Advertisement
০৭ মে ২০২৪

জঙ্গিপুর পুরসভার দখল নিল তৃণমূলের

আপাতত বামেদের থেকে জঙ্গিপুর পুরসভার দখল নিল শাসক দল।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০১৮ ০৩:৪৯
Share: Save:

পারলে মুর্শিদাবাদে বিরোধী দলগুলির সব বিধায়ক-কাউন্সিলরকেই যেন ভাঙিয়ে নেয় তৃণমূল! আপাতত বামেদের থেকে জঙ্গিপুর পুরসভার দখল নিল শাসক দল।

জঙ্গিপুর পুরসভার ২১টি আসনের মধ্যে তৃণমূলের একটিও ছিল না। শনিবার রাতারাতি শাসক দলে চলে এলেন বিরোধী শিবিরের ১২ জন কাউন্সিলর। তপসিয়ায় তৃণমূল ভবনে তাঁদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে দলে নিলেন তৃণমূল যুব সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পর ঘোষণা করে দিলেন, ‘‘জঙ্গিপুর পুরসভা এখন তৃণমূলের দখলে। যিনি চেয়ারম্যান ছিলেন, তিনিই আগামী দিনে ওই দায়িত্ব সামলাবেন।’’ এরই পাশাপাশি জেলা পরিষদের তিন জন কংগ্রেস সদস্যও এ দিন তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন।

খাতায় কলমে শনিবার এই দল বদল হলেও এ ব্যাপারে অগ্রগতি হয়েছিল আগেই। একুশের সমাবেশ মঞ্চেই উপস্থিত হওয়ার কথা ছিল এই ১২ জনের। সে দিন সময়াভাবে তা করা যায়নি। প্রসঙ্গত, এই ১২ জনের মধ্যে বামফ্রন্টে ছিলেন সাত জন, কংগ্রেসে চার জন এবং এক জন ছিলেন বিজেপি-তে।

স্বাভাবিক ভাবেই এই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাম-কংগ্রেস নেতারা। নিজের দলের কাউন্সিলরদের ধরে রাখতে না পারার মধ্যে তাঁদের ব্যর্থতা যে রয়েছে তা অনস্বীকার্য। তবে মুর্শিদাবাদের অবিসংবাবিদ কংগ্রেস নেতা তথা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, ‘‘সত্যিই আমরা ব্যর্থ। কোনও রাজনৈতিক কর্মী নীতি আদর্শ বিসর্জণ করে যদি নিজেকে আলু পটলের মতো বেচে দেন তা হলে অসহায় ভাবে তা দেখা ছাড়া উপায় কী? যতদূর জানি এঁদের কাউকে ভয় দেখিয়ে, কারও পরিবারের সদস্যকে চাকরির টোপ দিয়ে, কাউকে আবার টাকার প্রলোভন দিয়ে ভাঙানো হয়েছে। আর স্থানীয় পুলিশ এঁদের দায়িত্ব নিয়ে কলকাতায় পৌঁছে দিয়েছে।’’ একই মত জানিয়েছেন বাম পরিষদীয় দল নেতা সুজন চক্রবর্তী। তাঁদের বক্তব্য, ক্ষমতা থাকলে এঁরা বর্তমান পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে নির্বাচনে জিতে আসুন। নইলে এটাই যদি বাংলায় রাজনৈতিক সংস্কৃতি হয়ে ওঠে তা হলে নির্বাচন নামক সাংবিধানিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে কী লাভ!

তবে অধীর চৌধুরীদের পাল্টা সমালোচনা করেন অভিষেক। তীর্যক মন্তব্য করে বলেন, ‘‘নাচতে না জানলে উঠোন বাঁকা!’’ তাঁর কথায়, ‘‘অধীর চৌধুরী কোন মুখে নীতি আদর্শের কথা বলেন। বাংলায় ৫৫ হাজার কংগ্রেস কর্মীকে সিপিএম খুন করেছিল। তাঁদের সঙ্গে হাত ধরেছেন অধীরবাবুরা। রাজনীতিতে ওঁদের বিশ্বাসযোগ্যতা বলে অবশিষ্ট কিছু নেই। তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শে এবং উন্নয়নের কাজে অনুপ্রাণিত হয়ে এঁরা তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন।’’

তৃণমূল সূত্রের মতে, জঙ্গিপুরের ভাঙন নমুনা মাত্র। আগামী দিনে ধারাবাহিক ভাবে এই প্রক্রিয়া অব্যহত থাকবে জেলায় জেলায়। তা ছাড়া মুর্শিদাবাদে একের পর এক পুরসভা দখলের ব্যাপারে আগেই সেখানে দামামা বাজিয়ে এসেছিলেন দলের তরফে জেলার পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারী। বলেছিলেন, এর পর বেলডাঙার দখল নেব, তার পর বহরমপুর। জঙ্গিপুরে বিরোধী শিবিরে ভাঙনের পিছনেও তাঁরই হাতযশ রয়েছে। তবে এ দিন, তৃণমূল ভবনের অনুষ্ঠানে শুভেন্দুর নাম পর্যন্ত কেউ মুখে আনেননি। অভিষেকও না! এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে শুভেন্দু অবশ্য বলেন, ‘‘আমাদের মধ্যে সব ঠিকই আছে। এ ব্যাপারে কিছু বলব না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

BJP Jangipur municipality বিজেপি
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE