মোর্চার ওপর পাল্টা চাপ বাড়াচ্ছে রাজ্য সরকার। দু থেকে আড়াই মাসের মধ্যে জিটিএ-র চিফের পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে পৃথক রাজ্যের দাবিতে আন্দোলন শুরুর হুমকি দিয়েছেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার চিফ বিমল গুরুঙ্গ। চিফের হুমকির পরে জিটিএ-র অন্য সভাসদরাও একে একে ইস্তফার দেওয়ার ইচ্ছের কথা ঘোষণা করে চলেছেন। এবার তাদের ওপর পাল্টা চাপ তৈরি করতে জিটিএ-এর বিভিন্ন প্রকল্পের খরচের হিসেব দেওয়ার দাবি তুললেন রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব। জিটিএ হিসেব না দিলে রাজ্য সরকারই সব খরচের হিসেব প্রকাশ করে দেবে বলে রবিবার হুমকি দিয়েছেন গৌতমবাবু। ঘটনাচক্রে, এ দিনই দার্জিলিঙে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুরিন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া একটি অনুষ্ঠানে গুরুঙ্গদের আন্দোলনের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার অনুরোধ করেছেন।
এ দিন কেন্দ্রীয় সাংসদ বিষয়ক এবং কৃষি-কৃষক কল্যাণ প্রতিমন্ত্রীকে সংবর্ধনা দেওয়া হয় মোর্চার তরফে। সে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখার সময়েও জিটিএ ছেড়ে দেওয়ার হুমকির পুনরাবৃত্তি করেন গুরুঙ্গ। অহলুওয়ালিয়া অবশ্য বলেন, ‘‘দার্জিলিং দীর্ঘদিন বন্ধ প্রত্যাখ্যান করেছে বলে পর্যটকের সংখ্যা বেড়েছে। আমিই এক সময়ে গুরুঙ্গকে বন্ধ থেকে বিরত থাকার ঘোষণা করতে অনুরোধ করেছিলাম, তা উনি শুনেছেন। আপনাদের যা স্বপ্ন রয়েছে তা দিল্লি বা কলকাতা থেকে নিশ্চয়ই পূরণ হবে।’’ মোর্চা নেতাদের তাঁর উপর ভরসা রাখারও আবেদন জানিয়েছেন অহলুওয়ালিয়া। তাঁদের দাবি খতিয়ে দেখতে কেন্দ্র কমিটি গঠন করুক বলে অহলুওয়ালিয়াকে প্রস্তাব দিয়েছেন গুরুঙ্গ।
রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ক্রমাগত হস্তক্ষেপের অভিযোগ তুলে গত বৃহস্পতিবার জিটিএ ছেড়ে বেরিয়ে আসার হুমকি দিয়েছিলেন গুরুঙ্গ। রবিবার দার্জিলিং জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা রাজ্যের পর্যটন মন্ত্রী গৌতমবাবু পুরো বিষয়টিকে ‘নাটক’ বলে দাবি করে বলেন, ‘‘জিটিএ-এর মেয়াদ শেষ হতে আর কয়েক মাস বাকি রয়েছে, তারপরেই ভোট হবে। ভোটে ভয় পেয়েই এখন ইস্তফার নাটক চলছে।’’ পাল্টা চাপ দিতে গৌতমবাবুর হুমকি, ‘‘ইস্তফা দেওয়ার আগে জিটিএ রাজ্য এবং কেন্দ্রের যে আর্থিক বরাদ্দ পেয়েছে, তার খরচের হিসেব দিক। জিটিএ না দিলে আমরাই সে সব খরচ দিয়ে দেব।’’ প্রশসানিক ছাড়া রাজানৈতিক চাপও বাড়াতে শুরু করেছে তৃণমূল। গত সপ্তাহেই গুরুঙ্গের নির্বাচন ক্ষেত্রে জনসভা করেছিল তৃণমূল। এ দিন সমতল লাগোয়া গাড়িধুরায় বিশ্বকর্মা-কামি সম্প্রদায়ের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন গৌতমবাবু। সেই সভায় রাজ্য সরকার ওই সম্প্রদায়ের বাসিন্দাদের এবং এলাকার পরিকাঠামো উন্নয়নে যাবতীয় সাহায্য করবে বলে আশ্বাস দেন মন্ত্রী।