হঠাৎ শুরু হল এক অন্য ‘লক্ষ্মীর পাঁচালি’। ফাইল চিত্র।
দু’জনেই সাংসদ। দু’জনে একদা একই দলে ছিলেন। ভিন্ন সময়ে একই পদে অর্থাৎ যুব তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি থেকেছেন। তবে এখন প্রতিপক্ষ। বুধবার তাঁরা পরস্পরকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করলেন। রাজনীতি নয়, তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবার বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁকে আক্রমণ করলেন তাঁর স্ত্রী সুজাতা মণ্ডলের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ নিয়ে। পাল্টা জবাব দিতে অভিষেক-জায়াকে কটাক্ষ করলেন সৌমিত্র।
বাঁকুড়া জেলার ওন্দার জনসভায় রাজ্যের ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ প্রকল্প নিয়ে কথা বলছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক। হঠাৎ সেখানেই শুরু হল এক অন্য ‘লক্ষ্মীর পাঁচালি’। কথায় কথায় বিজেপি সাংসদ সৌমিত্রের প্রসঙ্গ উঠতেই অভিষেক বলেন, ‘‘সুজাতা (সৌমিত্রের প্রাক্তন স্ত্রী সুজাতা মণ্ডল) তো ফিরে এসেছে! যে বাড়ির লক্ষ্মীকে ধরে রাখতে পারে না, সেই সৌমিত্র লক্ষ্মীর ভান্ডারকে আক্রমণ করেছে।’’ অভিষেকের সভা শেষ হতেই অবশ্য সৌমিত্র এই আক্রমণের পাল্টা জবাব দিয়েছেন। বিষ্ণুপুরের সাংসদ আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেছেন, ‘‘অভিষেক কয়লা দুর্নীতির টাকায় রুজিরাকে (অভিষেকের স্ত্রী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়) ধরে রাখে। আমার অমন লক্ষ্মী চাই না।’’ সুজাতা প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘আপদ বিদায় হয়েছে।’’
বাঁকুড়ায় গত বিধানসভা এবং লোকসভা নির্বাচনে ভাল ফল করতে পারেনি তৃণমূল। সে কথাই বলেন অভিষেক। একই সঙ্গে এ-ও বলেন যে, ‘‘ভোটে হেরেও বাঁকুড়াকে ভোলেনি তৃণমূল। বরং, জেলার মহিলারা যথাসময়ে লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা পেয়েছেন। অন্য দিকে, বাঁকুড়ার মানুষের ভোটে জিতেও সুভাষ সরকার এবং সৌমিত্রের মতো বিজেপি সাংসদেরা জেলার মানুষের অধিকার চেয়ে একটি কথাও বলেননি সংসদে। উল্টে লক্ষ্মীর ভান্ডারকেই আক্রমণ করছেন!’’ এই বক্তব্যের পরই আসে সুজাতার প্রসঙ্গ। লক্ষ্মীর ভান্ডারের কথা বলতে গিয়ে সৌমিত্রকে ‘ঘরের লক্ষ্মী’ প্রসঙ্গে তুলে কটাক্ষ করেন।
ওন্দায় অভিষেক যখন এ কথা বলছেন, তখন মঞ্চে বসেছিলেন সৌমিত্রের প্রাক্তন স্ত্রী সুজাতা। যিনি এক সময় তৃণমূল থেকে বিজেপিতে গিয়ে আবার তৃণমূলে ফিরে এসেছেন। সেই থেকেই সৌমিত্রের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ে। পরে বিবাহবিচ্ছেদ হয়। অভিষেকের সভা শেষ হওয়ার পর আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে প্রথমে সৌমিত্র পরে সুজাতার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। অভিষেকের মন্তব্যের পাল্টা জবাবে সৌমিত্র বলেন, ‘‘আমি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো ঘরের লক্ষ্মীকে ১৬৮ কোটি কয়লার টাকা উপহার দিতে পারিনি। রুজিরার কাছে অশোক মিশ্রের অ্যাকাউন্ট মারফত কয়লার টাকা পৌঁছেছে। অভিষেক কয়লার টাকা দিয়ে লক্ষ্মীকে শান্ত রেখেছে। আমি দুর্নীতির টাকা দিয়ে শান্ত করতে চাইনি। অমন ঘরের লক্ষ্মী চাই না। আপদ বিদেয় হয়েছে।’’
সৌমিত্রের এই মন্তব্য শুনে সুজাতা বলেন, ‘‘ওর নোংরা রুচি। উনি নিজে একজন স্বামী হিসাবে বড় শূন্য পাবেন। নিজের স্ত্রীকে অত্যাচার করে রাত সাড়ে তিনটেয় বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসতে বাধ্য করেছিলেন। এক পুলিশ আধিকারিককে বাড়ির মা-বোন তুলে গালাগালও করেছিলেন। ওঁর মুখে অন্তত অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম তুলে কথা বলা শোভা পায় না। অভিষেক নিজের স্ত্রী এবং সন্তানদের যথোপযুক্ত সম্মান করেন, তাঁদের মর্যাদা দিয়ে রেখেছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy