Advertisement
১৯ মে ২০২৪
ED attacked in Sandeshkhali

রাজ্যকে না বলে ইডি কেন সন্দেশখালিতে? কেন্দ্রকে দুষে বিচারপতির অধিকার নিয়েও প্রশ্ন তুললেন কুণাল

সন্দেশখালির ঘটনা নিয়ে এ বার পাল্টা তোপ দাগতে শুরু করল তৃণমূল। রাজ্য সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ সরাসরি আক্রমণ করেছেন রাজ্যকে না জানিয়ে কেন্দ্রীয় এজেন্সির ‘একলা চলো’ নীতির।

বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (বাঁ দিকে), কুণাল ঘোষ (ডান দিকে)। পিছনে ইডির ভাঙা গাড়ি।

বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (বাঁ দিকে), কুণাল ঘোষ (ডান দিকে)। পিছনে ইডির ভাঙা গাড়ি। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০২৪ ১৬:২০
Share: Save:

সন্দেশখালির ঘটনার পর তোলপাড় জাতীয় রাজনীতি। বিরোধীরা ঘিরে ধরেছে ক্ষমতাসীন সরকারকে। সমালোচনার স্বর শোনা যাচ্ছে আদালতের ভিতর থেকেও। এই প্রেক্ষিতে বিজেপি তথা কেন্দ্রীয় সরকার, সিপিএম, কংগ্রেস এবং হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে একসূত্রে গেঁথে পাল্টা আক্রমণ শানালেন তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। রাজ্য সরকারকে ‘লুপে’ না নিয়ে কেন্দ্রীয় এজেন্সির ‘একলা চলো’কেও বিঁধলেন বাছাই শব্দে।

শুক্রবার সকালে উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালিতে রেশন দুর্নীতির তদন্তে তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখের বাড়িতে হানা দেয় পাঁচ ইডি আধিকারিকের একটি দল। সঙ্গে ছিল কেন্দ্রীয় বাহিনী। স্থানীয় সূত্রে খবর, সরবেড়িয়া গ্রামে শাহজাহানের বাড়ির দিকে ই়ডি যাওয়ার চেষ্টা করতেই রুখে দাঁড়ান গ্রামবাসীরা। অভিযোগ, তাঁরা শাহজাহানের অনুগামী। তৃণমূল নেতার বাড়ির সামনে গিয়ে ডাকাডাকি করলেও ভিতর থেকে সাড়াশব্দ না মেলায় দরজা ভাঙার চেষ্টা করেন ইডি আধিকারিকেরা। অভিযোগ, সেই সময়েই তাঁদের ঘিরে ফেলে মারধর শুরু হয়। সরিয়ে দেওয়া হয় কেন্দ্রীয় বাহিনীকেও। এর পর ইডি আধিকারিকদের ধাওয়া করে এলাকা ছাড়তে বাধ্য করেন শাহজাহানের অনুগামীরা। ভাঙচুর চলে গাড়িতে। সেই সময়েই তিন ইডি আধিকারিক জখম হন বলে খবর। তাঁদের সল্টলেকের বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে চিকিৎসা চলছে। এই ঘটনা নিয়েই এখন তোলপা়ড় রাজনীতির আঙিনা। বিরোধীদের লাগাতার আক্রমণের মুখে এ বার পাল্টা প্রতিক্রিয়া দিতে শুরু করল শাসকদল তৃণমূল।

প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় কুণাল এই ঘটনার দায় সরাসরি চাপিয়েছেন বিজেপি পরিচালিত কেন্দ্রীয় সরকারের উপর। সন্দেশখালিতে কেন্দ্রীয় বাহিনী পরিবৃত হয়ে ইডির অভিযানকে শান্তিপূর্ণ বাংলায় নির্দিষ্ট উদ্দেশে গোলমাল পাকানোর জন্য ‘সিলেক্টিভ রেড’ বলে চিহ্নিত করে কুণাল বলেন, ‘‘মানুষ তো ইডি, সিবিআইকে আর ইডি, সিবিআই হিসাবে দেখছে না। দেখছে তো বিজেপি হিসাবে! এখন ইডি বা সিবিআই কোথাও গেলে রাজ্য সরকারকে লুপে নিচ্ছে না। রাজ্য পুলিশকে লুপে নিচ্ছে না। অন্তত মুখ্যসচিবকেও যদি বলে রাখে, তাহলে তো অন্তত কোন এলাকাটা স্পর্শকাতর, কোথায় কোন সময়ে কী হয়ে আছে... এগুলি না জেনে নিজেদের মতো করে অভিযান করছে কেন্দ্রীয় এজেন্সি। ও দিকে উস্কানি দিচ্ছে শুভেন্দুরা, আর এ দিকে হাল্লার রাজার সেনারা গিয়ে গন্ডগোলটা করছে।’’

বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর পাশাপাশি, কুণালের নিশানা থেকে বাদ যাননি হাই কোর্টের অন্যতম বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ও। তৃণমূল মুখপাত্র বলেন, ‘‘সিপিএম, বিজেপি, কংগ্রেস, অভিজিৎ গাঙ্গুলি— এরা সবাই এক সূত্রে বাঁধা। বিচারপতি গাঙ্গুলি, তাঁর কোন এক্তিয়ার আছে যে, চেয়ারে বসে এই ধরনের কথাবার্তাগুলি বলবেন!’’ শুভেন্দুকে আক্রমণ করে তিনি বলেন, ‘‘শুভেন্দু অধিকারীর নাম সিবিআইয়ের এফআইআরে আছে। নথিভুক্ত চোর, তোলাবাজ। তাঁর বাড়িতে তো অভিযান হয় না! অভিযান বেছে বেছে বাংলাকে কলঙ্কিত করার জন্য শুধু তৃণমূল নেতা, কর্মীদের বাড়িতে হচ্ছে। যাতে নেগেটিভ খবর করা যায়। শুভেন্দু অধিকারীর চোখ দেখবেন, ভাষা দেখবেন, বডি ল্যাঙ্গুয়েজ দেখবেন। কী ভাবে রোজ উত্তেজনা তৈরি করছে। খারাপ কথা বলছে, কুৎসা করছে, গালাগাল দিচ্ছে। আর এ সব করে বলছে, সিবিআই পাঠাচ্ছি, ইডি পাঠাচ্ছি।’’

সব মিলিয়ে সন্দেশখালির ঘটনা নিয়ে শাসক-বিরোধী চাপানউতর তুঙ্গে উঠেছে। তৃণমূলকে বিঁধতে তৈরি বিরোধীরা। পাল্টা জবাব নিয়ে আসরে শাসকদলও। সন্দেশখালির জল কতদূর গড়ায়, আগ্রহ এখন তা নিয়েই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC ED
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE