বাণিজ্যিক কাজকর্ম চালাতে হলে সব ধরনের অনুমতিপত্র বাড়ির বাইরে ঝোলাতে হবে। নিউ টাউনে আবাসিক বাড়িতে বাণিজ্যিক কাজকর্ম করলে এ বার থেকে এই নিয়ম মানতে হবে। এমনকি, প্রয়োজনীয় অনুমতিপত্র দেখে তবেই গ্রাহকদের সেখানে যেতে বলছে ‘নিউ টাউন-কলকাতা ডেভেলপমেন্ট অথরিটি’ (এনকেডিএ)।
এনকেডিএ-র বোর্ডের বৈঠকে সম্প্রতি এমনই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যা দ্রুত কার্যকর
করা হবে বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। মধ্য কলকাতার মেছুয়াপট্টির একটি হোটেলে অগ্নিদগ্ধ হয়ে ১৪ জনের মৃত্যুর ঘটনার পরে নিউ টাউনের বিভিন্ন এলাকায় বাণিজ্যিক সংস্থাগুলির অনুমতিপত্র খতিয়ে দেখা শুরু হয়। তাতে দেখা যায়, আবাসিক এলাকাগুলিতে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠেছে অনুষ্ঠান বাড়ি, কফি শপ-সহ নানা ব্যবসা। অধিকাংশেরই কোনও অনুমতি কিংবা ট্রেড লাইসেন্স ছিল না বলে অভিযোগ। বর্তমানে সরকারি নিয়ম উপেক্ষা করে ব্যবসা চালানো প্রতিটি বাণিজ্যিক স্থানই এনকেডিএ বন্ধ করে দিয়েছে। তারা জানিয়েছে, বন্ধ সংস্থাগুলির মালিকপক্ষকে ব্যবসা শুরুর আগে সব ধরনের অনুমতি নিতে হবে এনকেডিএ-র কাছ থেকে। ভবিষ্যতে তারা যাতে সরকারি নির্দেশ উপেক্ষা করার দুঃসাহস না দেখায়, তার জন্য অনুমতি দেওয়ার সঙ্গে তাদের জরিমানা করা সম্ভব কিনা, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী আবাসিক বাড়ির ৪০ শতাংশ পর্যন্ত বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে। কিন্তু অভিযোগ, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সেই নিয়ম লঙ্ঘন করে বাণিজ্যিক কাজে গোটা বাড়ি ব্যবহার করা হচ্ছিল। এনকেডিএ কিছু কিছু অভিযোগ পেয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল। কিন্তু তা বাস্তবায়িত হওয়ার আগেই মেছুয়ায় দুর্ঘটনা ঘটে। তার পরে আবাসিক এবং বাণিজ্যিক এলাকাগুলি পরিদর্শন করে এনকেডিএ। এত বছরে এই প্রথম এই ধরনের পরিদর্শন হয়। তাতে ধরা পড়ে, আবাসিক এলাকায় নিয়ম লঙ্ঘন করে যথেচ্ছ ভাবে ব্যবসা করা হচ্ছে। নিউ টাউনের অনেক বিশিষ্ট বাসিন্দার বাড়িতেই এই ধরনের ব্যবসা চলছিল বলে অভিযোগ।
এনকেডিএ-র এক শীর্ষ আধিকারিকের কথায়, ‘‘কোনও দুর্ঘটনা ঘটার পরে নড়েচড়ে বসার চেয়ে আগে থেকে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। তাই জরিমানা নিয়ে অবৈধ ব্যবসাকে বৈধতা দেওয়া হবে না। ব্যবসা চালু রাখতে নতুন করে সবাইকে অনুমতি নিতে হবে। সেই অনুমতি বাড়ির বাইরে কিউআর কোড-সহ ঝুলিয়ে রাখতে হবে। যাতে গ্রাহকেরাও ওই সংস্থা সম্পর্কে সতর্ক থাকতে পারেন।’’
এনকেডিএ জানাচ্ছে, দু’টি অনুমতিপত্রের একটি হবে তাদের। অন্যটি দমকলের। যাঁরা বাণিজ্যিক কাজ করবেন, তাঁদের এনকেডিএ-র অনুমতি নিতে হবে।
অন্য দিকে, সংস্থার ট্রেড লাইসেন্স থাকতে হবে। দু’টি নথিই বাড়ির বাইরের দেওয়ালে ঝোলাতে হবে। কোন কোন সংস্থা এনকেডিএ-র ছাড়পত্র পেয়েছে, তার তালিকা তাদের ওয়েবসাইটে দিয়ে দেওয়া হবে। আবাসিক এলাকায় কোনও বাড়িতে এমন ব্যবসা করতে যাওয়ার আগে সেই তালিকা দেখে নিলে গ্রাহকেরা ঠকবেন না বলেই জানাচ্ছে এনকেডিএ।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)