হাইকোর্টের নির্দেশে নারদ কাণ্ডের তদন্তভার হাতে আসার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই নথিপত্র সংগ্রহ করার কাজ শুরু করে দিল সিবিআই। আর সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার তৎপরতা শুরু হয়ে গেল তৃণমূল এবং নবান্নের অন্দরে।
নারদ কাণ্ডে রাজ্য পুলিশের ভূমিকাকে শুক্রবার ভর্ৎসনা করেছে প্রধান বিচারপতি নিশীথা মাত্রের ডিভিশন বেঞ্চ। রাজ্য সরকার শীর্ষ আদালতে যাচ্ছে সেই রায়ের বিরুদ্ধে। অন্য দিকে তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীদের লক্ষ্য সিবিআই তদন্তের উপরে স্থগিতাদেশ পাওয়া। দু’পক্ষই চাইছে সোমবারই যাতে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করা যায়।
সূত্রের খবর, এ জন্য শনিবার সকালেই দিল্লি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে রাজ্যের আইনমন্ত্রী মলয় ঘটককে। দিল্লিতে পশ্চিমবঙ্গের ‘অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড’ পারিজাত সিংহের সঙ্গে এ দিন বিকেলে বৈঠক করেন তিনি। জানা গিয়েছে, দেশের প্রায় সব দুঁদে আইনজীবীদের দরজায় কড়া নাড়া শুরু করেছে সরকার ও তৃণমূল নেতারা। কপিল সিব্বল, গোপাল সুব্রহ্মণ্যম, অভিষেক সিঙ্ঘভি, কে কে ভেনুগোপাল, হরিশ সালভে-সহ প্রায় ১৭ জন বিশিষ্ট আইনজীবীর সঙ্গে এরই মধ্যে যোগাযোগ করা হয়েছে। আলাদা ভাবে বিশিষ্ট আইনজীবীদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন তৃণমূল নেতারাও। আইনজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শের জন্য আজ, রবিবার দিল্লি যাবেন দলের সহ-সভাপতি মুকুল রায় ও আইনজীবী সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। নারদ ফুটেজ ফাঁস হওয়ার পরই গোপাল সুব্রহ্মণ্যমের সঙ্গে কথা বলেছিলেন মুকুলবাবু। যদিও এ দিন তিনি বলেন, ম্যাথুর কাছ থেকে তিনি টাকা নিয়েছেন, এমনটা ফুটেজে দেখা যায়নি।
তৃণমূলের এক শীর্ষ নেতা জানান, ছুটির পর সোমবার সুপ্রিম কোর্ট খুলবে। বিশিষ্ট আইনজীবীরা অনেকেই ওই দিন অন্য মামলার জন্য আগে থেকে সময় দিয়ে রেখেছেন। তাই এক সঙ্গে অনেকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। যাঁর সময় পাওয়া যায়। সরকার এবং তৃণমূল নেতারা চাইছেন, এক সঙ্গে বেশ কয়েকজন বিশিষ্ট আইনজীবীকে দিয়ে সওয়াল করাতে।
এখন প্রশ্ন হল, আদালতে নবান্ন ও তৃণমূলের বক্তব্য কী হবে? তৃণমূলের সূত্রের দাবি, স্টিং অপারেশন বিষয়টিই বেআইনি। তার ভিত্তিতে আদালত কি সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিতে পারে? তা ছাড়া, হাইকোর্ট সিবিআই-কে এক দিকে প্রাথমিক তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে, আবার তার আগেই জানিয়ে দিয়েছে এটা আদালতগ্রাহ্য অপরাধ। তদন্তের আগেই অপরাধ বলে দেওয়া যায় কিনা তা নিয়ে সওয়াল করা হবে সুপ্রিম কোর্টে। সেই সঙ্গে এই প্রশ্নও তোলা হবে যে, নেতা-মন্ত্রীরা ঘুষ নিয়েছে তা কী করে প্রমাণিত হচ্ছে?
তবে এত প্রস্তুতি সত্ত্বেও সংশয়ের চোরা স্রোত বইছে তৃণমূলে। সুপ্রিম কোর্ট কি আদৌ আবেদন শুনবে? যদি তারা আর্জি খারিজ করে দেয়, তা হলে আরও মুখ পুড়বে দল ও সরকারের। দলের অনেকের মতে, আর্জির আইনি ভিত্তিটাই দুর্বল। কারণ, শীর্ষ আদালত কোনও রায় খারিজ করতে পারে। কিন্তু তদন্তের নির্দেশ সাধারণ ভাবে রদ করা হয় না। ফলে আবেদন করার পথে না হাঁটলেই ভাল হতো। মুকুলবাবুদের বক্তব্য, মমতাদি বলে দিয়েছেন, তৃণমূল আইনি ও রাজনৈতিক উভয় ভাবে বিষয়টি লড়বে। সেই সিদ্ধান্তেই দল অটল রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy