ভোটের ফল ঘোষণা হতেই ঘর ছেড়েছিলেন ওঁরা। শাসক দলের কর্মী সমর্থকদের হামলার আশঙ্কায়। সোমবার নিজে সিপিএমের সেই কর্মী সমর্থকদের ঘরে ফেরালেন কোচবিহার দক্ষিণ কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক মিহির গোস্বামী।
ভবিষ্যতে পরিবারগুলিকে যাতে কোনওভাবেই হেনস্থা না করা হয়, সে ব্যাপারেও দলের কর্মীদের সতর্ক করেন তিনি। মিহিরবাবু বলেন, ‘‘কারও উপরে কোনও হামলা আমি বরদাস্ত করব না। সে যে দলই করুক না কেন। ভোটের আগে থেকে আমি ওই কথা স্পষ্ট ভাবে বলে দিয়েছি। এর পরেও বিরোধী দলের কয়েকজন কর্মী বাড়ির বাইরে রয়েছেন জেনে তাঁদের পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। কেউ কোথাও হামলা করলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
মিহিরবাবুর ওই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মহানন্দ সাহা। তিনি বলেন, “বিধায়কের এই উদ্যোগকে আমরা সাধুবাদ জানাই। বিরোধী দলের প্রতি এমনই মানসিকতা আমরা আশা করি।” ঘুঘুমারির সিপিএম কর্মীরাও মিহিরবাবুর উদ্যোগে খুশি।
কোচবিহার দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রের ঘুঘুমারি গ্রাম পঞ্চায়েতের পুলের পাড় এলাকার বাসিন্দা রেজ্জাক হোসেন ভোট গণনার পর থেকেই ঘরছাড়া হয়েছিলেন। সিপিএমের অভিযোগ, রেজ্জাককে ভোটের আগে একবার মারধর করে তৃণমূল কর্মীরা। বেশ কয়েক দিন কোচবিহার জেলা হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। এর পরেও বাম প্রার্থীর হয়ে প্রচার করেন তিনি। তখনই ভোটের পরে দেখে নেওয়া হবে বলে হুমকি দেওয়া হয় তাঁকে।
মিহিরবাবু জানান, এ দিন তিন জনকে তিনি পৌঁছে দেন। তিনি বলেন, “ভোটে হারজিত হতেই পারে, তা বলে কেউ ঘরের বাইরে থাকবে, এটা আমি হতে দেব না। এরকম আরও কেউ যদি থাকে আমি খবর পেলে তাঁকে বাড়ি পৌঁছে দিয়ে আসব।”
কোচবিহারের রাজনীতিতে বর্ষীয়ান নেতা হিসেবেই পরিচিতি মিহিরবাবুর। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেই কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। দলে সব সময় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন। মমতার সঙ্গে তাঁর সখ্যর কথাও জানা রয়েছে জেলার মানুষের। বিধানসভা ভোটের আগে রাসমেলার মাঠে ভোটের প্রচারে এসে মমতাই জানিয়েছিলেন, রাজনৈতিক জীবনের শুরুতে যত বার কোচবিহার এসেছেন, মিহিরবাবুর স্কুটারে করে বহু জায়গায় দলের কাজে গিয়েছেন তিনি। সেই মিহিরবাবুর এ ভাবে এগিয়ে আসায় খুশি দলের কর্মী-সমর্থকেরাও। ভোটের লড়াইয়ে নেমেও মিহিরবাবু বারবার বিরোধী দলের সদস্যদের উপরে হামলা রুখতে সচেষ্ট হন। সতর্ক করেন নিজের দলের কর্মীদের। তাঁর স্লোগান ছিল “মারধর সন্ত্রাস করে জিততে চাই না। ভোটে লড়াই করে মানুষের রায়ে জিততে চাই।”
সেই চেষ্টা জারি রেখেছেন গণনার পরেও। তাঁর দাবি, গণনার পরেই এ ব্যাপারে দলের কর্মীদের সতর্ক করেই কলকাতায় যান তিনি। ফেরার পরে যখনই জানতে পারেন তাঁর বিধানসভা এলাকার কয়েকজন ঘরছাড়া, সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের নিয়ে ঘরের পথে রওনা হন কোচবিহার দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy