শোভন-বৈশাখীকে টুইটে কটাক্ষ কুণালের। ফাইল চিত্র।
বঙ্গ পরবের অন্যতম অঙ্গ জামাইষষ্ঠী অনেকটাই রসিকতার উৎসব। শ্যালিকা-শ্যলকদের কাছে জামাইবাবুকে নিয়ে মশকরা করারও দিন। কিন্তু ২০২১ সালের জামাইষ্ঠী যেন বঙ্গ রাজনীতির অঙ্গ হয়ে রইল। সকাল থেকে একের পর এক ঘটনা শেষে দুলাল-জামাতা শোভনকে খোঁচা কুণাল ঘোষের। বিজেপি-তে থাকার সময়ই শোভন চট্টোপাধ্যায়কে ‘গ্ল্যাক্সো বেবি’ বলে আক্রমণ করেছিলেন। এ বার বললেন ‘ডামি জামাই’। অতীতের মতো বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘ফুলটুসি’ নামে উল্লেখ করে বুধবারের গোটা ঘটনাচক্রকে ‘সার্কাসের এক অপূর্ব ইভেন্ট’ বলে খোঁচা দিয়েছেন। কুণাল কারও নাম না নিলেও তাঁর তিরের লক্ষ্য কারা তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। সংবাদমাধ্যমে সেটা স্পষ্টও করেছেন কুণাল।
তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল বিষয়টাকে এমন ‘রসিকতা’-র স্তরে নিয়ে গেলেও সকাল থেকে বিষয়টা রীতিমতো গুরুগম্ভীরই ছিল। প্রথমে দেখা যায় শোভন-বান্ধবী বৈশাখী ফেসবুকে নিজের নাম বদলে ফেলেছেন। নিজেকে ‘বৈশাখী শোভন ব্যানার্জি’ নামে উল্লেখ করে দাবি করেন, ‘আমি থেকে আমাদের যাত্রা শুরু হল।’ অনেক দিনই ওঁরা এক ছাদের নীচে থাকেন কিন্তু এ বার কি তবে...। নানা জল্পনা তৈরি হয় সোশ্যাল মিডিয়া থেকে রাজনীতির অঙ্গনে। কিছুক্ষণ পরেই ভুল ভাঙিয়ে বৈশাখী ফেসবুকেই জানান, আসলে তাঁরা সোশ্যাল মিডিয়াতেই দুইয়ে মিলে এক হয়েছেন।
ঘটনাচক্রে বুধবারই তৃণমূল বিধায়ক তথা শোভনের শ্বশুর দুলাল দাসের পরিবারের পক্ষে দাবি করা হয় গোলপার্কে যে ফ্ল্যাটে শোভন-বৈশাখী রয়েছেন সেটি তাঁদের। বুধবারই দুলাল তাঁর ছোট ছেলে (শোভনের ছোট শ্যালক) শুভাশিসের সংস্থা ‘স্টার মার্ক কনস্ট্রাকশন কনসালট্যান্ট প্রাইভেট লিমিটেড’-এর মাধ্যমে শোভনকে আইনি নোটিস ধরান দুলাল। এর পরেই সংবাদমাধ্যমে মুখ খুলে শোভন তাঁর শ্বশুর দুলাল, স্ত্রী রত্না থেকে শ্যালকদের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করেন। একই সঙ্গে দুলালকে পাঠানো পাল্টা চিঠিতে শোভন লেখেন, ‘রত্না কোন অধিকারে বেহালার বাড়ি আটকে রেখেছেন?’ সেই সঙ্গেও ঘোষণা করেন বৈশাখীকে তিনি তাঁর যাবতীয় স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির উত্তরাধিকারী করে দিয়েছেন।
গ্ল্যাক্সোবেবি কি নিজের পদবি ছেড়ে বন্দ্যোপাধ্যায় পদবি নিল নাকি? জামাইষষ্ঠীর দিন ডামি-জামাইয়ের এমন পদবিত্যাগ ও ফুলটুসিকে সম্পত্তিদান (?) সার্কাসের এক অপূর্ব ইভেন্ট।
— Kunal Ghosh (@KunalGhoshAgain) June 16, 2021
এই খবর জানার পরে আনন্দবাজার ডিজিটালকে রত্না বলেন, ‘‘ভবিষ্যতে শোভনের আর কোনও বিপদে পাশে দাঁড়াবেন না তিনি।’’ আর দুলাল বলেন, ‘‘ওঁর সঙ্গে তো আমার মেয়ের বিয়েই দিতেই চাইনি। অনেক কাকুতিমিনতি করে আমায় রাজি করিয়েছিল। এখন মনে হয়, ওঁর মতো জামাই না হলেই ভাল হত।’’ ঘটনাচক্রে জামাইষষ্ঠীর দিনে শ্বশুর ও জামাইয়ের মধ্যে বিবাদটা পারিবারিকই ছিল। কিন্তু দিনের শেষে সেটাকে কটাক্ষ করে রসিকতায় মাতলেন কুণাল।আর সেই টুইটের জবাবে নেটাগরিকরা যা লিখলেন তাতে পরিবারের বিবাদ এখন রাজনীতির আঙিনায়। তিনি লেখেন, ‘গ্ল্যাক্সো বেবি কি নিজের পদবি ছেড়ে বন্দ্যোপাধ্যায় পদবি নিল নাকি? জামাইষষ্ঠীর দিন ডামি-জামাইয়ের এমন পদবিত্যাগ ও ফুলটুসিকে সম্পত্তিদান (?) সার্কাসের এক অপূর্ব ইভেন্ট।’ এই টুইটে প্রতিক্রিয়া দিতে অনেকেই লিখেছেন, ওঁদের যেন তৃণমূলে নেওয়া না হয়। একজন লিখেছেন, ‘দিদি তো কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, যুবশ্রী চালু করেছেন। এবার কি এই জেঠু ও কাকিমার জন্য ‘প্রেমশ্রী’চালু করতে পারেন না?’ আবার আর একজনের মন্তব্য, ‘এরাই তো একসময়ে আপনার দলের সম্পদ ছিল। এখন যেমন নুসরত বিয়ে করে বলছে সহবাস করেছিলাম!!কতটা নির্লজ্জ হলে এরকম মন্তব্য করা যায়। আর এই বক্তব্যটা আপনাদের বর্তমান সম্পদ নুসরত জাহান এরই বক্তব্য।’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy