সাগরদিঘির ‘ধনী’ বিজেপি প্রার্থী। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
জানুয়ারি মাসেই মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুরের তৃণমূল বিধায়কের বাড়ি, অফিস ও বিড়ি কারখানায় হানা দিয়ে আয়কর দফতর নগদ ১১ কোটি টাকা উদ্ধার করে। তখনই সামনে আসে এক তথ্য। গত বিধানসভা নির্বাচনে ঘোষিত সম্পত্তির হিসাবে জাকির ছিলেন রাজ্যের সবচেয়ে ধনী প্রার্থী। হলফনামায় লেখা সম্পত্তির পরিমাণ ছিল ৬৭ কোটিরও বেশি। সেই মুর্শিদাবাদেই সাগরদিঘি আসনে উপনির্বাচন সামনেই। আর সেই ভোটে মনোনয়ন জমা দেওয়া প্রার্থীদের মধ্যে ধনীতম বিজেপির দিলীপ সাহা। নির্বাচন কমিশনে তিনি যে হলফনামা জমা দিয়েছেন, তাতে মোট সম্পত্তির পরিমাণ ৪৩ কোটি টাকারও বেশি।
শুধু উপনির্বাচনের প্রার্থী হিসাবে সম্পত্তির পরিমাণেই নয়, অন্য একটি নজিরও তৈরি করলেন দিলীপ। গত বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির সবচেয়ে ধনী প্রার্থী যাঁরা ছিলেন তাঁদের সবাইকেই তিনি টপকে গিয়েছেন। ২০২১ সালে বিজেপির সবচেয়ে ধনী প্রার্থী ছিলেন বীরভূমের নলহাটি আসন থেকে লড়াই করা তাপস যাদব। তাঁর মোট সম্পত্তি ছিল ৩৪ কোটি ৬০ লাখ ৯৩ হাজার ৬৭৪ টাকা। তাঁকেও অনেকটা পিছনে ফেলে দিলেন দিলীপ। সাগরদিঘির বিজেপি প্রার্থীর ঘোষিত সম্পত্তির পরিমাণ ৪৩ কোটি ৪২ লাখ ৭০ হাজার ২৯৩ টাকা।
দিলীপের নিজস্ব অস্থাবর সম্পত্তি ৪,২৯,০৮,৮৪২.৪৮ টাকার। আর স্থাবর সম্পত্তি ২৮,৭৫,০০,০০০.০০ টাকার। দিলীপের স্ত্রী সুস্মিতা সাহার অস্থাবর সম্পত্তি ২,০২,১৫,৫১২.৪০ টাকা এবং স্থাবর সম্পত্তি ৬,৫০,০০,০০০.০০ টাকার। পুত্র সুমন সাহার অস্থাবর সম্পত্তি ৯৫,০৬,৬৫৫.৪৩ টাকা এবং কন্যা স্নেহা সাহার অস্থাবর সম্পত্তি ৯১,৩৯,২৮৪.৬৩ টাকা। সব মিলিয়ে ৪৩ কোটি ৪২ লাখের উপরে।
বিজেপি অবশ্য প্রার্থীর সম্পত্তির পরিমাণ নিয়ে অতটা চিন্তিত নয়। দলের এক রাজ্য নেতা বলেন, ‘‘গোটাটাই তো ঘোষিত সম্পত্তি। দিলীপ সাহার পারিবারিক ব্যবসা রয়েছে। সব সম্পত্তি দেখিয়েছেন বলেই পরিমাণ জানা গিয়েছে। তাতেও রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রীর বান্ধবীর বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া নগদ অর্থের থেকে অনেক কম পরিবারের টাকার মোট সম্পত্তি।’’
তবে অন্য একটি চিন্তা রয়েছে বিজেপির কাছে। গত বিধানসভা নির্বাচনে দলের ধনী প্রার্থীদের প্রথম ১২ জনই পরাজিত হয়েছিলেন। সবার উপরে তাপস থাকলেও তাঁর পরেই ছিলেন অর্চনা মজুমদার। সম্পত্তি জানিয়েছিলেন ২৮ কোটির বেশি। তৃতীয় ভারতী ঘোষের ছিল ১৯ কোটির উপরে। প্রথম ১২ জনে ছিলেন রথীন চক্রবর্তী, অমিত কুন্ডু, দীপঙ্কর জানা, অম্বুজা মোহান্তি, সুব্রত সাহা, হেমন্ত ঘোষ, কবীরশঙ্কর বসু, সন্দীপন বিশ্বাস, সব্যসাচী দত্ত। ঘোষিত সম্পত্তির হিসাবে সেই সময়ে সকলেই কোটি বা অর্বুদপতি ছিলেন। সাগরদিঘিতে বিজেপির কাছে চ্যালেঞ্জ এই জায়গাতেই। ধনী প্রার্থীদের প্রথম ১২ জনের সকলেই পরাজিত হয়েছিলেন। সম্পত্তির পরিমাণে নজির ভাঙা দিলীপ সেই নজির ভাঙতে পারবেন কি না সেটাই এখন দেখার।
বিজেপিতে অন্য নজিরও রয়েছে। ২০২১ সালে সবচেয়ে গরিব প্রার্থী ছিল বিজেপিরই। বাঁকুড়ার ইন্দাস থেকে প্রার্থী হয়েছিলেন নির্মল ধারা। হাতে নগদ ১,৭০০ টাকা ছাড়া কিছুই ছিল না ভোটে দাঁড়ানোর সময়ে। জিতেওছিলেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy