ মণ্ডলকে পুরসভায় পরিচয় করাতে নিয়ে এসেছিল। পরে সংশ্লিষ্ট সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে পারি, এ ধরনের কোনও নিয়োগ তারা করেনি। নিশ্চিত ভাবেই এর পিছনে আর্থিক লেনদেন হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।’’ যদিও আর্থিক লেনদেনের কথা অস্বীকার করেছেন চাকরিপ্রার্থী প্রসেনজিৎ মণ্ডল।
অতিরিক্ত জেলাশাসক জেলা পরিষদ কৃষ্ণাভ ঘোষ বলেন, ‘‘আমার সই নকল করা হয়েছে। আমিও এফআইআর করব।" যে সংগঠনের নামে জাল নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছে তার মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক প্রসূনক্রান্তি ঘোষ বলেন,"এ ধরনের জালিয়াতি ভাবাই যায় না। বিষয়টি আমরাও স্টেট আরবান ডেভেলপমেন্ট এজেন্সিকে জানিয়েছি। আমাদের তরফ থেকে তমলুক থানাতেও অভিযোগ জানানো হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy