Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
Trinamool Congress

তৃণমূলের অস্ত্র বঞ্চনা, অন্যদের আদানি-বিবিসি

বর্তমানে আলোচনার কেন্দ্রে থাকা আদানি কাণ্ড এবং বিবিসি-র মোদী সংক্রান্ত তথ্যচিত্র নিয়ে তৃণমূল কোনও মন্তব্য না-করলেও তার পরে বলতে ওঠা ডিএমকে-র টি আর বালু সরব হয়েছেন।

Picture of Droupadi Murmu

বুধবার রাষ্ট্রপতি হিসাবে সংসদের যৌথ অধিবেশনে প্রথম বক্তৃতাটি দেবেন দ্রৌপদী মুর্মু। ফাইল ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০২৩ ০৭:১২
Share: Save:

সংসদের বাজেট অধিবেশন শুরু হওয়ার আগে আজ সর্বদলীয় বৈঠকে রাজ্যের বঞ্চনার বিষয়টি নিয়ে সরব হল তৃণমূল কংগ্রেস। দলের সংসদীয় নেতারা কাশ্মীরে থাকায় এই বৈঠকে গরহাজির ছিল কংগ্রেস। তবে উপস্থিত অন্যান্য বিরোধী দলের (আপ, ডিএমকে, বাম, শিবসেনা) বেশ কিছু নেতা সম্প্রতি বিতর্ক তোলা বিবিসি-র তথ্যচিত্র এবং আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ওঠা শেয়ার দরে কারচুপি এবং আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ নিয়ে সরব হয়েছেন। সূত্রের খবর, এই দু’টি বিষয় নিয়ে বাজেট অধিবেশনে বিরোধীরা আসর গরম করবেন।

আগামী কাল রাষ্ট্রপতি হিসাবে সংসদের যৌথ অধিবেশনে প্রথম বক্তৃতাটি দেবেন দ্রৌপদী মুর্মু। আর তার পরেই সরকার প্রকাশ করবে আর্থিক সমীক্ষার রিপোর্ট। তার আগে আজকের বৈঠকে প্রথামাফিক প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্ব করার কথা থাকে। কিন্তু আজ নরেন্দ্র মোদীর পরিবর্তে ছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। কংগ্রেস না থাকায় প্রথমেই বলতে ওঠেন তৃণমূলের লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূলের পক্ষ থেকে সুদীপ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন দলের রাজ্যসভার মুখ্যসচেতক সুখেন্দুশেখর রায়। তিনি গোড়াতেই অভিযোগ করেন— এই ধরনের বৈঠকগুলি হয় ঠিকই, কিন্তু বাস্তব ক্ষেত্রে তার কোনও প্রতিফলন পড়ে না। শুধুমাত্র বিল পাশ করানোর জন্য সংসদীয় অধিবেশন ডাকা হয়। বৈঠকের পর সুদীপ বলেন, “আমি আজ জানিয়েছি যে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পর পর চিঠি লিখে গিয়েছেন কেন্দ্রকে, তার কোনও জবাবই দেওয়া হয়নি। একশো দিনের কাজের জন্য বকেয়া অর্থ চাওয়ার পরে মাসের পর মাস কেটে গেল, কিন্তু কোনও সুরাহা হল না। রাজ্যের পাওনা বেড়ে এক লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা হয়ে গিয়েছে। আমি দাবি করেছি পশ্চিমবঙ্গকে এই টাকা দেওয়ার জন্য বাজেটে সংস্থান রাখা হোক।” আজ বৈঠকে তৃণমূলের পক্ষ থেকে অভিযোগ তোলা হয় যে, পশ্চিমবঙ্গকে অর্থনৈতিক ভাবে অবরোধ করা হচ্ছে। পাশাপাশি বেকারত্ব এবং মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে আলোচনার দাবিও তোলেন সুদীপ।

বর্তমানে আলোচনার কেন্দ্রে থাকা আদানি কাণ্ড এবং বিবিসি-র মোদী সংক্রান্ত তথ্যচিত্র নিয়ে তৃণমূল কোনও মন্তব্য না-করলেও তার পরে বলতে ওঠা ডিএমকে-র টি আর বালু সরব হয়েছেন। বৈঠকে তিনি দাবি করেন, বিবিসি-র তথ্যচিত্রের বিষয়টি নিয়ে সংসদে প্রধানমন্ত্রী অবস্থানের ব্যাখ্যা দিন। বালুর বক্তব্য, আদানির আর্থিক প্রতারণার কারণে গরিব মানুষের সামনে বিপর্যয় ঘনিয়ে এসেছে। সরকার এই নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটে থাকতে পারে না। আপ-এর সঞ্জয় সিংহও সরকারকে চেপে ধরেন আদানি প্রসঙ্গ নিয়ে। সূত্রের খবর— তিনি বৈঠকে বলেছেন, মানুষের টাকা নিয়ে নয়ছয় করা হয়েছে। জীবন বিমা এবং স্টেট ব্যাঙ্ক ধাক্কা খেয়েছে সব চেয়ে বেশি। হিন্ডেনবার্গ-এর এই রিপোর্ট অত্যন্ত বিপজ্জনক। তাঁর প্রশ্ন, এখন সিবিআই, ইডি, আয়কর বিভাগ, সেবি কী করছে? অধিবেশনে আদানির বিরুদ্ধে ওঠা আর্থিক প্রতারণার অভিযোগটি অবশ্যই আলোচনা করার দাবি জানান সঞ্জয়। কাল রাষ্ট্রপতির বক্তৃতার পরে আদানি এবং বিবিসি-র কাণ্ড নিয়ে আপ গান্ধী মূর্তির সামনে ধর্না দিতে পারে বলে খবর। আদানি কাণ্ড নিয়ে সরব হয়েছেন বিজেডি-র মনোজ ঝা, সিপিএমের এলাম করিম, শিবসেনার প্রিয়ঙ্কা চতুর্বেদীরাও।

সবার বলার পরে রাজনাথ সিংহ খুবই দ্রুত দু’-একটি কথা বলে বৈঠকটি শেষ করে দেন। তিনি সংসদ অধিবেশনে আরও কাজের দিন বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন। পরে সুখেন্দুশেখর বলেন, “আমি ওঁকে আজ বলেছি, ১২ বছরের সাংসদ জীবনে এটাই আমার দেখা সংক্ষিপ্ততম বক্তৃতা!”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE