Advertisement
E-Paper

সৌরভেরা ক্ষমা চেয়ে নিলেন শিক্ষকের কাছে

কড়া দাওয়াইয়ে কাজ যে কিছুটা হয়েছেই, তার প্রমাণ মিলল শুক্রবার। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্যের দায়িত্ব নিয়েই নিগৃহীত শিক্ষকদের কাছে গিয়ে টিএমসিপি নেতাদের ক্ষমা চেয়ে নিতে বলেছিলেন সুগত মারজিত।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০১৫ ০৩:৩৫

কড়া দাওয়াইয়ে কাজ যে কিছুটা হয়েছেই, তার প্রমাণ মিলল শুক্রবার।

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্যের দায়িত্ব নিয়েই নিগৃহীত শিক্ষকদের কাছে গিয়ে টিএমসিপি নেতাদের ক্ষমা চেয়ে নিতে বলেছিলেন সুগত মারজিত। পরামর্শ বা নির্দেশ যে-নামেই ডাকা হোক, সেই দাওয়াইয়ের জেরে শুক্রবার অস্থায়ী উপাচার্যের সামনেই নিগৃহীত শিক্ষক দিব্যেন্দু পাল-সহ ১১ জন শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মীর কাছে ক্ষমা চেয়ে নিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সৌরভ অধিকারী ও তাঁর সঙ্গীরা। সৌরভদের ফোন করে ডেকে পুরো বিষয়টির তত্ত্বাবধান করলেন উপাচার্যই।

বুধবার কাজে যোগ দিয়েই কড়া হাতে হাল ধরার কথা ঘোষণা করেছিলেন সুগতবাবু। তার অন্যতম প্রথম দৃষ্টান্ত হিসেবেই অধ্যাপক-নিগ্রহে অভিযুক্ত ছাত্রনেতাদের ক্ষমা চাওয়ার নিদান দেন তিনি। এ দিনের ক্ষমাপ্রার্থনা পর্বে সেই দাওয়াইয়ের সুফল দেখতে পেয়েছে শিক্ষা শিবির।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, কুটা ও যৌথ মঞ্চের নেতারা এ দিন সুগতবাবুর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। সেখানে ছিলেন নিগৃহীত অধ্যাপক দিব্যেন্দুবাবুও। অস্থায়ী উপাচার্যের সঙ্গে কথাবার্তার মধ্যেই সুগতবাবু কাউকে ফোন করে তাঁর ঘরে আসতে বলেন। তখনও উপস্থিত শিক্ষকেরা জানতেন না, কাকে ডেকে পাঠানো হল। তার কিছু ক্ষণের মধ্যেই ঘরে ঢোকেন সৌরভ এবং অন্য পাঁচ টিএমসিপি নেতা। কেন সৌরভদের এ ভাবে ডেকে পাঠানো হল, উপস্থিত শিক্ষকেরা তা বুঝতে পারছিলেন না। সৌরভ দিব্যেন্দুবাবুর উদ্দেশে বলেন, ‘‘আমাদের কোনও ব্যবহারে কোনও শিক্ষক-শিক্ষিকা মানসিক ভাবে আঘাত পেয়ে থাকলে আমরা নিঃশর্তে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।’’

টিএমসিপি নেতারা অস্থায়ী উপাচার্যের পরামর্শ মেনে ক্ষমা চাইবেন কি না, তা নিয়ে শিক্ষকেরা সন্দিহান ছিলেন। তাই সৌরভেরা ক্ষমা চাওয়ায় তাঁদের অনেকেই প্রথমে হকচকিয়ে যান। পরে দিব্যেন্দুবাবু বলেন, ‘‘সৌরভ আমাদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছে। আমরা খুশি।’’

গত ১ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের সেনেট হলের সামনে আন্দোলনরত কুটা-সদস্যদের উপরে চড়াও হয় টিএমসিপি-র এক দল সদস্য। তাদের নেতৃত্বে ছিলেন সৌরভ। ওই ছাত্রদের মধ্য থেকে কেউ কেউ কুটা-র সাধারণ সম্পাদক দিব্যেন্দুবাবুকে শারীরিক ভাবে নিগ্রহ করে বলেও অভিযোগ ওঠে। এ দিন ক্ষমা চাওয়ার পরে টিএমসিপি-র এক নেতা বলেন, ‘‘উপাচার্যকে আমরা কথা দিয়েছিলাম। কথা রেখেছি।’’

অভিযুক্ত ছাত্রনেতাদের এ দিনের আচরণে উপাচার্য খুশি। সুগতবাবু বলেন, ‘‘আমি ছাত্রদের বলেছিলাম শিক্ষকেরা পিতৃমাতৃসম। কোনও বিষয়ে বিরোধ হলেও কোনও মতেই তাঁদের অসম্মান করা যায় না।’’ ১ জুলাইয়ের ঘটনা অবাঞ্ছিত ছিল বলে অস্থায়ী উপাচার্য বুধবার মন্তব্য করেছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ও সামগ্রিক পরিস্থিতি কড়া হাতে নিয়ন্ত্রণ করার আশ্বাসও দিয়েছিলেন তিনি। সুগতবাবু এ দিন বলেন, ‘‘ছাত্রেরা যে আমার কথা শুনেছেন, তাতেই আমি খুশি। বুঝতে পারছি, যৌথ মঞ্চ হোক বা ছাত্র, সকলেই আমার উপরে ভরসা রাখতে শুরু করছেন। উপাচার্য হিসেবে এটাই আমরা বড় প্রাপ্তি।’’

ক্ষমা চাওয়ার পরেও সৌরভ জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁরা নীতিগত ভাবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে। তাই তাঁদের লড়াই চলছে, চলবে। ‘‘কিন্তু শিক্ষকদের মানসিক ভাবে আঘাত করার কোনও ইচ্ছে আমাদের ছিল না। কেউ মানসিক ভাবে আঘাত পেয়ে থাকলে আমরা দুঃখিত। এটাই ওখানে (উপাচার্য ও শিক্ষকদের সামনে) বলেছি,’’ বললেন ছাত্রনেতা।

interim vc sugata marjit apology calcutta university teachers cu teachers cu tmcp saurav adhikari
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy